- ডক্টর আব্দুল বাতেন মিয়াজী
আলহামদুলিল্লাহ্, ছুম্মা আলহামদুলিল্লাহ্। মহান রাব্বুল আলামীনের দরবারে লাখো-কোটি শুকরিয়া। অজস্র-অগণিত দরূদ ও সালাম মহান রবের সেই মনোনীত রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াআলিহী ওয়াসাল্লামের প্রতি, যিনি শ্রেষ্ঠতম, প্রিয়তম। যিনি রাহমাতুল্লিল ’আলামীন, ইমামুল মুরসালীন, গোনাহগার উম্মতের কাণ্ডারি, শাফায়াতে কুবরার অধিকারী, আরশের মহান অধিপতির দরবারে দুনিয়া ও আখেরাতে যাঁর রয়েছে বিশেষ ও অতুলনীয় মর্যাদা। অজস্র-অগণিত দরূদ ও সালাম আহলে বাইত আতহার আলাইহিমুস সালাম এবং আলে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াআলিহী ওয়াসাল্লামের প্রতি। অজস্র-অগণিত দরূদ ও সালাম আল্লাহ্র প্রিয়তম সৃষ্টির সান্নিধ্য পেয়ে ধন্য, সুপ্ত থেকে আলোকিত সাহাবা আজমাইন রাদ্বিয়াল্লাহু আনহুমগণের প্রতি।

মহাগ্রন্থ আল-কুরআন অন্ধকার থেকে আলোর পথে ধাবিত করার পাথেয়। কুরআনুল কারীম আল্লাহ পাকের পক্ষ থেকে মানবজাতির প্রতি এক বিশেষ ক্রোড়পত্র। এর শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত প্রতিটি কথা, প্রতিটি ভাব, প্রতিটি বাক্য একজনকেই সম্বোধন করে অবতীর্ণ। আর তিনি হলেন আল্লাহ পাকের মনোনীত বিশেষ প্রেমাষ্পদ! শয়তানের কুপ্রবৃত্তির মুকাবিলায় আল্লাহ পাকের প্রেমময় রজ্জু এ কুরআন। যা সোজা চলে গেছে পথ মহাপথ পাড়ি দিয়ে লা-জামান, লা-মাকান পেরিয়ে মহান আরশের দিকে। শত পথ, সহস্র মত এবং অজুত বিরোধের মাঝে একমাত্র সরল পথের দিশা এই আল-কুরআন।
ইরফান-উল-কুরআন উর্দু ও ইংরেজি লিংক
https://www.irfan-ul-quran.com/english/index.html
ইরফান-উল-কুরআন উর্দু ও ইংরেজি এপ
https://play.google.com/store/apps/details?id=com.tgq.irfanulquran
খুব শীঘ্রই বাংলা টেক্সট সংযোজন করা হবে ইন শা আল্লাহ্।
ইরফান-উল-কুরআন পবিত্র কুরআনের শাব্দিক অনুবাদ নয়, বরং এটি পবিত্র কুরআনের সবচে আধুনিক, বিজ্ঞানভিত্তিক, আধ্যাত্মিক, আত্মিক ও প্রেমময় বিশ্লেষণ। ইরফান-উল-কুরআন তাই শাইখ-উল-ইসলাম ডক্টর মুহাম্মাদ তাহির-উল-ক্বাদরী মাদ্দা জিল্লুহুল আলীর অনবদ্য সৃষ্টি। তিনি জাতিসংঘ কর্তৃক মনোনীত শান্তির দূত। দেশে দেশে, জাতিতে জাতিতে শান্তি ও ভালোবাসার ফেরিওয়ালা তিনি। সহস্রাধিক মৌলিক রচনার মাঝে এই ইরফানুল কুরআন ভিন্নতা নিয়ে হাজির হয়েছে। মানুষের জন্যে, মানবকল্যাণে।

শাইখ-উল-ইসলাম প্রায়ই বলে থাকেন, “ঈমান হলো মুহাব্বাত এবং আদবে মুস্তফার নাম”। এ কথাটি আমাকে বিশেষভাবে মুগ্ধ করেছে এবং আলোড়িত করেছে। আসলেও তো বিষয়টি তাই। শয়তানের ইলম ছিল, কিন্তু মানবজাতির আদিপিতা আদম আলাইহিস সালামের প্রতি ভালোবাসা ও সম্মান ছিল না। ফলে সে হয়ে গেল চির অভিশপ্ত। অপরদিকে ফেরেশতাগণ আদব ও ভালোবাসা প্রদর্শন করে সম্মানীয় থেকে আরো উচ্চ মর্যাদার অধিকারী হলেন। ভালোবাসা ঈমানকে মজবুত করে, অপরদিকে আদববিহীন জ্ঞান মনে সন্দেহের সৃষ্টি করে। যার প্রমাণ শয়তান এবং তার অনুসারীরা। জ্ঞান আবু জাহেলেরও ছিল। কিন্তু হুব্বে রাসূলের [ﷺ ] অভাবে সে জ্ঞান তাকে পথের দিশা দিতে পারেনি। নবুয়তের ঐশী জ্ঞানের তোরণ মুমিনগণের মওলা আলী মুরতজা কাররামুল্লাহু ওয়াজহাহু। সে জ্ঞান হুব্বে রাসূলে [ﷺ ] পূর্ণতা পেয়ে রাসূল [ﷺ ] চেনার মাধ্যম হিসেবে প্রতিভাত হলো।
কুরআনুল কারীম হলো ঐশী জ্ঞানের উৎস এবং আধার। এ কুরআন শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত জ্ঞান, উপদেশ, উপমা, মানবজাতির জন্যে স্বস্তি ও শাস্তির নিদর্শনে ভরপুর। শাইখ-উল-ইসলাম বলে থাকেন যে, জ্ঞানেরও জ্যোতি রয়েছে। জ্ঞানেও নূর সৃষ্টি হয়। তবে সব জ্ঞানে জ্যোতি জন্ম নেয় না। কেবল যে জ্ঞান হুব্বে মুস্তফা এবং আদবে মুস্তফার আকরে লালিত, কেবলমাত্র সে জ্ঞানেই জ্যোতি বা নূর সৃষ্টি হয়। সৃষ্টির শ্রেষ্ঠতম সত্তার প্রতি প্রেম, ভালোবাসা ও সম্মান বাধ্যতামূলক। এসব ব্যতিরেকে যে জ্ঞান তাতে জ্যোতি থাকে না। ফলে সে জ্ঞানে জন্ম নেয় অহমবোধ। যার পরিণাম সত্য থেকে বিচ্যুতি।
শাইখ-উল-ইসলামের এই অনুবাদের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত সেই হুব্বে মুস্তফা এবং আদবে মুজতবার ছাপ লক্ষণীয়।

আল্লাহ পাক আদম আলাইহিস সালামকে সৃষ্টি করেছেন আপন মাধুরী দিয়ে। তাঁকে অবহেলা করার কারণে শয়তানকে বিতাড়িত করেছেন জান্নাত থেকে। ইব্রাহিম আলাইহিস সালাম আল্লাহ্র সন্তুষ্টির নিমিত্তে সব ছাড়তে রাজি ছিলেন। ফলে আল্লাহ পাক তাঁকে গ্রহণ করেছেন খলিলরূপে। আগুনকে তাই নির্দেশ দিয়েছিলেন শান্তিময় হয়ে যাবার জন্যে। ইউসুফ আলাইহিস সালামকে অন্যান্য সবার মধ্য থেকে বিশেষভাবে নির্বাচন করেছিলেন। তাই তাঁকে তাঁর ভাইয়েরা অন্ধ কূপে নিক্ষেপ করার সাথে সাথে আল্লাহ পাক ওহীর মাধ্যমে তাঁকে শান্তনা দিয়েছিলেন। মূসা আলাইহিস সালামকে আল্লাহ পাক বিশেষভাবে মনোনীত করেছিলেন, কোনও মাধ্যম ছাড়াই যাঁর সাথে কথা বলতেন। ফেরাউন কর্তৃক অপমান এবং হুমকি তাই তিনি সহ্য করলেন না। ফেরাউনকে তার দলবলসহ ডুবিয়ে মারলেন।
আল্লাহ পাক অন্য সবার চেয়ে বিশেষ ভাবে যাঁকে নির্বাচন করলেন তাঁকে ঘোষণা করলেন রাহমাতুল্লিল ’আলামীন হিসেবে। তাঁর প্রতি কাফের-মুশরিক এবং ইহুদীদের বিন্দুমাত্র অসম্মান সহ্য করেন নি। ‘রাঈনা’ একই সাথে ‘আমাদের দিকে তাকান’ হয়, আবার ‘আমাদের রাখাল’ও হয়। এই সামান্য অবজ্ঞাও সহ্য করলেন না। ঘোষণা করে দিলেন, এ শব্দ কোনও ঈমানদারও ব্যবহার করতে পারবে না। তাঁর মহান উপস্থিতিতে প্রিয় সাহাবাগণও উচ্চস্বরে কথা বলতে পারবেন না বলে ওহী নাযিল হলো, করলে ঈমানসহ সমস্ত আমল বাতিলের হুঁশিয়ারি এলো। এই আদেশ যাঁরা নতশিরে মেনে নিয়েছেন, তাঁদের জন্যে সাথে সাথে ওহী অবতীর্ণ হলো সুসংবাদ নিয়ে।

প্রিয় মাহবুবের প্রতি স্রষ্টার এই অপার ভালোবাসাই শাইখ-উল-ইসলাম তুলে এনেছেন ইরফান-উল-কুরআনে, শব্দ চয়নে এবং নিজস্ব অভূতপূর্ব ভাষার মাধ্যমে। শাইখ-উল-ইসলামের ভাষা অন্য ভাষায় রূপান্তরের স্পর্ধা আমাদের নেই। তাঁর ভাব এবং অভিব্যক্তিকেই বরং আমরা বাংলায় পাঠকদের জনে তুলে ধরেছি। আমাদের মতো কয়েকজন অজ্ঞ, অযোগ্য সীমিত জ্ঞানের মানুষকে আল্লাহ্ পাক এই বিশেষ ও সম্মানিত কাজের জন্যে মনোনীত করেছেন। আমরা আমাদের সীমাবদ্ধতা এবং অযোগ্যতা মেনে নিয়েই এই কাজে হাত দিয়েছি এবং কাজ আলহামদুলিল্লাহ্ সম্পন্ন করে আপনাদের হাতে তুলে দিতে পেরে নিজেদেরকে সার্থক এবং ধন্য মনে করছি। আমাদের চেষ্টার ত্রুটি ছিল না। তবে আমাদের অজ্ঞাতে কোনও ত্রুটি কারো নজরে এলে আমাদেরকে অবগত করার অনুরোধ রইলো। ইন-শা-আল্লাহ পরবর্তী সংস্করণে তার সংশোধন করা হবে।
ইরফান-উল-কুরআন উর্দু ও ইংরেজি লিংক – https://www.irfan-ul-quran.com/english/index.html
ইরফান-উল-কুরআন উর্দু ও ইংরেজি এপ – https://play.google.com/store/apps/details?id=com.tgq.irfanulquran
খুব শীঘ্রই বাংলা টেক্সট সংযোজন করা হবে ইন শা আল্লাহ্।