ছোটদের নাটক “একতাই বল” এর অডিও শুনতে চাইলে এখানে ক্লিক করুণ! https://soundcloud.com/baten-miaji/ekotai-bol-unity-is-strength
ছোটদের নাটক “একতাই বল”
==============
ডঃ আব্দুল বাতেন মিয়াজী
———-
[আমার লিখিত ছোটদের এই নাটকটি অবশ্যই শুনবেন আর আপনার বাচ্চাদেরকে শোনাবেন। নাটকটি ১৯৯২ সালে বাংলাদেশ বেতার থেকে প্রথম প্রচারিত হয়েছিল। এরপর প্রায় ৭ বারেরও বেশি এটি পুনঃপ্রচার হয়। নাটকটি এতই সাড়া ফেলে দিয়েছিল যে “দৈনিক বাংলা” সহ বেশ কিছু দৈনিকে এর উপর প্রতিবেদন ছাপা হয়। এই নাটকের কাহিনী আল্লাহ পাকের সৃষ্টি সামান্য প্রাণী পিঁপড়াকে… নিয়ে। পিঁপড়া খুব পরিশ্রমী প্রাণী তা আমরা জানি, কিন্তু এরা যে একতাবদ্ধতায়ও শ্রেষ্ঠ তা আমরা অনেকেই খেয়াল করি না। তাহলে শুনুন এই নাটকটি। জানার আছে অনেক কিছু। আশা করি আপনাদের ভালো লাগবে। (ভালো না লাগলে পয়সা ফেরত! গ্যারান্টি দিলাম!)]
==============
ডঃ আব্দুল বাতেন মিয়াজী
———-
[আমার লিখিত ছোটদের এই নাটকটি অবশ্যই শুনবেন আর আপনার বাচ্চাদেরকে শোনাবেন। নাটকটি ১৯৯২ সালে বাংলাদেশ বেতার থেকে প্রথম প্রচারিত হয়েছিল। এরপর প্রায় ৭ বারেরও বেশি এটি পুনঃপ্রচার হয়। নাটকটি এতই সাড়া ফেলে দিয়েছিল যে “দৈনিক বাংলা” সহ বেশ কিছু দৈনিকে এর উপর প্রতিবেদন ছাপা হয়। এই নাটকের কাহিনী আল্লাহ পাকের সৃষ্টি সামান্য প্রাণী পিঁপড়াকে… নিয়ে। পিঁপড়া খুব পরিশ্রমী প্রাণী তা আমরা জানি, কিন্তু এরা যে একতাবদ্ধতায়ও শ্রেষ্ঠ তা আমরা অনেকেই খেয়াল করি না। তাহলে শুনুন এই নাটকটি। জানার আছে অনেক কিছু। আশা করি আপনাদের ভালো লাগবে। (ভালো না লাগলে পয়সা ফেরত! গ্যারান্টি দিলাম!)]
নাটকটির উৎস যেখান থেকে —
১৯৯২ সালের কথা। আমি তখন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগে দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র। বর্ষার ছুটিতে গ্রামের বাড়ি বেড়াতে গিয়েছি চাঁদপুরের মতলবে। তখনো মতলব উত্তরে “মেঘনা ধনাগোদা” বেড়ী-বাঁধটি সমাপ্ত হয়নি। ফলে ভরা বর্ষায় চতুর্দিকে কেবল থৈ থৈ পানি আর পানি। অলস দুপুরে পুকুরের পাড়ে বসে বই পড়ে সময় কাটাতাম। গল্প করার মত তেমন কাউকে পাওয়া যেতনা তখন। কারণ সম বয়সী সবাই তখন যার যার কাজে ব্যস্ত। অনেকেই শহরে পাড়ি জমিয়েছে।শ্রাবণ-ভাদ্র মাসের দিকের কথা। গ্রামে যাদের বাড়ি তারা অবশ্যই লক্ষ্য করে থাকবেন, বর্ষায় পিঁপড়েরা দল বেঁধে আসা-যাওয়া করে থাকে। আর পানি বাড়তে থাকায় পিঁপড়েগুলো সাদা সাদা ডিম মুখে নিয়ে বেয়ে বেয়ে গাছে উঠছিল। দূরে কচুরি-ফানার উপরেও লক্ষ্য করলাম পিঁপড়ের সমাহার। দলবেঁধে জড়ো হয়ে ছোট ছোট কুণ্ডলী পাকিয়ে এরা ভেসে চলছে। আর অবাক করার ব্যাপারে হলো এই কুণ্ডলীর ভেতরে থাকে শুকনো, পানি ঢুকতে পাড়ে না। ফলে পিঁপড়েরা সহজেই প্রয়োজনীয় অক্সিজেন নিয়ে পানিতে ভেসে বেঁচে থাকতে পারে। নৌকো দিয়ে বিলের জমিতে কচুরি-ফানা পরিস্কার করতে গেলে দেখতাম, ধনচে আর পাট গাছের উপর পিঁপড়ের বাসা। বর্ষার পানি থেকে বাঁচার জন্য এদের রয়েছে হরেকরকম ব্যবস্থা। আমরা অনেক সময়ই এসব ছোটখাটো ব্যাপার লক্ষ্য করিনা। লক্ষ্য করে দেখবেন এদের চালচলন আর জীবন ব্যবস্থা থেকে আমাদের অনেক কিছু শেখার রয়েছে।পুকুরের পাড়ে পিঁপড়ের সারি। পানিতে কুণ্ডলী পাকিয়ে যাওয়া পিঁপড়ের সারি। খাবার আর নিজেদের ডিম নিয়ে ছুটে চলা পিঁপড়ের সারি। এত সারি সারি পিঁপড়ে দেখে আমার মনে এদের সম্পর্কে একধরণের কৌতূহল জন্ম নিল। পিঁপড়েরা দল বেঁধে চলতে পছন্দ করে। কেউ কোথাও খাবারের সন্ধান পেলে একা চেষ্টা করে টেনে নিতে। না পারলে অন্যদের খবর দেয়। অনেকে এসে সে খাবার নিয়ে ছুটে চলে আপন ঠিকানায়। এরা যে রাস্তায় চলে সে রাস্তায় একটি অদৃশ্য রেখা তৈরি হয়। হাত দিয়ে সে রেখা মুছে দিলে এরা পথ হারিয়ে এলোমেলো ছুটতে থাকে। পিঁপড়ের জীবনে রয়েছে অসম্ভব সব মজার ব্যাপার। এরা এদের শরীর আর ওজনের তুলনায় কয়েকগুণ বেশি ওজনের বস্তু অনায়াসেই টেনে নিয়ে যেতে পারে। এদের জীবনের কৌতূহলের শেষ নেই। আর এ কৌতূহল থেকেই মূলত এই নাটকটি লিখা।ছুটি শেষে ঢাকায় ফিরে গিয়েই বাংলাদেশ বেতারে গেলাম খোঁজ নিতে কিভাবে নাটকটি প্রচার করা যায়। পরিচয় হল শিশু বিভাগের পরিচালক আবু নওশের সাহেবের সাথে। তাঁকে নাটকটির ব্যাপারে বললে তিনি আগ্রহ নিয়ে পাণ্ডুলিপিটি দেখলেন। কোন মন্তব্য না করে বললেন, “নাটকটি প্রচার করবো। তবে সামান্য কিছু পরিবর্তন করা প্রয়োজন।”তখন থাকতাম মুক্তিযোদ্ধা জিয়াউর রহমান হলে। হলে ফিরেই বসে গেলাম এডিটিং-এ। পরদিন আবার গেলাম বাংলাদেশ বেতারে আবু নওশের সাহেবের কাছে। উনি পাণ্ডুলিপিটি রেখে দিয়ে জানালেন কয়েক সপ্তাহ পরেই নাটকটি প্রচার করা হবে। প্রচারের পূর্বে রিহার্সেল আর রেকর্ডিং-এর দিন আমাকে উপস্থিত থাকতে বলা হলো। আমি উত্তেজনায় যেন আকাশে ভেসে বেড়াতে লাগলাম। সে এক আজব মজার ব্যাপার। জীবনে প্রথম দেখলাম রেডিওতে কিভাবে রিহার্সেল হয় আর কিভাবেই বা নাটক, গান বা শব্দ ধারণ করা হয়। নাট্যকার হবার সুবাদে ঘুরে ঘুরে আরো অনেক কিছু দেখার সুযোগ হলো। অনেক অজানা বিষয় অবগত হলাম। কিভাবে খবর পড়া হয়। কিভাবে বিভিন্ন ঘোষক একটু পর পর ঘোষণা দেন। কিভাবেই বা সেই শব্দ তরঙ্গ হয়ে ইথারে ভেসে চলে দূর দূরান্তে থাকা হাজার হাজার বেতারযন্ত্রে।নিউ মার্কেটের এক বন্ধুর ক্যাসেটের দোকান ছিল। আইয়ুব ভাই। তাঁকে দিন ও সময় জানালে তিনিই এটি ধারণ করে আমাকে দেন। অনেক দিন আগের, তবে বুঝতে কষ্ট হবে না। আপনাদের ভালো লাগলে নাটকটি অন্যের সাথে শেয়ার করতে পারেন।ধন্যবাদ!
১৯৯২ সালের কথা। আমি তখন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগে দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র। বর্ষার ছুটিতে গ্রামের বাড়ি বেড়াতে গিয়েছি চাঁদপুরের মতলবে। তখনো মতলব উত্তরে “মেঘনা ধনাগোদা” বেড়ী-বাঁধটি সমাপ্ত হয়নি। ফলে ভরা বর্ষায় চতুর্দিকে কেবল থৈ থৈ পানি আর পানি। অলস দুপুরে পুকুরের পাড়ে বসে বই পড়ে সময় কাটাতাম। গল্প করার মত তেমন কাউকে পাওয়া যেতনা তখন। কারণ সম বয়সী সবাই তখন যার যার কাজে ব্যস্ত। অনেকেই শহরে পাড়ি জমিয়েছে।শ্রাবণ-ভাদ্র মাসের দিকের কথা। গ্রামে যাদের বাড়ি তারা অবশ্যই লক্ষ্য করে থাকবেন, বর্ষায় পিঁপড়েরা দল বেঁধে আসা-যাওয়া করে থাকে। আর পানি বাড়তে থাকায় পিঁপড়েগুলো সাদা সাদা ডিম মুখে নিয়ে বেয়ে বেয়ে গাছে উঠছিল। দূরে কচুরি-ফানার উপরেও লক্ষ্য করলাম পিঁপড়ের সমাহার। দলবেঁধে জড়ো হয়ে ছোট ছোট কুণ্ডলী পাকিয়ে এরা ভেসে চলছে। আর অবাক করার ব্যাপারে হলো এই কুণ্ডলীর ভেতরে থাকে শুকনো, পানি ঢুকতে পাড়ে না। ফলে পিঁপড়েরা সহজেই প্রয়োজনীয় অক্সিজেন নিয়ে পানিতে ভেসে বেঁচে থাকতে পারে। নৌকো দিয়ে বিলের জমিতে কচুরি-ফানা পরিস্কার করতে গেলে দেখতাম, ধনচে আর পাট গাছের উপর পিঁপড়ের বাসা। বর্ষার পানি থেকে বাঁচার জন্য এদের রয়েছে হরেকরকম ব্যবস্থা। আমরা অনেক সময়ই এসব ছোটখাটো ব্যাপার লক্ষ্য করিনা। লক্ষ্য করে দেখবেন এদের চালচলন আর জীবন ব্যবস্থা থেকে আমাদের অনেক কিছু শেখার রয়েছে।পুকুরের পাড়ে পিঁপড়ের সারি। পানিতে কুণ্ডলী পাকিয়ে যাওয়া পিঁপড়ের সারি। খাবার আর নিজেদের ডিম নিয়ে ছুটে চলা পিঁপড়ের সারি। এত সারি সারি পিঁপড়ে দেখে আমার মনে এদের সম্পর্কে একধরণের কৌতূহল জন্ম নিল। পিঁপড়েরা দল বেঁধে চলতে পছন্দ করে। কেউ কোথাও খাবারের সন্ধান পেলে একা চেষ্টা করে টেনে নিতে। না পারলে অন্যদের খবর দেয়। অনেকে এসে সে খাবার নিয়ে ছুটে চলে আপন ঠিকানায়। এরা যে রাস্তায় চলে সে রাস্তায় একটি অদৃশ্য রেখা তৈরি হয়। হাত দিয়ে সে রেখা মুছে দিলে এরা পথ হারিয়ে এলোমেলো ছুটতে থাকে। পিঁপড়ের জীবনে রয়েছে অসম্ভব সব মজার ব্যাপার। এরা এদের শরীর আর ওজনের তুলনায় কয়েকগুণ বেশি ওজনের বস্তু অনায়াসেই টেনে নিয়ে যেতে পারে। এদের জীবনের কৌতূহলের শেষ নেই। আর এ কৌতূহল থেকেই মূলত এই নাটকটি লিখা।ছুটি শেষে ঢাকায় ফিরে গিয়েই বাংলাদেশ বেতারে গেলাম খোঁজ নিতে কিভাবে নাটকটি প্রচার করা যায়। পরিচয় হল শিশু বিভাগের পরিচালক আবু নওশের সাহেবের সাথে। তাঁকে নাটকটির ব্যাপারে বললে তিনি আগ্রহ নিয়ে পাণ্ডুলিপিটি দেখলেন। কোন মন্তব্য না করে বললেন, “নাটকটি প্রচার করবো। তবে সামান্য কিছু পরিবর্তন করা প্রয়োজন।”তখন থাকতাম মুক্তিযোদ্ধা জিয়াউর রহমান হলে। হলে ফিরেই বসে গেলাম এডিটিং-এ। পরদিন আবার গেলাম বাংলাদেশ বেতারে আবু নওশের সাহেবের কাছে। উনি পাণ্ডুলিপিটি রেখে দিয়ে জানালেন কয়েক সপ্তাহ পরেই নাটকটি প্রচার করা হবে। প্রচারের পূর্বে রিহার্সেল আর রেকর্ডিং-এর দিন আমাকে উপস্থিত থাকতে বলা হলো। আমি উত্তেজনায় যেন আকাশে ভেসে বেড়াতে লাগলাম। সে এক আজব মজার ব্যাপার। জীবনে প্রথম দেখলাম রেডিওতে কিভাবে রিহার্সেল হয় আর কিভাবেই বা নাটক, গান বা শব্দ ধারণ করা হয়। নাট্যকার হবার সুবাদে ঘুরে ঘুরে আরো অনেক কিছু দেখার সুযোগ হলো। অনেক অজানা বিষয় অবগত হলাম। কিভাবে খবর পড়া হয়। কিভাবে বিভিন্ন ঘোষক একটু পর পর ঘোষণা দেন। কিভাবেই বা সেই শব্দ তরঙ্গ হয়ে ইথারে ভেসে চলে দূর দূরান্তে থাকা হাজার হাজার বেতারযন্ত্রে।নিউ মার্কেটের এক বন্ধুর ক্যাসেটের দোকান ছিল। আইয়ুব ভাই। তাঁকে দিন ও সময় জানালে তিনিই এটি ধারণ করে আমাকে দেন। অনেক দিন আগের, তবে বুঝতে কষ্ট হবে না। আপনাদের ভালো লাগলে নাটকটি অন্যের সাথে শেয়ার করতে পারেন।ধন্যবাদ!