শেফা শরীফ ১ম খণ্ড (পরিচ্ছেদ – ৩/ মহানবী (দ:)-এর প্রতি আল্লাহতা’লার দয়া ও নম্র মনোভাব)

পোষ্টটি অন্যকে পড়ার সুযোগ করে দিতে শেয়ার করুন প্লিজ।

পরিচ্ছেদ – ৩/ মহানবী (দ:)-এর প্রতি আল্লাহতা’লার দয়া ও নম্র মনোভাব

এতে অন্তর্ভুক্ত রয়েছে খোদায়ী কালাম – “আল্লাহ আপনাকে ক্ষমা করুন; আপনি তাদেরকে কেন অনুমতি দিলেন, যতোক্ষণ পর্যন্ত আপনার কাছে স্পষ্ট হয়নি সত্যবাদীরা এবং প্রকাশ পায়নি মিথ্যেবাদীরাও” [সূরা তওবা, ৪৩ আয়াত]। আওন ইবনে আবদিল্লাহ এ আয়াতের ব্যাখ্যায় বলেন, “আল্লাহতা’লা মহানবী (দ:)-কে তাঁর সিদ্ধান্ত সম্পর্কে কিছু বলার আগেই তাঁকে ক্ষমা করার ঘোষণা দিয়েছেন।”

আস্ সামারকান্দী বর্ণনা করেন এ মর্মে যে জনৈক আলেম এর অর্থ করেছেন, “হে হৃদ-স্পন্দনের ধ্বনি, আল্লাহ অাপনাকে রক্ষা করেছেন। তাহলে আপনি কেন তাদেরকে অনুমতি দিলেন?” যদি প্রথমেই এ কথা বলা হতো – “আপনি কেন তাদেরকে অনুমতি দিলেন?” – তাহলে রাসূলে পাক (দ:)-এর চিত্ত ভয়ে দুরু দুরু করতো। কিন্তু আল্লাহ পাক প্রথমেই ক্ষমা করার কথা বলে তাঁর অন্তরকে শান্ত রেখেছেন এবং তারপর জিজ্ঞেস করেছেন – “আপনার কাছে কে সত্যবাদী এবং কে মিথ্যেবাদী তা স্পষ্ট হবার আগে কেন আপনি তাদেরকে অনুমতি দিলেন?”

এতে আল্লাহর সাথে মহানবী (দ:)-এর উচ্চ মকাম পরিস্ফুট হয়, যা ন্যূনতম বুদ্ধিসম্পন্ন মানুষের কাছেও গোপন থাকতে পারে না। রাসূলুল্লাহ (দ;)-কে পাক পরওয়াদেগারে আলম কী পরিমাণ সম্মান করেন এবং তাঁর প্রতি কী রকম দয়াবান তা এতে পরিস্ফুট হয়, যা সম্পূর্ণ জ্ঞাত হলে অন্তর বিগলিত হতো (সবার)।

নিফতাওয়াইহ্ বলেন, “কিছু লোক মনে করে হুযূর পূর নূর (দ:)-কে এ আয়াতে তিরস্কার করা হয়েছে। বিষয়টি তা থেকে যোজন যোজন দূরে! বস্তুতঃ তাঁকে এর দরুন পছন্দ করা হয়েছে। যখন তিনি তাদেরকে অনুমতি দিলেন, তখন আল্লাহ জ্ঞাত করলেন যে তিনি (রাসূল) যদি তাদেরকে অনুমতি না দিতেন, তাহলে তারা এমনিতেই তাদের মোনাফেকীর মধ্যে বসে থাকতো; অতএব, তাঁর অনুমতি দেয়ার প্রতি কোনো আপত্তি উত্থাপন-ই করা যায় না।”

যে মুসলমান-ব্যক্তি নিজের নফসের সাথে সংগ্রামে লিপ্ত রয়েছেন এবং নিজ আচার-আচরণ ও স্বভাব-চরিত্রে শরীয়তকে আঁকড়ে ধরেছেন, তিনি তাঁর কথাবার্তায়, কাজ-কর্মে, উদ্দেশ্য সাধনে ও আলাপচারিতায় কুরআন মজীদের আদব-কায়দা (শিষ্টাচার)-কে ধারণ করতে বাধ্য। এটাই দ্বীন ও দুনিয়ায় প্রকৃত জ্ঞান ও সঠিক আচরণের মূলভিত্তি। সকল মনিবের মহাপ্রভু, যিনি সবাইকে আশীর্বাদ দেন, যাঁর কিছুরই প্রয়োজন নেই, তাঁর কাছে চাওয়া-পাওয়ার বেলায় এই অনন্য সাধারণ নম্রতা ও দয়াকে অবশ্যই বিবেচনায় নিতে হবে। আয়াতে ধারণকৃত ফায়দাগুলোকে অন্তরে গ্রহণ করে নিতে হবে এ বাস্তবতার আলোকে যে, আল্লাহতা’লা জিজ্ঞেস করার আগে সম্মান প্রদর্শন করেছেন এবং ক্ষমা করতে আনন্দ অনুভব করেছেন। অতঃপর তিনি জিজ্ঞেস করেছেন, যদিও এর মধ্যে ত্রুটিজনিত জবাবদিহিতার কিছু আছে কি না সন্দেহ।

পোষ্টটি ভালো লেগে থাকলে আপনার মূল্যবান মতামত জানান প্লিজ!

Leave a Comment