বাতিলেরা কি অন্ধ?
============
বাতিলেরা যুগে যুগে ইসলামের সৌন্দর্য বিনষ্ট করে কায়েম করতে চায় তাদের আধিপত্য। কখনো মানুষের ঈমান ও আক্বীদাকে আঘাত হেনে, কখনো সন্ত্রাসকে জিহাদ হিসেবে চালিয়ে দিয়ে, কখনো মুসলমানদের শত্রু ইহুদী খৃষ্টান এবং বিধর্মীকে বন্ধুরূপে গ্রহণ করে। কখনো আবার মুসলমানদের বিরুদ্ধে কাফেরদেরকে লেলিয়ে দিয়ে। ইসলামের সেই প্রথম যুগ থেকেই তারা ভিন্ন ভিন্ন নামে মুসলমানকে ধোঁকা দিয়ে আসছে। কখনো খা…রেজি নামে, কখনো রাফেয়ী নামে, কখনো শিয়া আবার কখনো ওহাবী হিসেবে। এখন তাদের নতুন নামকরণ হয়েছে আহলে হাদিস (আসলে আহলে খবিস), লা-মাজহাবী, সালাফী ইত্যাদি। ইসলামের সব ঐতিহ্য ধ্বংস করে দিয়ে তারা মানুষকে আবার সেই জাহেলি যুগে ফিরিয়ে নেবার জন্য বদ্ধ পরিকর। তারা এর নাম দিয়েছে সলফে সালিহীনের পথ। অথচ মুসলমানগণ রাসুল (দঃ) এর যুগ থেকে যে আমল ও আক্বীদা পোষণ করে আসছে, তা থেকে তারা কৌশলে মানুষকে দূরে সরিয়ে দিতে চায়। তারা হঠাত করে নতুন ফের্কা কায়েমের মাধ্যমে মুসলমানকে দেখে মুশরিকের রূপে। তাদের চোখে সবকিছু বিদাত। মুসলমান জিকির করে আল্লাহর। আর তারা জিকির করে “শিরক, বিদাত, শিরক বিদাত বলে”। নাউজুবিল্লাহ!
তাদের কাছে অতি পরিচিত বিদাতগুলো হলোঃ
* শবে বারাত
* শবে মে’রাজ
* ঈদে মীলাদুন্নাবী (দঃ)
*মীলাদ পড়া ও কিয়াম করা
* নামাজের পরে হাত তুলে মোনাজাত করা
* ঈদের নামাজের পর কোলাকুলি করা
* ওলি-আল্লাহর মাজার জিয়ারতকে মাজার পুজা মনে করা আর তাই মাজার ধ্বংসের মাদ্যমে ইসলামকে ঐতিহ্য ও ইতিহাস শূন্য করার গোপন অভিসন্ধি
* মুখে বলবে কেবল কুরআন-হাদিস অনুসারে আমল করি (তাও কেবল সিহাহ সিত্তার বাইরে কোন হাদিসকে না মানা)
* কপি পেস্ট করে মক্কার মুশরিক ও কাফেরদের ক্ষেত্রে যেসব আয়াত নাজিল হয়েছে সেগুলোকে মুসলমানদের ক্ষেত্রে ব্যবহার করা।
* এজিদকে দোষী মনে না করা আর এজিদের নামের শেষে (রাঃ) বলা। পাশাপাশি মনে করা যে ইমাম হুসেইন (রাঃ) রাজনৈতিক কারণে বিদ্রোহ করেছিলেন। নাউজুবিল্লাহ!
* নবী (দঃ) এর ভুল ছিল মনে করা। সাহাবা সম্পর্কে মিথ্যা অপবাদ দেয়া
* নবী করীম (দঃ) কে আমাদের মত মানুষ মনে করা
* মাজহাব না মানা বা তাক্কলিদকে শিরক মনে করা
* কথায় কথায় শিরক বিদাত বলা ইত্যাদি
আজ পর্যন্ত কোন শিবির, আহলে হাদিস, লা-মাজহাবী কিংবা ওহাবী কুরআন ও হাদিসের দলীল দেখে নিজেকে শুধরে নিয়েছে এমন নজির কেউ দেখাতে পারবে না। আপনি যতই দলীল দেন না কেন, সে বলবে এই হাদিস জাল, না হয় বানোয়াট আর না হয় দুর্বল। তারা শয়তানের ভাই ও বন্ধু। এজিদের যোগ্য উত্তরসূরি এবং দাজ্জাল। তাদের মুনাফেকির জবাবে আল্লাহ তাই বলেছেনঃ
“আর মানুষের মধ্যে কিছু লোক এমন রয়েছে যারা বলে, আমরা আল্লাহ ও পরকালের প্রতি ঈমান এনেছি অথচ আদৌ তারা ঈমানদার নয়। তারা আল্লাহ এবং ঈমানদারগণকে ধোঁকা দেয়। অথচ এতে তারা নিজেদেরকে ছাড়া অন্য কাউকে ধোঁকা দেয় না অথচ তারা তা অনুভব করতে পারে না। তাদের অন্তঃকরণ ব্যধিগ্রস্ত আর আল্লাহ তাদের ব্যধি আরো বাড়িয়ে দিয়েছেন। বস্তুতঃ তাদের জন্য নির্ধারিত রয়েছে ভয়াবহ আযাব, তাদের মিথ্যাচারের দরুন। আর যখন তাদেরকে বলা হয় যে, দুনিয়ার বুকে দাঙ্গা-হাঙ্গামা সৃষ্টি করো না, তখন তারা বলে, আমরা তো মীমাংসার পথ অবলম্বন করেছি। মনে রেখো, তারাই হাঙ্গামা সৃষ্টিকারী, কিন্তু তারা তা উপলব্ধি করে না। (সূরা বাক্বারাঃ ৮-১২)
আল্লাহ তাদের প্রতারণা থেকে মুসলিম উম্মাহকে নিরাপদে রাখুক, আমীন!
ডঃ আব্দুল বাতেন মিয়াজী, সুইডেন।