হুজুর শাইখ-উল-ইসলাম ড. মুহাম্মাদ তাহির-উল-কাদরী মা. জি. আ.র জীবনী।

শাইখ উল ইসলাম ডক্টর মুহাম্মদ তাহির উল ক্বাদরী এবং মিনহাজ উল কোরআন ইন্টারন্যাশনাল
পর্ব-০১
-ইঞ্জিনিয়ার নাসির, যুক্তরাষ্ট্র
কানাডা প্রবাসী শাইখ উল ইসলাম প্রফেসর ডক্টর মুহাম্মাদ তাহির উল ক্বাদরী অনুপম পাণ্ডিত্যের অধিকারী একজন কালোত্তীর্ণ আধ্যাত্মিক নেতা। তিনি ইসলামী শাস্ত্রীয় জ্ঞান, আধ্যাত্মিকতা, প্রজ্ঞা, ইখলাস, ভালোবাসা, ঐক্য এবং মানবতাবাদের এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত। সহিষ্ণুতা, আলোচনা, সংহতি ও শিক্ষার দ্বারা অভিন্ন মতাদর্শ সৃষ্টি করে পারস্পরিক হৃদ্যতা সুদৃঢ়করণ প্রয়াসের জন্য তিনি বিশ্বব্যাপী ব্যাপকভাবে পরিচিত ও সমাদৃত। সুতীক্ষ্ণ অন্তর্দৃষ্টি দিয়ে সফলভাবে ভবিষ্যতের সাথে অতীতের মিলন ঘটানোয় তিনি সবিশেষ পারঙ্গম এবং এভাবে দিয়ে চলেছেন প্রচলিত সমস্যাবলীর সঠিক সমাধান। প্রাচ্য ও প্রতীচ্যের হাজার হাজার ওলামায়ে কেরাম/ইসলামিক স্কলার, পীর/মাশায়েখ, ছাত্র, বুদ্ধিজীবী এবং শিক্ষাবিদ তাঁর কাছ থেকে হাদীস, তাফসীর, ফিকহ্, ধর্মতত্ত্ব, সুফিবাদ, ইতিহাস, ইত্যাদি বিভিন্ন বিষয়ে জ্ঞান আহরণ করে আসছেন।
শাইখুল ইসলাম ১২ বছর বয়সে পবিত্র মদিনা মনোয়ারার মাদ্রাসা আল উলুম আশ শরিয়া হতে ইসলামী শিক্ষা অর্জন শুরু করেন। তিনি পাঞ্জাব বিশ্ববিদ্যালয় হতে ইসলামিক স্টাডিজের উপর স্বর্ণ পদকসহ স্নাতকোত্তর ডিগ্রিতে স্বর্ণপদকসহ প্রথম শ্রেণীতে প্রথম স্থান লাভ করেন। একই বিশ্ববিদ্যালয় হতে তিনি ইসলামী আইনের উপর পিএইচডি সম্পন্ন করেন এবং আইন বিভাগের অধ্যাপক হিসেবে যোগদান করেন।
শাইখ উল ইসলাম প্রফেসর ডক্টর মুহাম্মাদ তাহির উল ক্বাদরী বর্তমান বিশ্বের জ্ঞানবিস্ময় ও পৃথিবীব্যাপী আলোড়ন সৃষ্টিকারী এক মহান ব্যক্তিত্ব। তিনি অদ্যাবধি পঞ্চাশটিরও বেশী জ্ঞানের বিভিন্ন শাখায় ১২০০ এর বেশী কিতাবের রচয়িতা। তিনি সারা দুনিয়াব্যাপী আরবি, ফার্সি, ইংরেজি ও উর্দূ ভাষায় ৮০০০ এরও বেশী বক্তৃতা প্রদানসহ মুসলিম বিশ্বের ইতিহাসে আলোড়ন সৃষ্টিকারী পবিত্র কুরআনুল কারীমের প্রথম বিশ্বকোষ প্রণেতা। বিশ্বকোষটি পাঁচ হাজারের অধিক বিষয় ও প্রায় বিশ হাজার অনুপ্রসঙ্গ সম্বলিত এবং ৮ খন্ডে প্রকাশিত ও বিশ্বব্যাপী ব্যাপকভাবে প্রচারিত ও সমাদৃত। কুরআনুল কারীমের বিশ্বকোষটি ইতিমধ্যে যুক্তরাজ্য হতে ইংরেজী ভাষায় প্রকাশিত হয়েছে এবং ভারতে হিন্দি ভাষায়ও প্রকাশ করা হয়েছে। মুসলিম বিশ্বের পরম বিস্ময় ইসলামের ইতিহাসে ৫০,০০০ বিষয়ের উপর সাড়ে সাত লক্ষাধিক হাদিস শরীফের সংযোজনে তিনিই প্রথম হাদিস শরিফের বিশ্বকোষ প্রণেতা যা ইনশাআল্লাহ করোনা পরবর্তী অনুকুল সময়ে ৪০ খন্ডে প্রকাশিত হবে।


তাঁর ইরফান উল কুরআন নামক আল কুরআনের তরজমা ইংরেজী, উর্দূ, হিন্দি, নরওয়েজীয়ানসহ ৯ ভাষায় প্রকাশিত হয়েছে এবং মিনহাজ পাবলিকেশস বাংলাদেশ এর তত্ত্বাবধানে বাংলা ভাষায় প্রকাশনার কাজ চলছে। পারিভাষিক অর্থের সাথে অন্তর্নিহিত বাতেনী অর্থের সংযোজনে ও রাসূলে পাক এর ইশকের আলোকে সংক্ষিপ্ত পরিসরে এটি বর্তমান বিশ্বের অতি বিশুদ্ধতম বিজ্ঞান সম্মত এক অনন্য বিজ্ঞানময় তাফসিরী তরজমা গ্রন্থ।
বর্তমানে তিনি আরবী ভাষায় কুরআনুল কারীমের তাফসির গ্রন্থের লেখনীতে ব্যস্ত আছেন এবং ইনশাআল্লাহ এটি প্রথমে ১০ খন্ডে প্রকাশিত হবে। কুরআনুল কারীমের এই অনন্য তরজমা গ্রন্থ পরবর্তীতে ইনশাআল্লাহ ইংরেজি, উর্দু, বাংলা সহ পৃথিবীর বিভিন্ন ভাষায় অনূদিত হবে। তাঁর রচিত ১১ খন্ডে প্রকাশিত সিরাতুর রাসূল কিতাবটি রাসূলে পাক সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া আলিহি ওয়াসাল্লামের জীবনের উপর এক বিশাল জ্ঞান ভান্ডার। প্রায় ৭০০ পৃষ্ঠায় তাঁর রচিত মিলাদ উন নবী কিতাবটি রাসূলে পাক সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া আলিহি ওয়াসাল্লামের ধরাধামে আগমনের দিবস ১২ রবিউল আউয়াল উদযাপনের পক্ষে এক নির্ভরযোগ্য অনন্য দলিল গ্রন্থ।
বিশ্বব্যাপী জঙ্গীবাদের মূলোৎপাটনে শাইখ উল ইসলাম প্রফেসর ডক্টর মুহাম্মদ তাহির উল ক্বাদরী প্রায় চল্লিশটিরও বেশী কিতাব রচনা করেছেন এবং তাঁর অনেক লেখাই ইউরোপ-অ্যামেরিকায় ওয়ার্ল্ড রিলিজন সিলেবাসের অন্তর্ভূক্ত হয়েছে।
২০১১ সালের ১৪ সেপ্টেম্বর লন্ডনের ওয়েম্বলি অ্যারেনাতে মানবতার জন্যে শান্তি সম্মেলনে প্রায় বার হাজার মানুষের উপস্থিতিতে শাইখ উল ইসলাম বক্তব্য দেন। ইংল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরন, ডেপুটি প্রধানমন্ত্রী নিক ক্লেগ, বিরোধী নেতা এড মিলিব্যান্ড, জাতিসংঘের মহাসচিব বান কি-মুন সহ বিশ্বের অনেক উল্লেখযোগ্য ব্যাক্তিত্ব সম্মেলনের সাথে একাত্মতা প্রকাশ করেন এবং তাদের বার্তা উক্ত সম্মেলনে অডিও-ভিডিও সিস্টেমের মাধ্যমে উপস্থিত জনতাকে শুনানো হয়। ইহুদি রাব্বি এবং হিন্দু, বৌদ্ধ ও শিখ ধর্মের প্রতিনিধিদের সহ বিভিন্ন ধর্মের প্রতিনিধিরা এ সম্মেলনে যোগ দেন এবং এখানে ঘোষিত পিস ডেক্লারেশন যা বিশ্বব্যাপী ব্যাপক সাড়া ফেলে। শান্তির এ ঘোষণায় শান্তি প্রার্থনা, মুসলিম বিশ্বের গণতন্ত্র ও সুশাসনের আহ্বান, মানবাধিকারের প্রতি শ্রদ্ধা, এবং সারা পৃথিবীতে দারিদ্র্য বিমোচনের আহ্বান অন্তর্ভুক্ত ছিল।

ইসলামের নামে জঙ্গীবাদ ও আত্মঘাতি বোমা হামলা ও সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে তাঁর গবেষণালব্ধ ঐতিহাসিক ৬০০ পৃষ্ঠার ফাতওয়া কিতাবটি মিশরের ইসলামিক রিসার্চ একাডেমি সত্যায়ন করেছে এবং বিভিন্ন আন্তর্জাতিক মিডিয়ায় প্রচারিত-প্রকাশিত এবং দুনিয়াব্যাপী গৃহীত হয়েছে। কিতাবটির অনুবাদ বাংলা, উর্দূ, হিন্দি, ড্যানিশ, নরওয়েজীয়ানসহ বিভিন্ন ভাষায় প্রকাশিত হয়েছে। শাইখ উল ইসলাম ডক্টর মুহাম্মদ তাহির উল ক্বাদরীর আরবি, উর্দু ও ইংরেজী ভাষায় লিখিত ১২০০ এর অধিক কিতাবের মধ্যে প্রায় ৬০০ টি কিতাব ইতিমধ্যে প্রকাশিত হয়েছে এবং তাঁর প্রায় ৮০০০ বক্তৃতা ইউটিউব, অডিও ভিডিও ক্যাসেট এবং বিভিন্ন সিডি ফরম্যাটে সবার জন্যে সহজপ্রাপ্য করা হয়েছে। তাঁর লিখিত কিতাবগুলো বাংলা, ইংরেজি, আরবি, জার্মান, ড্যানিশ, নরওয়েজিয়ান, হিন্দিসহ বিশ্বের বিভিন্ন ভাষায় অনুবাদ করা হচ্ছে।
ইউরোপে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের জন্যে তিনি পিস কারিকুলামের প্রবর্তন করেছেন। পিস কারিকুলামের অন্তর্ভুক্ত প্রায় এক ডজন কিতাব ইংরেজী ভাষায় লিখিত হয়েছে এবং বর্তমানে বিভিন্ন দেশে এর অনুবাদের কাজ চলছে। তাঁর ইসলামিক কারিকুলাম অন পিস অ্যান্ড কাউন্টার টেরোরিজম বইটির একটি ভলিউম যুবক সমাজ ও ছাত্র/ ছাত্রীদের জন্যে এবং অন্য ভলিউম মাওলানা, মসজিদের ইমাম ও শিক্ষক সমাজের জন্যে লিখিত হয়েছে।
পৃথিবীব্যাপী বহুল আলোচিত, প্রশংসিত ফতওয়া অন টেরোরিজম বই ছাড়াও সন্ত্রাসবাদবিরোধী তাঁর অন্যান্য কিতাবের মধ্যে পিস ইন্টিগ্রেশন অ্যান্ড হিউম্যান রাইট্স, ইসলাম অন মারসি অ্যান্ড কম্প্যাশন, রিলেশান অফ মুসলিমস অ্যান্ড নন-মুসলিমস, দ্য সুপ্রিম জিহাদ, ইসলাম অন লাভ অ্যান্ড নন ভাইওল্যান্স, ইসলাম অন সারভিং হিউম্যানিটি, ইসলাম-রিলিজন অফ পিস অর টেরর? ইত্যাদি বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। এসব কিতাব দুনিয়াব্যাপী গবেষণার তথ্যসূত্র হয়ে দাঁড়িয়েছে। শাইখ উল ইসলাম জ্ঞানের এক মহাসমুদ্র এবং বর্তমান যুগের জন্য বিশেষ এক আশীর্বাদ।

ইসলামের ইতিহাসে খুব কম লোকই আছেন যাদের একক লেখকের লিখিত কিতাবেই বিশাল একটা লাইব্রেরী হতে পারে। এখানেই শাইখ উল ইসলাম ডক্টর মুহাম্মদ তাহির উল ক্বাদরী হুজুর ব্যতিক্রম। তাঁর একক লেখনীতেই দেশে-বিদেশে গড়ে উঠেছে বিশাল বিশাল লাইব্রেরি। তার লিখিত বই গুলোর একটি তালিকা প্রকাশ করলে তার কলেবর এত বড় হবে যে শুধু তা দিয়েই হয়ে যাবে একটি কিতাব। ইসলামিক ফোরাম অফ কানাডার প্রেসিডেন্ট গায়ানিজ বংশোদ্ভূত বিশ্ব বিখ্যাত শায়েখ ফয়সাল হামিদ আবদুর রাজ্জাক এক অনুষ্ঠানে অনেক লোকের সমাগমে শাইখ উল ইসলাম ডক্টর মুহাম্মদ তাহির উল ক্বাদরীকে কিবলা হুজুর নামে সম্বোধন করে বর্তমান যুগের সুয়ুতি বলে আখ্যায়িত করেছেন। সত্যিই তিনি এযুগের সুয়ুতি, আল্লাহর এক মহান জিন্দা অলি।
১৯৮১ সালে শাইখ উল ইসলাম বিশ্বব্যাপী ইসলামের নামে সন্ত্রাসী কর্মকান্ড ও ধর্মীয় অপপ্রচারের বিরুদ্ধে সুশৃঙ্খল বিশুদ্ধজ্ঞান নির্ভর ইসলামের প্রচারণার লক্ষ্যে মিনহাজ উল কুরআন ইন্টারন্যাশনাল প্রতিষ্ঠা করেন। সুফিজম ভিত্তিক এ প্রতিষ্ঠানের কার্যক্রম আজ বিশ্বের প্রায় ১০০ টি দেশে সম্প্রসারিত হয়েছে। শুরুতে লাহোরে হলেও বর্তমানে মিনহাজ উল কোরআন ইন্টারন্যাশনাল এর আন্তর্জাতিক সদর দপ্তর যুক্তরাজ্যে অবস্থিত।
শাইখ উল ইসলাম বর্তমান বিশ্বের এক জীবন্ত কিংবদন্তী। সারা বিশ্বময় এক ডজনেরও বেশী লোক তাঁর জীবন ও কর্মের উপর এমফিল ও পিএইচডি ডিগ্রির গবেষণা সম্পন্ন করেছেন এবং অনেকেই তাঁর এবং তাঁর প্রতিষ্ঠিত মিনহাজ উল কুরআন ইন্টারন্যাশনাল নামক দ্বীনি অর্গানাইজেশনের উপরও এমফিল ও পিএইচডি অর্জনের গবেষণা করছেন।
শাইখ উল ইসলাম ডক্টর মুহাম্মাদ তাহির উল ক্বাদরী ও মিনহাজ উল কুরআন ইন্টারন্যাশনাল (এমকিউআই) উপর বিশ্বব্যাপী সম্পন্ন করা এবং চলমান এমফিল ও পিএইচডি গবেষণা কর্মের একটি সারসংক্ষেপ নিম্নে দেওয়াা হলঃ
★ যুক্তরাজ্যের স্কটল্যান্ডের এবারডিন বিশ্ববিদ্যালয়ের ডক্টর মুহাম্মাদ রফিক হাবিব আল আজহারীর পিএইচডি থিসিসঃ
“ইসলামী পুনরুজ্জীবনে শাইখ উল ইসলাম ডক্টর মুহাম্মাদ তাহির উল ক্বাদরীর আদর্শিকতার একটি শাস্ত্রীয় বিশ্লেষণ”।
★ প্যারিসে অবস্থিত ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব ওরিয়েন্টাল ল্যাংগুয়েজ এবং সভ্যতার ইসলামী স্টাডিজের সহযোগী অধ্যাপক ফ্রান্সিসকো চিওবোতি ৭৫০ পৃষ্ঠার পিএইচডি থিসিস লিখেছেন:
“রাসূলের পাক সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া আলিহি ওয়াসাল্লামের ওফাতের পরে রিসালাতে হাদিসের ভাগ্যের উপর কূশায়ীর কর্তৃক প্রতিবেদন” যার মধ্যে তিনি ব্যাপকভাবে ডক্টর মুহাম্মাদ তাহির উল ক্বাদরীর উদ্ধৃতি তুলে ধরেছেন।
★ ডঃ নাঈম আনোয়ার নূমানী করাচি বিশ্ববিদ্যালয়ে হাদিস বিজ্ঞানের ক্ষেত্রে ডক্টর মুহাম্মাদ তাহির উল ক্বাদরীর অবদানের উপর পিএইচডি থিসিস লিখেছেন।
★ মেলবোর্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের এক অস্ট্রেলিয়ান গবেষক ছাত্র মুসলমানদের মধ্যে চরমপন্থার বিস্তার নিয়ে পিএইচডি থিসিস লিখেছিলেন। তিনি লিখেছিলেন ইসলামের প্রকৃত শিক্ষার বিপরীত। তার কাজ শেষ করার সময় “সন্ত্রাসবাদ ও আত্মঘাতী বোমা হামলার উপর ডক্টর মুহাম্মাদ তাহির-উল ক্বাদরীর ফাতওয়া” বইটি বিশ্বব্যাপী প্রকাশিত হয়। এটি অধ্যায়নের করে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে বলেন যে, তিনি থিসিসে যা লিখেছেন তা বাস্তবতা প্রকাশ করেনি এবং তিনি ডক্টর মুহাম্মাদ তাহির-উল ক্বাদরীর ফাতওয়া’র আলোকে তার থিসিস পুনরায় যাচাই ও সংশোধন করতে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আরও ২ বছর সময় নেন।
★ ডঃ ফীদা হোসেন আবেদি ইরানের আল-মস্তাফা বিশ্ববিদ্যালয়ের (কোম) পিএইচডি থিসিসের বিষয়ঃ
“কুরআন ও সুন্নাহর বৈজ্ঞানিক বিশ্লেষণের আলোকে আহল আল-বাইতের মর্যাদা ও কর্তৃত্ব”। তিনি আহল আল-সুন্নাহর দৃষ্টিভঙ্গি বিশেষ করে শাইখ উল ইসলাম ডক্টর মুহাম্মাদ তাহির উল ক্বাদরীর দৃষ্টিভঙ্গিতে বিশ্লেষণ করেছেন যে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া আলিহি ওয়াসাল্লাম এর উত্তরাধিকারী তিনটি ভাগে বিভক্ত হয়েছেঃ রাজনৈতিক পরিচারক, ধর্মীয় এবং বৈজ্ঞানিক তত্ত্বাবধান, এবং আধ্যাত্মিক অভিভাবকত্ব।
★ ইরানের ইউনুস হায়দারি এমফিল থিসিস শাইখ উল ইসলাম ডক্টর মুহাম্মাদ তাহির উল ক্বাদরীর ধর্মীয় ও বুদ্ধিবৃত্তিক প্রচেষ্টার উপর সম্পন্ন করেছেন।
★ বিশ্ব বিখ্যাত আল-আজহার বিশ্ববিদ্যালয়ে শাইখ উল ইসলাম ডক্টর মুহাম্মাদ তাহির উল ক্বাদরীর ১১ খন্ডের প্রখ্যাত বই ‘সিরাত-আল রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া আলিহি ওয়াসাল্লাম ’ এঁর উপর পিএইচডি কার্যক্রম অব্যাহত আছে। প্রথম পি,এইচডি গবেষণা এ কিতাবের ভলিউম ৯-এ উল্লেখিত ‘অলৌকিকতা’ বিষয়ক বিষয়ের সাথে সম্পর্কিত, দ্বিতীয় পিএইচডি থিসিস দুই খন্ডে প্রকাশিত সিরাত আল-রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া আলিহি ওয়াসাল্লাম বইয়ের ভুমিকার উপর।
★ জাকা উল্লাহ আব্বাসী নর্দান ইউনিভার্সিটিতে শাইখ উল ইসলাম ডক্টর মুহাম্মাদ তাহির উল ক্বাদরী রচিত সিরাত আল-রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া আলিহি ওয়াসাল্লাম বইয়ের প্রথম দুটি ভলিউমের ভাষাগত বিশ্লেষণের বিষয়ে এমফিল থিসিস লিখেছেন।
★ মুহম্মদ হোসেন আজাদ লাহোরের মিনহাজ বিশ্ববিদ্যালয়ে তাঁর এমফিল থিসিস শাইখ উল ইসলাম ডক্টর মুহাম্মাদ তাহির উল ক্বাদরীর গভীর অর্থগত ব্যাখ্যার স্বাতন্ত্র্র্য বিশ্লেষণ করেছেন।
★ মুলতানের বাহাউদ্দিন জাকারিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে এক গবেষক শাইখ উল ইসলাম ডক্টর মুহাম্মাদ তাহির উল ক্বাদরীর দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে জাতীয় রাজনীতিতে নারীর ভূমিকার উপর এমফিল থিসিস লিখেছেন।
★ বাহাউদ্দিন জাকারিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে এক গবেষক বিশ্ব স্তরে শান্তি প্রচারে শাইখ উল ইসলাম ডক্টর মুহাম্মাদ তাহির উল ক্বাদরীর অবদানের উপর এমফিল থিসিস সম্পন্ন করেছেন।
★ বাহাউদ্দিন জাকারিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে শাইখ উল ইসলাম ডক্টর মুহাম্মাদ তাহির উল ক্বাদরীর অর্থনৈতিক চিন্তা-ভাবনার তুলনামূলক বিশ্লেষণের উপর এমফিল থিসিস সমাপ্ত হয়েছে।
★ পৃথিবীর বিপ্লবে শাইখ উল ইসলাম ডক্টর মুহাম্মাদ তাহির উল ক্বাদরী এবং ইমাম আহমদ রেজা (রাঃ) চিন্তাধারার তুলনামূলক বিশ্লেষণের বিষয়ে একটি এমফিল থিসিস সমাপ্ত হয়েছে।
★ লাহোর বিশ্ববিদ্যালয় কলেজের একজন ছাত্র/ছাত্রী শাইখ উল ইসলাম ডক্টর মুহাম্মাদ তাহির উল ক্বাদরীর লিখিত সিরাত আল-রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া আলিহি ওয়াসাল্লাম বইয়ের সাথে একই বিষয়ে লিখিত অন্যান্য বইয়ের তুলনামূলক বিশ্লেষণ করে অনার্সের থিসিস লিখেছেন।
★ যুক্তরাষ্ট্রের অ্যারিজোনা স্টেট ইউনিভার্সিটিতে মিনহাজ উল কুরআন ইন্টারন্যাশনাল (এমকিউআই) এর ব্যবস্থাপনা দৃষ্টিভঙ্গি উপর পিএইচডি করা হচ্ছে।
★ যুক্তরাজ্যের ম্যানচেস্টার ইউনিভার্সিটিতে আল্লামা মুহাম্মদ রমজান শাইখ উল ইসলাম ডক্টর মুহাম্মাদ তাহির উল ক্বাদরীর ব্যক্তিত্ব ও চিন্তা-ভাবনা নিয়ে পিএইচডি থিসিস কাজ করছেন।
★ মিনহাজ বিশ্ববিদ্যালয় লাহোরে জিহাদ এর উপর বর্তমান শতাব্দীর মুজাদ্দীদ শাইখ উল ইসলাম ডক্টর মুহাম্মাদ তাহির উল ক্বাদরী ও তুরস্কের বিখ্যাত বিপ্লবী ব্যক্তিত্ব সৈয়দ বদিউজ্জামান নুসরির তুলনামুলক চিন্তাধারার উপর পিএইচডি থিসিস কার্যক্রম অব্যাহত আছে।
★ বাংলাদেশের চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষা বিস্তারে শাইখ উল ইসলাম ডক্টর মুহাম্মাদ তাহির উল ক্বাদরীর অবদানের উপরও পিএইচডি কার্যক্রম চলমান আছে।
বিশ্বের অনেক বিশ্ববিদ্যালয়ে শাইখ উল ইসলাম ডক্টর মুহাম্মাদ তাহির উল ক্বাদরীর ব্যক্তিত্ব ও মতাদর্শের ওপর গবেষণা করা হচ্ছে। তিনি বর্তমান বিশ্বের এক জীবন্ত কিংবদন্তি। সমসাময়িক কালে পৃথিবীর আর কোন ব্যাক্তির উপর জীবিতকালে এতো বেশী গবেষণা হয়নি।
বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তের তথা পাকিস্তান, লেবানন, সিরিয়া, মিশর, ইয়েমেন, বাগদাদ, সুদান, জর্ডান, সংযুক্ত আরব আমিরাত, পূর্ব আফ্রিকা, ভারত, বাংলাদেশসহ নানা দেশেরে আরও অনেক হাজার হাজার ইসলামী গবেষক শাইখুল ইসলামের ইযাজত লাভ করে কৃতার্থ হয়েছেন। বিশুদ্ধ ইসলামী শিক্ষা ও দর্শনের প্রচার এবং মুসলিম উম্মাহর নৈতিক ও আধ্যাত্মিক উন্নয়নে সৃষ্টিকুল শিরোমণি সর্বশ্রেষ্ঠ মহামানব নূরে মুজাস্সাম মহানবী হযরত মুহাম্মাদ মুস্তফা এঁর আদর্শগত শান্তিময় দ্বীন ইসলামের প্রচার ও প্রসারে তিনি একজন স্বীকৃত অগ্রদূত।
১৯৯৪ সালে শাইখ উল ইসলাম প্রফেসর ডক্টর মুহাম্মদ তাহির উল ক্বাদরীকে সর্বপ্রথম ‘শাইখ উল ইসলাম’ উপাধিতে ভূষিত করেন হযরত আশ শায়েখ আস সাইয়্যেদ গোলাম রাসুল পীর খাকি শাহ (রহ:)। তিনি ঈমাম আল হিন্দ হযরত মাওলানা শাহ আহমাদ রেজা খান আল বেরেলভী (রহ:) এর সরাসরি ছাত্র ও নাকিব আল আশরাফ সাইয়্যেদুনা ইব্রাহিম সাইফুদ্দিন বাগদাদী (রহ:) এর প্রধান খলিফা ছিলেন এবং ১৩০ বছর বয়সে ইন্তেকাল করেন। তিনি বলেন: ‘গাউসুল আযম হযরত আব্দুল ক্বাদের জিলানী আমাকে হুকুম দিয়ে বলেছেন, লোকজনকে জানিয়ে দাও যে মুহাম্মদ তাহির উল ক্বাদরী হচ্ছেন শাইখ উল ইসলাম’।
ডক্টর মুহাম্মদ তাহির উল ক্বাদরীকে ‘মুজাদ্দীদ’ উপাধিতে ভূষিত করেন তাঁর আপন পীর ক্বুদঅয়াতুল আউলিয়া আশ শায়েখ আস সাইয়্যেদ তাহির আলাউদ্দিন আল জিলানী আল বাগদাদ (রহ:)। ঈমামে আজম হযরত আবু হানিফা এর বংশধর সিরিয়ান আশ শায়েখ আহমাদ আজ জুবাইদি বলেন, ‘তিনি নিজে শুনেছেন যে ক্বুদঅয়াতুল আউলিয়া আশ শায়েখ আস সাইয়্যেদ তাহির আলাউদ্দিন আল জিলানী আল বাগদাদী (রহ:) নিজে ডক্টর মুহাম্মদ তাহির উল ক্বাদরীকে ‘মুজাদ্দীদ’ উপাধিতে ভূষিত করেছেন। ইসলামী জ্ঞান জগতের পাদপীঠ মিশরের কায়রো নগরীতে অবস্থিত জগদ্বিখ্যাত আল-আজহার বিশ্ববিদ্যালয় থেকেও তাঁকে শাইখ উল ইসলাম হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে।