গ্রন্থঃ সহীহ মুসলিম (ইফাঃ)
باب فَضَائِلِ أَهْلِ بَيْتِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم
حَدَّثَنَا أَبُو بَكْرِ بْنُ أَبِي شَيْبَةَ، وَمُحَمَّدُ بْنُ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ نُمَيْرٍ، – وَاللَّفْظُ لأَبِي بَكْرٍ – قَالاَ حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ بِشْرٍ، عَنْ زَكَرِيَّاءَ، عَنْ مُصْعَبِ بْنِ شَيْبَةَ، عَنْ صَفِيَّةَ بِنْتِ شَيْبَةَ، قَالَتْ قَالَتْ عَائِشَةُ خَرَجَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم غَدَاةً وَعَلَيْهِ مِرْطٌ مُرَحَّلٌ مِنْ شَعْرٍ أَسْوَدَ فَجَاءَ الْحَسَنُ بْنُ عَلِيٍّ فَأَدْخَلَهُ ثُمَّ جَاءَ الْحُسَيْنُ فَدَخَلَ مَعَهُ ثُمَّ جَاءَتْ فَاطِمَةُ فَأَدْخَلَهَا ثُمَّ جَاءَ عَلِيٌّ فَأَدْخَلَهُ ثُمَّ قَالَ ( إِنَّمَا يُرِيدُ اللَّهُ لِيُذْهِبَ عَنْكُمُ الرِّجْسَ أَهْلَ الْبَيْتِ وَيُطَهِّرَكُمْ تَطْهِيرًا)
৬০৪৩। আবূ বকর ইবনু আবূ শায়বা ও মুহাম্মাদ ইবনু আবদুল্লাহ ইবনু নূমায়র (রহঃ) … আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সকালে বের হলেন। তাঁর গায়ে ছিলো কাল পশম দ্বারা খচিত একটি পশমী চাঁদর। হাসান ইবনু আলী (রাঃ) এলেন, তিনি তাঁকে চাঁদরের ভেতর ঢুকিয়ে নিলেন। হুসায়ন ইবনু আলী (রাঃ) এলেন, তিনিও তার সঙ্গে (চাদরে) ঢুকে পড়লেন। ফাতিমা (রাঃ) এলেন, তাকেও ভেতরে ঢুকিয়ে ফেললেন। অতঃপর আলী (রাঃ) এলেন, তাঁকেও ভেতরে ঢুকিয়ে নিলেন। পরে বললেনঃ হে আহলে বাইত! আল্লাহ তাআলা তোমাদের থেকে অপবিত্রতাকে বিদুরিত করে তোমাদের অতিশয় পবিত্রময় করতে চান।
গ্রন্থঃ সূনান আত তিরমিজী
حَدَّثَنَا نَصْرُ بْنُ عَبْدِ الرَّحْمَنِ الْكُوفِيُّ، حَدَّثَنَا زَيْدُ بْنُ الْحَسَنِ، هُوَ الأَنْمَاطِيُّ عَنْ جَعْفَرِ بْنِ مُحَمَّدٍ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ جَابِرِ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ، قَالَ رَأَيْتُ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فِي حَجَّتِهِ يَوْمَ عَرَفَةَ وَهُوَ عَلَى نَاقَتِهِ الْقَصْوَاءِ يَخْطُبُ فَسَمِعْتُهُ يَقُولُ “ يَا أَيُّهَا النَّاسُ إِنِّي قَدْ تَرَكْتُ فِيكُمْ مَا إِنْ أَخَذْتُمْ بِهِ لَنْ تَضِلُّوا كِتَابَ اللَّهِ وَعِتْرَتِي أَهْلَ بَيْتِي ” . قَالَ وَفِي الْبَابِ عَنْ أَبِي ذَرٍّ وَأَبِي سَعِيدٍ وَزَيْدِ بْنِ أَرْقَمَ وَحُذَيْفَةَ بْنِ أَسِيدٍ . قَالَ وَهَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ غَرِيبٌ مِنْ هَذَا الْوَجْهِ . قَالَ وَزَيْدُ بْنُ الْحَسَنِ قَدْ رَوَى عَنْهُ سَعِيدُ بْنُ سُلَيْمَانَ وَغَيْرُ وَاحِدٍ مِنْ أَهْلِ الْعِلْمِ .
৩৭৮৬। জাবির ইবনু আবদিল্লাহ (রাযিঃ) হতে বর্ণিত আছে, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে আমি তার বিদায় হজ্জে আরাফার দিন তার কাসওয়া নামক উষ্ট্রীতে আরোহিত অবস্থায় বক্তৃতা দিতে দেখেছি এবং তাকে বলতে শুনেছিঃ হে লোক সকল! নিশ্চয় তোমাদের মধ্যে আমি এমন জিনিস রেখে গেলাম, তোমরা তা ধারণ বা অনুসরণ করলে কখনও পথভ্রষ্ট হবে নাঃ আল্লাহ তা’আলার কিতাব (আল-কুরআন) এবং আমার ইতরাত অর্থাৎ আমার আহলে বাইত।
গ্রন্থঃ সূনান আত তিরমিজী
حَدَّثَنَا قُتَيْبَةُ، حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ سُلَيْمَانَ بْنِ الأَصْبَهَانِيِّ، عَنْ يَحْيَى بْنِ عُبَيْدٍ، عَنْ عَطَاءِ بْنِ أَبِي رَبَاحٍ، عَنْ عُمَرَ بْنِ أَبِي سَلَمَةَ، رَبِيبِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ لَمَّا نَزَلَتْ هَذِهِ الآيَةُ عَلَى النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلمَّ : ( إنمَا يُرِيدُ اللَّهُ لِيُذْهِبَ عَنْكُمُ الرِّجْسَ أَهْلَ الْبَيْتِ وَيُطَهِّرَكُمْ تَطْهِيرًا ) فِي بَيْتِ أُمِّ سَلَمَةَ فَدَعَا فَاطِمَةَ وَحَسَنًا وَحُسَيْنًا فَجَلَّلَهُمْ بِكِسَاءٍ وَعَلِيٌّ خَلْفَ ظَهْرِهِ فَجَلَّلَهُمْ بِكِسَاءٍ ثُمَّ قَالَ ” اللَّهُمَّ هَؤُلاَءِ أَهْلُ بَيْتِي فَأَذْهِبْ عَنْهُمُ الرِّجْسَ وَطَهِّرْهُمْ تَطْهِيرًا ” . قَالَتْ أُمُّ سَلَمَةَ وَأَنَا مَعَهُمْ يَا نَبِيَّ اللَّهِ قَالَ ” أَنْتِ عَلَى مَكَانِكِ وَأَنْتِ عَلَى خَيْرٍ ” . قَالَ هَذَا حَدِيثٌ غَرِيبٌ مِنْ هَذَا الْوَجْهِ مِنْ حَدِيثِ عَطَاءٍ عَنْ عُمَرَ بْنِ أَبِي سَلَمَةَ .
৩২০৫। উমার ইবনু আবী সালামাহ্ (রাযিঃ) হতে বর্ণিত আছে, যিনি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর আশ্রয়ে লালিত পালিত হন। তিনি বলেন, উম্মু সালামাহ (রাযিঃ)-এর ঘরে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর উপর যখন এ আয়াত অবতীর্ণ হল (অনুবাদ) “আল্লাহ তা’আলা তো চান আহলে বাইত হতে অপবিত্রতা দূর করতে এবং তোমাদেরকে সম্পূর্ণরূপে পবিত্র করতে”– (সূরা আহযাবঃ ৩৩), তখন তিনি ফাতিমাহ, হাসান ও হুসাইন (রাযিঃ)-কে ডাকলেন এবং তাদেরকে একটি কম্বলের ভিতর ঢেকে নিলেন।
আলী (রাযিঃ) তার পিছনে ছিলেন। তিনি তাকেও কম্বলের ভিতর নিয়ে নিলেন। তারপর তিনি বললেনঃ “হে আল্লাহ! এরা আমার আহলে বাইত’ (পরিবারের সদস্য)। তুমি তাদের ভিতর হতে অপরিচ্ছন্নতা দূর করে দাও এবং সম্পূর্ণরূপে পরিচ্ছন্ন করে দাও।” উম্মু সালামাহ (রাযিঃ) বলেন, হে আল্লাহর নাবী! আমিও কি তাদের অন্তর্ভুক্ত? তিনি বললেনঃ তুমি স্ব-স্থানে থাক এবং তুমি কল্যাণের মধ্যেই আছ।
গ্রন্থঃ সূনান আত তিরমিজী
حَدَّثَنَا عَلِيُّ بْنُ الْمُنْذِرِ، – كُوفِيٌّ – حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ فُضَيْلٍ، قَالَ حَدَّثَنَا الأَعْمَشُ، عَنْ عَطِيَّةَ، عَنْ أَبِي سَعِيدٍ، وَالأَعْمَشُ، عَنْ حَبِيبِ بْنِ أَبِي ثَابِتٍ، عَنْ زَيْدِ بْنِ أَرْقَمَ، رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُمَا قَالاَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم “ إِنِّي تَارِكٌ فِيكُمْ مَا إِنْ تَمَسَّكْتُمْ بِهِ لَنْ تَضِلُّوا بَعْدِي أَحَدُهُمَا أَعْظَمُ مِنَ الآخَرِ كِتَابُ اللَّهِ حَبْلٌ مَمْدُودٌ مِنَ السَّمَاءِ إِلَى الأَرْضِ وَعِتْرَتِي أَهْلُ بَيْتِي وَلَنْ يَتَفَرَّقَا حَتَّى يَرِدَا عَلَىَّ الْحَوْضَ فَانْظُرُوا كَيْفَ تَخْلُفُونِي فِيهِمَا ” . قَالَ هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ غَرِيبٌ .
৩৭৮৮। যাইদ ইবনু আরকাম (রাযিঃ) হতে বর্ণিত আছে, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ তোমাদের মধ্যে আমি এমন জিনিস রেখে গেলাম যা তোমরা শক্তরূপে ধারণ (অনুসরণ) করলে আমার পরে কখনো পথভ্রষ্ট হবে না। তার একটি অন্যটির তুলনায় বেশি মর্যাদাপূর্ণ ও গুরুত্বপূর্ণঃ আল্লাহ তা’আলার কিতাব যা আকাশ হতে মাটি পর্যন্ত দীর্ঘ এক রশি এবং আমার পরিবার অর্থাৎ আমার আহলে বাইত। এ দুটি কখনও আলাদা হবে না কাওসার নামক ঝর্ণায় আমার সঙ্গে একত্রিত না হওয়া পর্যন্ত। অতএব তোমরা লক্ষ্য কর আমার পরে দু’জনের সঙ্গে তোমরা কিভাবে আচরণ কর।
গ্রন্থঃ সূনান আত তিরমিজী
حَدَّثَنَا قُتَيْبَةُ بْنُ سَعِيدٍ، حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ سُلَيْمَانَ الأَصْبَهَانِيُّ، عَنْ يَحْيَى بْنِ عُبَيْدٍ، عَنْ عَطَاءِ بْنِ أَبِي رَبَاحٍ، عَنْ عُمَرَ بْنِ أَبِي سَلَمَةَ، رَبِيبِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ نَزَلَتْ هَذِهِ الآيَةُ عَلَى النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلمَّ : ( إنمَا يُرِيدُ اللَّهُ لِيُذْهِبَ عَنْكُمُ الرِّجْسَ أَهْلَ الْبَيْتِ وَيُطَهِّرَكُمْ تَطْهِيرًا ) فِي بَيْتِ أُمِّ سَلَمَةَ فَدَعَا النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم فَاطِمَةَ وَحَسَنًا وَحُسَيْنًا فَجَلَّلَهُمْ بِكِسَاءٍ وَعَلِيٌّ خَلْفَ ظَهْرِهِ فَجَلَّلَهُ بِكِسَاءٍ ثُمَّ قَالَ ” اللَّهُمَّ هَؤُلاَءِ أَهْلُ بَيْتِي فَأَذْهِبْ عَنْهُمُ الرِّجْسَ وَطَهِّرْهُمْ تَطْهِيرًا ” . قَالَتْ أُمُّ سَلَمَةَ وَأَنَا مَعَهُمْ يَا نَبِيَّ اللَّهِ قَالَ ” أَنْتِ عَلَى مَكَانِكِ وَأَنْتِ إِلَى خَيْرٍ ” . قَالَ وَفِي الْبَابِ عَنْ أُمِّ سَلَمَةَ وَمَعْقِلِ بْنِ يَسَارٍ وَأَبِي الْحَمْرَاءِ وَأَنَسٍ . قَالَ وَهَذَا حَدِيثٌ غَرِيبٌ مِنْ هَذَا الْوَجْهِ .
৩৭৮৭। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর পোষ্য উমার ইবনু আবী সালামাহ (রাযিঃ) হতে বর্ণিত আছে, তিনি বলেন, উম্মু সালামাহ্ (রাযিঃ)-এর ঘরে এ আয়াত নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর উপর অবতীর্ণ হয় (অনুবাদ) “হে নাবীর পরিবার। আল্লাহ তা’আলা তো চান তোমাদের হতে অপবিত্রতা দূর করতে এবং তোমাদেরকে সম্পূর্ণভাবে পবিত্র করতে”– (সূরা আহযাব ৩৩)। সে সময় নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ফাতিমাহ, হাসান ও হুসাইন (রাযিঃ)-কে ডাকেন এবং তাদেরকে একখানা চাদরে আবূত করেন। তার পেছনে আলী (রাযিঃ) ছিলেন। তিনি তাকেও চাদরে ঢেকে নেন, তারপর বললেনঃ “হে আল্লাহ! এরা আমার আহলে বাইত। অতএব তুমি তাদের হতে অপবিত্রতা অপসারণ করে দাও এবং তাদেরকে উত্তমভাবে পবিত্র কর”। সে সময় উম্মু সালামাহ্ (রাযিঃ) বললেন, হে আল্লাহর রাসূল! আমিও তাদের অন্তর্ভুক্ত কি? তিনি বললেনঃ তুমি স্বস্থানে আছ এবং তুমি কল্যাণের মাঝেই আছ।
গ্রন্থঃ সূনান আত তিরমিজী
حَدَّثَنَا أَبُو دَاوُدَ، سُلَيْمَانُ بْنُ الأَشْعَثِ قَالَ أَخْبَرَنَا يَحْيَى بْنُ مَعِينٍ، قَالَ حَدَّثَنَا هِشَامُ بْنُ يُوسُفَ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ سُلَيْمَانَ النَّوْفَلِيِّ، عَنْ مُحَمَّدِ بْنِ عَلِيِّ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عَبَّاسٍ، عَنْ أَبِيهِ، عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم “ أَحِبُّوا اللَّهَ لِمَا يَغْذُوكُمْ مِنْ نِعَمِهِ وَأَحِبُّونِي بِحُبِّ اللَّهِ وَأَحِبُّوا أَهْلَ بَيْتِي لِحُبِّي ” . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ غَرِيبٌ إِنَّمَا نَعْرِفُهُ مِنْ هَذَا الْوَجْهِ .
৩৭৮৯। ইবনু আব্বাস (রাঃ) হতে বর্ণিত আছে, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ তোমরা আল্লাহ তা’আলাকে মহব্বত কর। কেননা তিনি তোমাদেরকে তার নিয়ামাতরাজি খাবার খাওয়াচ্ছেন। আর আল্লাহ্ তা’আলার মহব্বতে তোমরা আমাকেও মহব্বত এবং আমার মহব্বতে আমার আহলে বাইতকেও মহব্বত কর।
রাসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াআলিহী ওয়াসাল্লাম) বলেন : ‘আমি তোমাদের মাঝে দু’টি মূল্যবান জিনিস রেখে যাচ্ছি : আল্লাহর কিতাব এবং আমার বংশধর (ইতরাত), আমার আহলে বাইত; নিশ্চয়ই এ দু’টি কখনই বিচ্ছিন্ন হবে না যতক্ষণ না হাউসের নিকট (হাউসে কাউসারের নিকট) আমার কাছে উপস্থিত হয় (কিয়ামত দিবসে)।’
নাসায়ী, আহমাদ, খাসায়িস, পৃ. ১১২, হাদীস ৭৮; ইবনে মাগাযিলী, মানাকিব, পৃ. ২৩০, হাদীস ২৮৩; আবু ইয়ালী, মুসনাদ, ২য় খ-, পৃ. ২৯৭, হাদীস ১০২১; ইবনে আবি আসিম, কিতাবুস সুন্নাহ, পৃ. ৬৩০, হাদীস ১৫৫৫; ইবনে হাম্বাল, মুসনাদ, ১৭তম খ-, পৃ. ২১১, হাদীস ১১১৩১; তাবারানী, সুলাইমান, ৫ম খ-, পৃ. ১৬৯, হাদীস ৯৮০ ও ৪৯৮১।
হযরত ইবনে আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত, হযরত রাসুল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াআলিহী ওয়াসাল্লাম) বলেছেন, তোমরা আল্লাহ্কে ভালোবাস কেননা মহান আল্লাহ তাঁর নেয়ামত হতে তোমাদিগকে রিজিক প্রদান করেছেন। আল্লাহ্র ভালোবাসা পেতে হলে আমাকে ভালোবাস ( রাসুলকে) আর আমার ভালোবাসা পেতে হলে আমার আহলে বাইতকে ( আনুগাত্যপুর্ন ) ভালোবাস।
সুত্রঃ সহীহ তিরমিজি, খঃ-৬, হাদিস-৩৭২৮ ইসঃ সেন্টার, সহীহ তিরমিজি (সকল খণ্ড একত্রে) পৃঃ-১০৮৫, হাদিস-৩৭৫১ তাজ কোং, মেশকাত শরীফ, খঃ-১১, পৃঃ-১৮৮, হাদিস-৫৯২২ এমদাদিয়া লাইব্রেরি।
হযরত আলী (আঃ) বর্ণনা করেন, হযরত রাসুল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াআলিহী ওয়াসাল্লাম) হাসান – হোসাইন এর হাত ধরে বললেন, যে ব্যাক্তি আমাকে এবং এই দু’জনকে ( হাসান ও হোসাইন ) কে ভালবাসবে সাথে সাথে তাঁদের পিতা- মাতাকে ( হযরত আলী ও হযরত ফাতেমা ) কে ভালবাসবে সে কিয়ামতে দিবসে আমার সাথেই থাকবে।
সুত্রঃ জামে আত তিরমিজি, আহমদ ইবনে হাম্বাল, আল মুসনাদ, তাবরানি আল মু’জামুল কবির, খতিবে বাগদাদ, তারিখে বাগদাদ, আবু ইয়ালা- আল মুসনাদ, ইত্যাদি।
হাদিসে সাকালাইন: মুসলমানরদের প্রতি বিশ্বনবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াআলিহী ওয়াসাল্লাম)’র অতি জরুরি বাণী
এক. মুসলিম স্বীয় সহীহ গ্রন্থে যায়েদ ইবনে আরকাম হতে বর্ণনা করেন যে, আল্লাহর রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াআলিহী ওয়াসাল্লাম) একদিন মদিনা ও মক্কার মধ্যবর্তী স্থলে “খুম নামক একটি জলাশয়ের কাছে খোতবা দান করেন। উক্ত খোতবায় তিনি আল্লাহর প্রশংসার পর লোকদেরকে নসিহত করে বলেন:
ألا أيّها الناس، فانّما أنا بشرٌ يوشک أن يأتی رسول ربّی فأجيب، و أنا تارکت فيکم ثقلين: أولهما کتاب الله فيه الهدی و النور، فخذوا بکتاب الله و استمسکوا به -فحث علی کتاب الله و رغّب فيه ثم قال: – و أهل بيتی، أذکرکم الله في أهل بيتی، أذکرکم الله فی اهل بيتی، أذکرکم الله فی اهل بيتی
হে লোকসকল! আমি একজন মানুষ। খুব শিগগিরি আমার প্রভুর নিযুক্ত ব্যক্তি (তথা মৃত্যুর ফেরেশতা) আমার কাছে আসবে এবং আমিও তাঁর আহ্বানে সাড়া দেব। আমি তোমাদের মাঝে দু’টি অতি মূল্যবান জিনিস রেখে যাচ্ছি; যার একটি হল আল্লাহর কিতাব; যাতে রয়েছে নূর এবং হেদায়েত। আল্লাহর কিতাবকে শক্তভাবে আঁকড়ে ধর। রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াআলিহী ওয়াসাল্লাম) আল্লাহর কিতাবের উপর আমল করার বিষয়ে বিশেষ গুরুত্ব দিয়ে অত:পর বলেন: আর অপরটি হলো আমার আহলে বাইত। আমার আহলে বাইতের বিষয়ে তোমাদেরকে মহান আল্লাহর কথা স্মরণ করিয়ে দিচ্ছি (অর্থাৎ মহান আল্লাহকে ভয় করে তাদেরকে অনুসরণ কর) এই বাক্যটিকে তিনি তিনবার উচ্চারণ করেন। সূত্র: সহীহ মুসলিম, ৪র্থ খণ্ড, পৃ.১৮০৩। দারেমি এই টেক্সট বা মাতন তথা হাদিসের মূলপাঠটি নিজ ‘সুনান’-শীর্ষক বইয়ে বর্ণনা করেছেন। সূত্র:সুনানে দারেমী, ২য় খণ্ড, পৃ. ৪৩১-৪৩২।
দুই. তিরমিযি এই হাদিসটিতে ((وعترتی أهل بيتی)) শব্দগুলো বর্ণনা করেছেন। মূল হাদিসটি হলো:
إنی تارکت فيکم الثقلين ما ان تمسکتم به لن تضلّوا بعدی؛ أحدهما أعظم من الآخر: کتاب الله حبل ممدود من السماء إلی الأرض و عترتی اهل بيتی، لن يفترقا حتی يردا عليَّ الحوض، فانظروا کيف تخلفونی فيها.
“নিশ্চয়ই আমি তোমাদের মাঝে দু’টি ভারী (মূল্যবান) জিনিস (আমানত হিসেবে) রেখে যাচ্ছি। যদি তা শক্তভাবে আঁকড়ে ধর তবে কখনই পথভ্রষ্ট হবে না। সেগুলো একটি অপরটির উপর প্রধান্য রাখে। ( সেগুলো হচ্ছে) আল্লাহর কিতাব যা আসমান হতে জমিন পর্যন্ত প্রসারিত (রহমতের) ঝুলন্ত রশির ন্যায় এবং অপরটি হলো আমার বংশধর; আমার আহলে বাইত। এরা হাউযে কাওসারে আমার সঙ্গে মিলিত না হওয়া পর্যন্ত কখনও একে অপর হতে আলাদা হবে না। অতএব, তোমরা লক্ষ্য রেখ যে, আমার (ছেড়ে যাওয়া) আমানতের সঙ্গে কিরূপ আচরণ করো। (সূত্র: সুনানে তিরমিযি, ৫ম খণ্ড, পৃ. ৬৬৩।)
قالَ رَسُولُ اللهِ: إنِّي تَارِكٌ فِيكُمُ الثَّقَلَيْنِ: كِتَابَ اللهِ وَعِتْرَتِي أهْلَ بَيْتِي، مَا إنْ تَمَسَّكْتُمْ بِهِمَا لَنْ تَضِلُّوا بَعْدِي أبَداً، وَإنَّهُمَا لَنْ يَفْتَرِقَا حَتَّى يَرِدَا عَلَيَّ الْحَوْضَ
মহানবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াআলিহী ওয়াসাল্লাম) বলছেন : আমি দু’টি
ভারী ও মূল্যবান বস্তু তোমাদরে মাঝে রখেে যাচ্ছি। আল্লাহর কিতাব (কোরআন) ও আমার
বংশধর আহলে বাইত (রক্ত সর্ম্পকীয় অতি নিকট আত্মীয়)। তোমরা যদি এ দু’টিকে
আঁকড়ে ধর তবে কখনই বিপথগামী হবে না। এ দু’ইটি আমার সঙ্গে (কিয়ামত) হাউসে
কাউসারে মিলিত না হওয়া র্পযন্ত পরস্পর হতে বচ্ছিন্নি হবে না।
(এ হাদসিটি ইসলামী বিভিন্ন সূত্রে কিছুটা বর্ণনার পার্থক্যসহ মুতাওয়াতির সূত্রে
বর্ণিত হয়ছে। যেমন সহীহ মুসলিম,৭ম খণ্ড,পৃ. ১২২;সুনানে দারেমী,২য় খণ্ড,পৃ.
৪৩২;মুসনাদে আহমাদ,৩য় খণ্ড,পৃ. ১৪,১৭,২৬,৫৯; ৪র্থ খণ্ড,পৃ. ৩৬৬,৩৭১;৫ম খণ্ড,পৃ:
১৮২,১৮৯;মুসতাদরাকে হাকেম,৩য় খণ্ড,পৃ. ১০৯,১৪৮,৫৩৩ দ্রষ্টব্য)
নবী করিম (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াআলিহী ওয়াসাল্লাম) এর প্রখ্যাত সাহাবী হযরত আবুজার আল গিফারী (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি রাসুল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াআলিহী ওয়াসাল্লাম) কে বলতে শুনেছি, আমার আহলে বাইত-এর সদস্যগণ [ আলী, ফাতেমা, হাসান ও হোসাইন আঃ ] আমার উম্মতের জন্য তেমনি নাজাতের তরী, যেমনি আল্লাহ্র নবী নুহ (আঃ)-এর তরী মহাপ্রলয়ের সময় তার জাতির জন্য আশ্রয় ও নাজাতের তরী ছিলো। অর্থাৎ যারাই হযরত নুহ (আঃ)-এর তরীতে উঠেছিল তারাই মহাপ্রলয় থেকে নাজাত পেয়েছিল ( হযরত নুহ (আঃ) এর ছেলে তরীতে উঠেনি আল্লাহ তাকেও ক্ষমা করেন নি ) তেমনি এই উম্মতের যারা আমার আহলে বাইত কে অনুসরন করবে তারাই নাজাত পাবে এবং যারা অনুসরন করবে না তারা সুস্পষ্ট পথভ্রষ্ট ( জাহান্নামী ) হবে।
সুত্রঃ মেশকাত শরিফ, কাশফুল মাহজুব, মাসিক মদিনা, পীরের মর্যাদা ও ভুমিকা, জ্ঞানধারা, আস সাওয়ায়েকে মুহরেকা, তাফসীরে কাবির, মুসনাদে হাম্বাল, কানযুল উম্মাল, মুস্তাদারাকে হাকেম, তারিখে খোলফা, ইয়ানাবিউল মুয়াদ্দাত, মুয়াদ্দাতুল কুরবা, নুরুল আবসার, আল তাবরানি, আরজাহুল মাতালেব, ইত্যাদি।
আল্লামা সানাউল্লাহ
পানিপথি তার তাফসীরে লিখেছেন যে, নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াআলিহী ওয়াসাল্লাম)
আহলে বায়েত এর কথা এজন্য তাগিদ দিয়েছেন যে, হেদায়েত এবং বেলায়েতের ব্যাপারে
আহলে বায়েতই পথ প্রদর্শক
সুত্রঃ তাফসীরে মাযহারী, খঃ-২, পৃঃ-৩৯৩ ( ইসঃ ফাঃ বাঃ), তাফসীরে নুরুল কোরআন,
খঃ-৪, পৃঃ-৩৩, মাওলানা আমিনুল ইসলাম।
নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়াআলিহী ওয়াসাল্লাম) এরশাদ করেছেন, এই উম্মতের যারা আমার আহলে বায়েতকে ভালোবাসবে
( অনুসরণ করবে ) তারাই নাজাত পাবে ও যারা অনুসরণ করবে না, তারা ধ্বংস হবে
সুত্রঃ মেশকাত, খঃ-১১, হাদিস-৫৯২৩।
নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াআলিহী ওয়াসাল্লাম) বলেছেন, আহলে বায়েতের পরিচিতি লাভ দোজখ মুক্তির উসিলা। আর আহলে বায়েত কে ভালোবাসা অর্থ পুলসিরাত পাড়ি দেওয়া। আর তাঁদের কে বিশ্বাস করা আল্লহর আযাব থেকে নিরাপত্তা সদৃশ। সুত্রঃ মাদারেজুন নবুওয়াত, খন্ড-৩, পৃঃ-১১৫।
নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াআলিহী ওয়াসাল্লাম) বলেছেন, যে ব্যাক্তি আমার আহলে বায়েতকে শত্রু মনে করবে
বা তাদের প্রতি হিংসা করবে যে কেয়ামতের দিন ইয়াহুদী রূপে আসবে
সুত্রঃ এহইয়াউল মাইয়াত, আল্লামা জালাল উদ্দীন সুয়তী, পৃঃ-৭।
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াআলিহী ওয়াসাল্লাম) বলেছেনঃ
مَكْتُوبٌ عَلَي بَابِ الْجَنَّةِ: لَا إِلَهَ إِلَّا اللهُ، مُحَمَّدٌ رَسُولُ اللهِ، عَلِيٌّ أَخُو النَّبِي، قَبْلَ أَنْ يُخْلَقَ الْخَلْقُ بِأَلْفَيْ سَنَة.
বেহেশতের দরওয়াযার ওপরে লেখা রয়েছে: আল্লাহ ছাড়া কোনো উপাস্য নেই, মুহাম্মদ আল্লাহর রাসূল আর মানুষ সৃষ্টি হওয়ার দুই হাজার বছর আগে থেকে আলী নবীর ভাই। (মাজমাউয যাওয়ায়েদ ৯:১১১, মুখতাসারু তারীখে দামেস্ক – ইবনে মাঞ্জুর ১৭:৩১৫, ফাযায়েলুস সাহাবা ২: ৬৬৮/১১৪০)
مَنْ أَحَبَّ أََنْ يَسْتَمْسِكَ بِالْقَضِيبِ الاَحْمَرِ الَّذِي غَرَسَهُ اللهُ عَزَّ وَجَلَّ فِي جَنَّةِ عَدْنٍ بِيَمِينِهِ، فَلْيَتَمَسَّكْ بِحُبِّ عَلِيِّ بْنِ أََبِي طَالِبٍ.
আল্লাহ রাববুল আলামীন চিরন্তন বেহেশতে যে লাল শাখাটি রোপণ করেছেন যে ব্যক্তি সেটি ধরতে পছন্দ করে সে যেন আলী ইবনে আবি তালিবের বেলায়েতকে গ্রহণ করে। (আর রিয়াদুন নাদরাহ ৩:১৯০, ফাযায়েলুস সাহাবা ২:৬৬৪/১১৩২, নাহজুল বালাগা -ইবনে আবিল হাদীদ ৯০/১৬৮)
مَنْ أَرَادَ أَنْ يَنْظُرَ إِلَي آدَمَ فِي عِلْمِهِ، وَ إِلَي نُوحٍ فِي فَهْمِهِ وَ إِلَي إِبْرَاهِيمَ فِي حِلْمِهِ وَ إِلَي يَحْيَي بْنِ زَكَرِيَّا فِي زُهْدِهِ وَ إِلَي مُوسَي بْنِ عِمْرَانَ فِي بَطْشِهِ فَلْيَنْظُرْ إِلَي عَلِيِّ بْنِ أََبِي طَالِبٍ.
যে ব্যক্তি আদমকে তাঁর জ্ঞানে, নুহকে তাঁর ধীশক্তিতে, ইবরাহীমকে তাঁর দূরদর্শিতায়, ইয়াহিয়াকে তাঁর সংযমশীলতায় আর মূসা ইবনে ইমরানকে তাঁর সাহসিকতায় দেখতে চায় সে যেন আলী ইবনে আবি তালিবের প্রতি লক্ষ্য করে। (ইমাম আলী ইবনে আবি তালিব-ইবনে আসাকির ২:২৮০/৮১১, আল বিদায়া ওয়ান নিহায়া ৭:৩৬৯)
يَا عَلِيُّ، إِنَّ اللهَ أَمَرَنِي أَنْ اُدْنِيكَ وَ أُعَلِّمُكَ ِلتَعِيَ، وَ أََنْزَلَتْ هَذِهِ الْآيَهُ: «وَ تَعِيَهَا اُذُنٌ وَاِعيَةٌ» فَأََنْتَ اُذُنٌ وَاعِيَةٌ لِعِلْمِي.
হে আলী! আল্লাহ আমাকে বলেছেন, তোমাকে আমার কাছে এনে আমার ইলমকে তোমাকে শিক্ষা দিতে যাতে তুমি সেগুলো পুরোপুরি শিখে নাও। এ মর্মে এই আয়াত নাযিল হয়েছে ‘‘এবং সত্যগ্রাহী কান এটাকে ধারণ করে’’* কাজেই তুমি আমার জ্ঞানের সত্যগ্রাহী কান! * সূরা আল হাক্কাহ্ : ১২ (হিল্লিয়াতুল আউলিয়া ১:৬৭, আদ দুররুল মানসূর ৮:২৬৭)
يَا عَلِيُّ، سَتُقَاتِلُكَ الْفِئَةُ الْبَاغِيَةُ وَ أََنْتَ عَلَي الْحَقِّ فَمَنْ لَمْ يَنُصُرْكَ يَوْمَئِذٍ فَلَيْسَ مِنِّي.
হে আলী! শীঘ্রই অবাধ্যদল তোমার সাথে যুদ্ধে লিপ্ত হবে। অথচ তুমি সত্যের ওপরে অবস্থান করবে। সুতরাং সেদিন যে ব্যক্তি তোমাকে সাহায্য করতে এগিয়ে আসবে না সে মুসলমান নয়। (কানযুল উম্মাল ১১:৬১৩/৩২৯৭১)
يَا عَلِيُّ، أَنْتَ سَيِّدٌ فِي الدُُّنْيَا وَ سَيِّدٌ فِي الْآخِرَةِ، حَبِيبُكَ حَبِيبِي وَ حَبِيبِي حَبِيبُ اللهِ، وَ عَدُوُّكَ عَدُوِّي وَ عَدُوِّي عَدُوُّ اللهِ وَ الْوَيْلُ لِمَنْ أَبْغَضَكَ بَعْدِي.
হে আলী! তুমি দুনিয়া ও আখেরাতের সরদার। তোমার বন্ধু আমারও বন্ধু, আর আমার বন্ধু আল্লাহরও বন্ধু। তোমার শত্রু আমারও শত্রু, আর আমার শত্রু আল্লাহরও শত্রু। অভিসম্পাত তার ওপর যে আমার পরে তোমার সাথে শত্রুতা করবে। (আল মুস্তাদরাক-হাকেম ৩:১২৮, আর রিয়াদুন নাদ্রাহ ৩:১২৪, আল ফেরদৌস ৫:৩২৪/৮৩২৫)
يَا عَمَّارُ، إِنْ رَأَيْتَ عَلِيّاً قَدْ سَلَكَ وَادِياً وَ سَلَكَ النَّاسُ وَادِياً غَيْرَهُ، فَاسْلُكْ مَعَ عَلِيٍّ و دَعِ النَّاسَ، إِنَّهُ لَنْ يَدُلَّكَ عَلَي رَدَيً، وَ لَنْ يُخْرِجَكَ مِنَ الْهُدَي.
হে আম্মার! যদি দেখতে পাও যে আলী একপথে চলেছে আর লোকেরা অন্যপথে, তাহলে তুমি আলীর সাথে চলবে এবং লোকদেরকে ত্যাগ করবে। কারণ, আলী কখনো তোমাকে বক্রপথে পরিচালিত করবে না এবং তোমাকে হেদায়েতের পথ থেকে বাইরে নিয়ে যাবে না। (কানযুল উম্মাল ১১:৬১৩/৩২৯৭২, তারীখে বাগদাদ ১৩:১৮৭)
لَأَعْطِيَنَّ الرَّايَةُ غَداً رَجُلاً يُحِبُّ اللهَ وَ رَسُولَهُ، وَ يُحِبُّهُ اللهُ وَ رَسُولُهُ، كَرَّارٌ غَيْرُ فَرَّارٍ، فَلَمَّا أَصْبَحَ النَّاسُ، قَالَ : أَيْنَ عَلِيٌّ؟ فَدَفَعَ الرَّايَةَ إِِلَيْهِ، فَفَتَحَ اللهُ عَلَيهِ.
আগামীকাল পতাকাকে এমন কারো হাতে তুলে দেব যাকে আল্লাহ এবং তাঁর রাসূল ভালোবাসেন, আর সেও আল্লাহ ও তাঁর রাসূলকে ভালোবাসে। সে অবিচল দৃঢ়পদ, কখনো পলায়ন করে না।
যখন সকাল হলো, বললেন, ‘‘আলী কোথায়?’’ অতঃপর পতাকাকে তাঁর হাতে অর্পণ করলেন এবং আল্লাহ তাঁকে বিজয় দান করলেন।
(খাসায়েসে নাসায়ী: ৬, সহীহ বুখারী ৫:৮৭/১৯৭-২৭৯/২৩১, সহীহ মুসলিম ৪:১৮৭১/৩২-৩৪, সুনানে তিরমিযী ৫:৬৩৮/৩৭২৪, মুসনাদে আহমাদ ১:১৮৫ ও ৫: ৩৮৫)
أُوصِي مَنْ آمَنَ بِي وَ صَدَّقَنِي بِوِلَايَةِ عَلِيِّ بْنِ أبِي طَالِبٍ ، فَمَنْ تَوَلَّاهُ فَقَدْ تَوَلَّانِي، وَ مَنْ تَوَلَّانِي فَقَدْ تَوَلَّي اللهَ، وَ مَنْ أَحَبَّهُ فَقَدْ أَحَبَّنِي، وَ مَنْ أَحَبَّنِي فَقَدْ أَحَبَّ اللهَ، وَ مَنْ أبْغَضَهُ فَقَدْ أَبْغَضَنِي، وَ مَنْ أَبْغَضَنِي فَقَدْ أَبْغَضَ اللهَ عَزَّوَجَلَّ.
আমার প্রতি যে ঈমান আনে ও বিশ্বাস স্থাপন করে তার প্রতি আমার উপদেশ হলো তার নিজের জন্য যেন আলী ইবনে আবি তালিবের
অভিভাবকত্বকে মেনে নেয়। কারণ, যে ব্যক্তি নিজেকে আলীর বেলায়েতের অধীনে নিয়োজিত করে আমি তার অভিভাবক হই, আর আমি যার অভিভাবক হই আল্লাহ তাকে স্বীয় বেলায়েতের অধীনে গ্রহণ করেন। আর যে ব্যক্তি আলীকে ভালোবাসবে সে আমাকেও ভালোবাসবে, আর যে আমাকে ভালোবাসবে আল্লাহ তাকে ভালোবাসবে। আর যে ব্যক্তি আলীকে ঘৃণা করবে সে আমাকেও ঘৃণা করবে। আর যে আমাকে ঘৃণা করবে আল্লাহ তাকে ঘৃণা করবেন।
(আলমানাকিব-ইবনে মাগাযেলী : ২৩০/২৭৭, মাজমাউয যাওয়ায়েদ ৯:১০৮, কানযুল উম্মাল ১১:৬১০/৩২৯৫৩)
*হযরত আবু সাইদ খুদরী (রা:) হতে বর্ণিত: *রাসূলে পাক সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়া আলেহী ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেন- মান আবগাদানা আহলিল বাইতি ফা হুয়া মৃনাফিকুন।
অর্থাৎ- যারা আহলে বাইতের সাথে বিদ্বেষ রাখে তারা তো কপট, মুনাফিক।
তথ্য সুত্র: ( ফাযায়িলুস সাহাবা : ইমাম আহমদ ইবনে হাম্বল, ২য় খন্ড:৬৬১, হাদিস-১১২৬; মুহিব্বে তাবারী : যখায়েরুল উকবা , পৃষ্টা-৫১; তাফসীরে আদ-দুররুল মুনসুর : আল্লামা সুয়ুতী, ৭ম:৩৪৯; শেত্ব মুক্তা নবী তনয়া ফাতেমাতুয যোহরা : শায়েখুল ইসলাম ড: তাহের আল কাদেরী, পাকিস্তান, পৃষ্টা-৪৪)
কুতায়বা (র) … উমর ইবন আবী সালামা (রা) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন , উম্মু সালামা (রা)- এর ঘরে অবস্হান কালে নবী (সা)-এর কাছে এই আয়াতটি নাযিল হয়ঃ (ইন্নামা ইউরিদুল্লাহু লিইউজহিবা আনকুমুর রিজছা আহলাল বায়তি ওয়া ইউ তাহহিরাকুম তাতহিরা। )
তখন তিনি ফাতিমা এবং হাসান ও হুসায়ন (রা)-কে ডেকে আনলেন এবং একটি চাদরে তাদের আবৃত করলেন। আলী (রা) ছিলেন তাঁর পিঠের পিছনে তাঁকে চাদরটি দিয়ে তিনি ঢেকে ফেললেন। এরপর বললেনঃ হে আল্লাহ ! এরা আমার আহলে বায়ত , পরিবার-পরিজন। তাদের থেকে আপনি অপবিত্রতা বিদূরিত করে দিন এবং তাদের পরিপূর্ণভাবে পবিত্র করে দিন। উম্মু সালামা (রা) বললেনঃ হে আল্লাহর নবী ! আমিও এঁদের সংগে আছি ? তিনি বললেনঃ তুমি তো তোমার স্হানে আছই। তুমি তো কল্যাণের মাঝেই রয়েছো। তথ্য সুত্র: তিরমিজি, ৫ম খঃ ইফাঃ হা-৩২০৫ I
আলী (আ প্রথম মুসলিম। সর্ব প্রথম তিনি সালাত আদায় করেন। (তিরমিযি, ইফাবা, ৬ :৩৭৩৪, ৩৭২৮)
আলী (আ.) এক যুদ্ধে ছিলেন। তাই রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াআলিহী ওয়াসাল্লাম) দুই হাত তুলে দোয়া করেছিলেন, হে আল্লাহ ! আলীকে পুনর্বার না দেখিয়ে আমার মৃত্যু দিও না। (তিরমিযি, ইফাবা, ৬ : ৩৭৩৭)
রাসুল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াআলিহী ওয়াসাল্লাম) বলেছেন, হে আলী ! আমার ক্ষেত্রে তোমার স্থান হল মূসার ক্ষেত্রে হারুনের মত। তবে আমার পরে কেউ নবী নেই। (তিরমিযি, ইফাবা, ৬ :৩৭৩০, ৩৭৩১; মুসলিম, ইফাবা, ৫ : ৫৯৯৯, ৬০০৩; বোখারী, মিনা. ৫ : ৩৪৩৪)
তাঈফ যুদ্ধের দিন রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াআলিহী ওয়াসাল্লাম) আলী (আ.)- এর সাথে গোপনে কথা বললে লোকেরা বলাবলি করতে লাগল যে, নবিজী তাঁর চাচাত ভাইয়ের সাথে দীর্ঘক্ষণ গোপনে কথাবার্তা বলছেন, রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াআলিহী ওয়াসাল্লাম) বললেন আমি তাঁর সাথে গোপনে কথা বলিনি, বস্তুতঃ আল্লাহ তা’আলাই তার সঙ্গে কথা বলেছেন। (তিরমিযি, ইফাবা, ৬ : ৩৭২৬)
রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াআলিহী ওয়াসাল্লাম) হলেন প্রজ্ঞার ঘর আর আলী হল এর দ্বার (তিরমিযি, ইফাবা, ৬ঃ৩৭২৩)
রাসুল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াআলিহী ওয়াসাল্লাম) বলেছেন, আল্লাহর সবচেয়ে “প্রিয় বান্দা আলী। (তিরমিযি, ইফাবা, ৬ : ৩৭২১)
রাসুল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াআলিহী ওয়াসাল্লাম) বলেছেন, আলী “আমার আমি “আলীর। আমার পক্ষ থেকে আমি আর আলী ছাড়া আর কেউ আমার “দায়িত্ব পালন করতে পারে না(তিরমিযি, ইফাবা, ৬ : ৩৭১৯)
রাসুল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াআলিহী ওয়াসাল্লাম) বলেছেন, হে আলী ! তুমি আমার এবং আমি তোমার জন্য। (তিরমিযি, ইফাবা, ৬ : ৩৭১৬)
রাসুল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াআলিহী ওয়াসাল্লাম) বলেছেন, হে আল্লাহ ! আলী যে দিকে ঘুরবে হক ও সত্যকেও তুমি সে দিকে ঘুরিয়ে দিও। (তিরমিযি, ইফাবা, ৬ : ৩৭১৪)
রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াআলিহী ওয়াসাল্লাম) এর কাছে নারীদের মধ্যে সবচেয়ে প্রিয় “ফাতেমা (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াআলিহী ওয়াসাল্লাম আ.) এবং পুরুষদের মধ্যে আলী (আ.)। (তিরমিযি, ইফাবা, ৬ : ৩৮৭৪)
রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াআলিহী ওয়াসাল্লাম) বলেন- ‘যে, ফাতেমা আমার দেহেরই “অংশ । যে তাকে অসুন্তুষ্ট করল, সে নিশ্চয়ই আমাকে “অসুন্তুষ্ট করল। (সূত্র : বোখারী, মিনা. ৫ : ৩৪৮৭, মুসলিম, সোলেমানিয়া, ৪০তম অধ্যায়, ৬০৮৯)
সূরা মায়দাহ ৫৫নং আয়াত, যেখানে আল্লাহ্ রাব্বুল আলামিন মসজিদে নববিতে সংগঠিত একটি ঘটনার প্রশংসায় নাযিল করেছিলেন।
‘তোমাদের ওয়ালি তো হচ্ছেন আল্লাহ্ এবং তাঁর রাসুল এবং সেই সকল মুমিনগণ যারা সালাত কায়েম করে এবং রুকু অবস্থায় যাকাত দেয়।’
আয়াতটি নাযিলের প্রেক্ষাপট হিসেবে তাফসিরকারক ও ঐতিহাসিকগণ চমৎকার একটি ঘটনার বর্ণনা করেছেন। একবার আল্লাহ’র রাসুল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াআলিহী ওয়াসাল্লাম) সাহাবীদের সাথে মসজিদে নববিতে বসে ছিলেন, যখন আলী সালাত আদায় করছিলেন। এমন সময় এক ভিক্ষুক এসে মসজিদে নববিতে সকলের কাছে ভিক্ষা প্রার্থনা করে নিরাশ হয়েছে এবং আল্লাহ্ দরবারে অভিযোগ করছিল যে, ‘ইয়া আল্লাহ্! তুমি সাক্ষি থেকো, তোমার নবীর মসজিদ থেকে আমি খালি হাতে ফিরে গেলাম।’ তখন আবুল হাসান (আলী) রুকু অবস্থায় ছিলেন এবং ভিক্ষুকের দিকে তাঁর হাত বাড়িয়ে দেন এবং ভিক্ষুক তাঁর হাত থেকে রাসুল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াআলিহী ওয়াসাল্লাম)’র উপহার দেয়া সুলেমানি আংটি খুলে নিয়ে যায়। এই ঘটনা প্রত্যক্ষ করে রাসুল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াআলিহী ওয়াসাল্লাম) আল্লাহ’র দরবারে হাত তুলে দোয়া করেন, ‘হে আল্লাহ্! তুমি হারুনকে যেমন মুসার স্থলাভিষিক্ত করেছিলে, তেমনই আলি’কে আমার স্থলাভিষিক্ত করে দাও।’ তখন জিবরাঈল (আ.) সূরা মায়েদার ৫৫ আয়াত নিয়ে হাজির হন।
তাফিসির-এ-মারেফুল কোরআন, সূরা মায়েদাহ আয়াত ৫৫।
আনাস ইবনে মালেক বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াআলিহী ওয়াসাল্লাম)-এর জন্য মুরগীর গোশত দ্বারা খাবার প্রস্ত্তত করা হয়েছিল। হুজুর (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াআলিহী ওয়াসাল্লাম) বললেনঃ
اَللَّهُمَّ ائْتِنِي بِاَحَبِّ خَلْقِكَ إِلَيْكَ يَأْكُلُ مَعِي هَذَا الطَّيْرَ، فَجَاءَ عَلِيٌّ فَأَكَلَ مَعَهُ.
হে আল্লাহ! তোমার সবচেয়ে প্রিয় বান্দাকে পৌঁছে দাও যে আমার সাথে এই মুরগীর গোশত ভক্ষণে অংশ নেবে। এমন সময় আলী এসে পৌঁছলেন এবং হুজুরের দস্তরখানায় বসে পড়লেন। (সুনানে তিরমিযী ৫:৬৩৬/৩৭২১, ফাযায়িলুস সাহাবা ২:৫৬০/৯৪৫, খাসায়েসে নাসায়ী : ৫, আল মুস্তাদরাক – হাকেম ৩:১৩০-১৩২)
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াআলিহী ওয়াসাল্লাম) বলেছেনঃ
مَنْ أَحَبَّأَنْ يَحْيَاحَيَاتِيوَيَمُوتَ مَوْتِيفَلْيَتَولَّ عَلِيَّ بْنَ أَبِي طَالِبٍ.
যে ব্যক্তি আমার মতো জীবন যাপন করতে এবং আমার মতো মৃত্যুবরণ করতে পছন্দ করে সে যেন আলী ইবনে আবি তালিবের বেলায়েতকে মেনে চলে। (আল মুস্তাদরাক-হাকেম ৩:১২৮, কানযুল উম্মাল ১১:৬১১/৩২৯৫৯)
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াআলিহী ওয়াসাল্লাম) বলেছেনঃ
عَلِيٌّ أَمِيرُ الْبَرَرَةِ، وَ قَاتِلُ الْفَجَرةِ، مَنْصُورٌ مَنْ نَصَرَهُ، مَخْذُولٌ مَنْ خَذَلَهُ.
আলী সতকর্মশীলদের নেতা আর ব্যভিচারীদের হন্তা। যে কেউ তাকে সাহায্য করে সে সাহায্য প্রাপ্ত হয় আর যে ব্যক্তি তাকে ত্যাগ করে সে বিফল হয়। (আল মুস্তাদরাক-হাকেম ৩:১২৯, কানযুল উম্মাল ১১:৬০২/৩২৯০৯, আস-সাওয়ায়েকুল মুহরিকা :১২৫, আল ইমাম আলী (আঃ)-ইবনে আসাকির ২:৪৭৬/১০০৩ ও ৪৭৮/১০০৫)
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াআলিহী ওয়াসাল্লাম) বলেছেনঃ
أََوَّلُكُمْ وُرُوداً فِي الْحَوْضِ أََوَّلُكُمْ إِِسْلَاماً عَلِيُّ بْنُ أَبِي طَالِبٍ.
তোমাদের মধ্যে সবার আগে হাউজে কাওসারে প্রবেশ করবে সেই ব্যক্তি যে সবার আগে ইসলাম গ্রহণ করেছে। আর সে হলো আলী ইবনে আবি তালিব। (আল মুস্তাদরাক-হাকেম ৩:১৩৬, আল ইস্তিয়াব ৩:২৭,২৮, উসুদুল গাবাহ ৪:১৮, তারীখে বাগদাদ ২:৮১)
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াআলিহী ওয়াসাল্লাম) বলেছেনঃ
إِنَّ اللهَ أَمَرَنِي بِحُبِّ أَرْبِعَةٍ، وَ أَخْبَرَنِي أَنَّهُ يُحِبُّهُمْ. قِيلَ، يَا رَسُولَ اللهِ، سَمِّهِمْ لَنَا. قَالَ: عَلِيٌّ مِنْهُمْ، يَقُولُ ذَلِكَ ثَلَاثاً.
এমন চার ব্যক্তি যারা আল্লাহর কাছে প্রিয় মহান আল্লাহ আমাকে সে চারজনকে ভালোবাসতে নির্দেশ দিয়েছেন।
বলা হলো, হে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াআলিহী ওয়াসাল্লাম)! তাদের নামগুলো আমাদের জন্য বলুন। তিনি তিন বার বললেন, আলী তাদের মধ্যে। (সুনানে তিরমিযী ৫:৬৩৬/৩৭১৮, সুনানে ইবনে মাজাহ ১:৫৩/১৪৯, মুসনাদে আহমাদ ৫:৩৫১, আল মুস্তাদরাক-হাকেম ৩:১৩০)
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াআলিহী ওয়াসাল্লাম) বলেছেনঃ
لَوِ اجْتَمَعَ النَّاسُ عَلي حُبِّ عَلِيِّ بْنِ أَبِي طَالِبٍ، لَمَا خَلَقَ اللهُ تَعَالَي النَّارَ.
যদি মানুষ আলী ইবনে আবি তালিবের ভালোবাসায় একমত হতো তাহলে মহান আল্লাহ কখনো জাহান্নামকে সৃষ্টি করতেন না। (আল ফেরদৌস ৩:৩৭৩/১৩৫, আল মানাকিব-খারেযমী ৬৭/৩৯, মাকতালুল হুসাইন (আঃ)-খারেযমী ১:৩৮)
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াআলিহী ওয়াসাল্লাম) বলেছেনঃ
لَمُبارِزَةُ عَلِيِّ بْنِ أَبِي طَالِبٍ لِعَمْرِو بْنِ عَبدوُدٍّ يَوْمَ الْخَنْدَقِ، أَفْضَلُ مِنْ عَمَلِ اُمَّتِي إِلَي يَوْمِ الْقِيَامَةِ.
খন্দকের যুদ্ধে আমর ইবনে আবদুউদ্দের বিরুদ্ধে আলী ইবনে আবি তালিবের যুদ্ধ নিঃসন্দেহে কেয়ামত পর্যন্ত আমার উম্মতের সমুদয় কর্মের চাইতে অধিক মূল্যবান। (তারীখে বাগদাদ ১৩:১৯, আল মানাকিব-খারেযমী ১০৭/১১২)
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াআলিহী ওয়াসাল্লাম) বলেছেনঃ
اَللّهُمَّ انْصُرْ مَنْ نَصَرَ عَلِيّاً، اَللَّهُمَّ أَكْرِمْ مَنْ أَكْرَمَ عَلِيّاً ، اَللَّهُمَّ أخْذُلْ مَنْ خَذَلَ عَلِيّاً.
হে আল্লাহ! যে ব্যক্তি আলীকে সাহায্য করে তুমি তাকে সাহায্য করো, যে ব্যক্তি তাকে সম্মান করে তুমি তাকে সম্মান করো আর যে তাকে লাঞ্ছিত করে তুমি তাকে লাঞ্ছিত করো। (কানযুল উম্মাল ১১:৬২৩/৩৩০৩৩, আল মু’জামুল কাবীর – তাবারানী ১৭:৩৯,৮২)
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াআলিহী ওয়াসাল্লাম) বলেছেনঃ
يا عَلِيّ، طُوبَي لِمَنْ أَحَبَّكَ وَ صَدَّقَ فِيكَ وَ وَيْلٌ لِمَنْ أَبْغَضَكَ وَ كَذَّبَ فِيكَ.
হে আলী! সুসংবাদ তার প্রতি যে তোমাকে ভালোবাসে এবং তোমাকে সত্য বলে জানে। আর দুর্ভাগ্য তাদের প্রতি যারা তোমার সাথে শত্রুতা করে এবং তোমার ব্যাপারে মিথ্যা আরোপ করে। (তারীখে বাগদাদ ৯:৭২, ওয়াসীলাতুল মুতাআবেবদীন খ:৫, আল কিস্ম ২:১৬১, উসুদুল গবাহ ৪:২৩)
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াআলিহী ওয়াসাল্লাম) বলেছেনঃ
مَنْ كُنْتُ مَوْلَاهُ فَعَلِيٌّ مَوْلَاهُ، اَللَّهُمَّ وَالِ مَنْ وَالَاهُ وَعَاِد مَنْ عَادَاهُ.
আমি যার মাওলা আলীও তার মাওলা। হে আল্লাহ! যে আলীকে ভালোবাসে তুমি তাকে ভালোবাস আর যে আলীর সাথে শত্রুতা করে তুমি তার সাথে শত্রুতা করো।
(কানযুল উম্মাল ১১:৬০৯/৩২৯৫০, আল মুস্তাদরাক-হাকেম ৩:১০৯, মাজমাউয যাওয়ায়েদ ৯:১০৪, আল মু’জামুল কাবীর-তাবারানী ৪:১৭৩/৪০৫৩, তিরমিযী ৫:৬৩৩/৩৭১৩, মুসনাদে আহমাদ ১:৮৪, ৮৮, ১১৯, ১৫২, ৩৩১ ও ৪:২৮১, ৩৬৮, ৩৭০, ৩৭২ ও ৫:৩৪৭, ৩৫৮, ৩৬১, ৩৬৬, ৪১৯)
আহলুল বাইতকে যারা ভালবাসে তাদেরকে অনেক দুঃখ-দুর্দশা, লাঞ্ছণা-বঞ্ছণা, উৎপীড়ন যন্ত্রণা পোহাবার জন্য প্রস্তুত থাকতে হবে।
হজরত আলী (আঃ) বলেন, মহানবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াআলিহী ওয়াসাল্লাম) বলেছেন, “মুনাফিকরা কখনো আলীকে ভালোবাসবে না, আর মুমিনরা কখনো তাঁকে ঘৃণা করবে না। [সুনানী তিরমিযি, খ–৫, পৃ-৬৩৫, হাদীস-৩৭১৭]
রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াআলিহী ওয়াসাল্লাম) হযরত আলীর প্রতি ইঙ্গিত করে বলেছেন, “হে আলী আমার পরে তুমি প্রত্যেক মুমিন নর-নারীর ওপর কর্তৃত্বের অধিকারী। [আল মুস্তাদারক হাকেম, খ–৩, পৃ-১৩৪]
নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াআলিহী ওয়াসাল্লাম) নির্দেশ দিয়েছেন যে, আহলে বাইতে এর আগে যাওয়ার চেষ্টা করোনা তাহলে ধ্বংস হয়ে যাবে। তাদের থেকে সরে যেয়ো না তাহলে দুঃখ কষ্ট তোমাদের চির সাথী হয়ে যাবে। তাঁদেরকে শিক্ষা দেওয়ার চেষ্টা করোনা তাঁরা তোমাদের থেকে বেশি জ্ঞানী
সুত্রঃ তাফসিরে দুররে মানসুর, খঃ-২, পৃঃ-৬০; সাওয়ায়েকে মোহরেকা, পৃঃ-১৪৮ ; ইয়া নাবিয়ুল মুয়াদ্দাত, পৃঃ-৩৫৫ ; কানজুল উম্মাল, খঃ-১, পৃঃ- ১৬৮; আল তাবরানি, পৃঃ-৩৪২।
হজরত আবু বকর ও হজরত ওমর, হজরত আলী কে এ বলে স্বাগতম জানালেন যে, ইয়া আলী ইবনে আবু তালিব, আজ থেকে আপনি সকল মোমেন ও মোমেনার মাওলা ( অভিভাবক ) হয়ে গেলেন মুসনাদে হাম্বাল, খঃ-৪, পৃঃ-২৪; তাফসিরে আল কাবীর, খঃ-১২, পৃঃ-৪৯; কানজুল উম্মাল, খঃ-৬, পৃঃ-৩৯৭; আর রিয়াযুন নাজরা, খঃ-২। পৃঃ-১৬৯; মুস্তাদারাকে হাকেম, খঃ-৩, পৃঃ-১০৯ ইত্যাদি।
নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াআলিহী ওয়াসাল্লাম) বলেছেন যে, আলী রয়েছে সত্যের সাথে এবং সত্য রয়েছে আলী’র সাথে, ইয়া আল্লাহ্ ! সত্যকে সেই দিকে ঘুরিয়ে দাও যেদিকে আলী যায়
সুত্রঃ তিরমিজি শরীফ, ৬স্ট খন্ড, পৃষ্ঠা-২৯৮ (ইসঃ ফাঃ বাঃ), সহীহ তিরমিজি ( সব খন্ড একত্রে) পৃস্টা-১৭২,এবং-১০৭২ (২০১০ইং), তাজ কোং, ঢাকা। তারীখে বাগদাদ, খন্ডঃ-১৪, পৃঃ-৩২১। ইয়ানাবিউল মুয়াদ্দাত, পৃঃ-৯১। তাফসীরে কাবির, খঃ-১,পৃঃ-১১১ (মিশর)। জামেউস সাগির, খঃ-২, পৃঃ-৭৪,৭৫,১১০। ইমামত অর সিয়াসাত, খঃ-১,পৃঃ-১১১। আরজাহুল মাতালেব, পৃঃ-৯৮২। তারীখে খোলফা, পৃঃ-১১৬। ইযাযাতুল খিফা ( শাহ্ ওয়ালী উল্লাহ্ ) খঃ-১,পৃঃ-১৫৮,৫৪৮, কেফায়াতুত তালেব,অধ্যায়-৪৪।
একবার নবীজী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াআলিহী ওয়াসাল্লাম) হযরত আলীকে (আঃ) বললেন , হে আলী , তোমার মধ্যে এমন কিছু বৈশিষ্ট আছে , যা অন্য কারো মধ্যে নেই , এমনকি আমার মধ্যেও নেই । হযরত আলী (আঃ) বললেন, হে আল্লার রাসুল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াআলিহী ওয়াসাল্লাম) , এ আপনি কি বলছেন ! এও কি সম্ভব , আপনি হলেন , সাইয়্যেদুল মুরসালীন “। নবীজী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াআলিহী ওয়াসাল্লাম) মৃদু হেসে তখন বললেন , তোমার বৈশিষ্টগুলি হচ্ছে যেমন তোমার জন্ম পবিত্র কাবা ঘরের অভ্যন্তরে হয়েছে , আমার হয়নি। তোমার শ্বশুর সাইয়্যেদুল মুরসালীন , আমার নয়। তোমার শ্বাশুড়ী হযরত খাদীজাতুল কোবরা সিদ্দীকা , আমার নয়। তোমার স্ত্রী হলেন জান্নাতের সম্রাজ্ঞী , আমার নয়। তোমার দুই পুত্র , ইমাম হাসান ও ইমাম হোসেন জান্নাতের যুবকদের সর্দার , আমার নয়। তাই তুমি কত ভাগ্যবান ও মর্যাদাবান। তবে তোমরা সবাই আমা হতে আর আমি তোমাদের থেকে “।
সূত্র – নবীর (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াআলিহী ওয়াসাল্লাম) বংশধর ( আঞ্জুমানে কাদেরীয়া , চট্রগ্রাম ) ,পৃ-২২ , আরজাহুল মাতালেব,পৃ-৪১২ , ইয়া নাবিউল মুয়াদ্দাত ,পৃ-৪৬ , শাওয়াহেদুত তানযিল, খন্ড-১, পৃ-৪১৪ , নুরুল আবসার , পৃ-১০২ , আর রিয়াদুন নাদরাহ, খন্ড-৩, পৃ-১৭২।
নবীজী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াআলিহী ওয়াসাল্লাম) এর রেসালতের দুইজন সাক্ষ্যদাতা, প্রথম জন – মহান আল্লাহ আড় দ্বিতীয় জন – হযরত আলী (আঃ)।
“—- যারা কুফরী করেছে তারা বলে , আপনি রাসুল নন। আপনি বলে দিন , আমার ও তোমাদের মধ্যে আল্লাহ এবং ঐ ব্যক্তি যার কাছে কিতাবের ( ইলমুল কিতাব ) জ্ঞান আছে , সাক্ষী হিসাবে যথেষ্ট —- সুুরা রাদ/৪৩।
আবদুল্লাহ বিন সালাম বলেছেন যে , আমি নবীজীকে (সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়াআলিহী ওয়াসাল্লাম) প্রশ্ন করলাম যে , এই আয়াতে ঐ ব্যক্তি যার নিকট কিতাবের
সমূদয় জ্ঞান রয়েছে , তিনি কে ? নবীজী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াআলিহী ওয়াসাল্লাম)
উত্তরে বললেন , ঐ ব্যক্তিটি হচ্ছে হযরত
আলী ইবনে আবু তালিব “।
সূত্র – আল কাশফু ওয়াল বায়ান , খন্ড-৪, পৃ-৬০ , আল নাঈম আল মুকিম
,পৃ-৪৮৯ , তাফসীরে কুরতুবি ,খন্ড-৯ পৃ- ৩৩৬ সহ ১৩ টি কিতাবের খন্ড ও পৃষ্ঠার
রেফারেন্স দেয়া যাবে।
মহান আল্লাহ স্বয়ং যেখানে হযরত আলীকে (আঃ) সাক্ষী হিসাবে ঘোষনা দিচ্ছেন , সেখানে আমরা হযরত আলীকে (আঃ) কোন পর্যায় মানছি , সেটা আরেকবার ভেবে দেখার অবকাশ আছে। হযরত আলীর (আঃ) অসন্তষ্টি বা গজব, আল্লাহ্রই অসন্তষ্টি বা গজব
হযরত আবু মুসা হামিদীর বর্ণনা, আমি আরাফার মধ্যে রাসুল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াআলিহী ওয়াসাল্লাম) এর সঙ্গে ছিলাম। হযরত আবু বকর, হযরত ওসমান এবং অন্যান্য আসহাবও সঙ্গে ছিলেন। নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াআলিহী ওয়াসাল্লাম) আবু বকরকে সন্মোধন করে বললেন হে আবু বকর। এই ব্যাক্তি যাঁকে তুমি দেখছো আলী ইবনে আবু তালেব, উর্ধাকাশে সে আমার উত্তরসুরী, পৃথিবীতেও আমার উত্তরসুরী। যদি তুমি আল্লাহ্র সন্তষ্টির সাথে আল্লাহ্র সামনে হাজির হতে চাও, তবে আলীর সন্তোষ কামনা কর, তাঁর সন্তোষ্টি আল্লাহ্র সন্তোষ্টি, আর আলীর অসন্তষ্টি বা গজব, আল্লাহ্রই অসন্তষ্টি বা গজব সুত্রঃ মুয়াদ্দাতুল কুরবা, পৃঃ-৬৩, ইয়ানাবিউল মুয়াদ্দাত, পৃঃ-৪০৩।
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াআলিহী ওয়াসাল্লাম) বলেছেনঃ
صَاحِبُ سِرِّي عَلِيُّ ابْنُ أَبِي طَالِبٍ.
আলী আমার গোপন রহস্যকথার একমাত্র আধার। (আল ফেরদৌস ২:৪০৩/৩৭৯৩, আল ইমাম আলী (আঃ) – ইবনে আসাকির ২:৩১১/৮২২)
নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াআলিহী ওয়াসাল্লাম) বলেছেন, হযরত আলীর জিকির ( ফজিলত বর্ণনা ) করা ইবাদত।
সুত্রঃ ইয়ানাবিউল মুয়াদ্দাত, পৃঃ-৪২২, কানজুল উম্মাল, খঃ-৬, পৃঃ-১৫২,
মুয়াদ্দাতুল কুরবা, পৃঃ-১১২।
মহানবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াআলিহী ওয়াসাল্লাম) বলেছেন, “সমস্ত চোখ কিয়ামতের দিন কাঁদতে থাকবে, নিশ্চয়ই কেবল সেই চোখ ছাড়া, যা ইমাম হুসাইনের বিয়োগান্ত ঘটনায় কেঁদেছে, ঐ চোখ সেই দিন হাসতে থাকবে এবং তাকে জান্নাতের নিয়ামতসমূহের সুসংবাদ প্রদান করা হবে। [বিহারুল আনওয়ার, খ–৪৪, পৃ-১৯৩]
মহানবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াআলিহী ওয়াসাল্লাম) হযরত ফাতেমাকে বলেন যে, “কিয়ামতের দিন তুমি নারীদের জন্য শাফায়াত করবে এবং আমি পুরুষদের জন্য শাফায়াত করবো; যারা ইমাম হুসাইনের দুঃখে ক্রন্দনকারী প্রত্যেক ব্যক্তিকে আমরা হাত ধরে জান্নাতে প্রবেশ করাবো। [বিহারুল আনওয়ার, খ–৯৪, পৃ-১৯২]
মহানবী ( সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াআলিহী ওয়াসাল্লাম) ও তাঁর (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াআলিহী ওয়াসাল্লাম) আহলে বাইতের উপর দূরুদ পড়ার ফযিলত
১। কানযুল উম্মালে ‘হাসান’ থেকে তিনি মহানবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াআলিহী ওয়াসাল্লাম) হতে বর্ণিত হয়েছে যে, বলেনঃ
أکثِرُوا الصَّلاةَ عَلَيَّ. فَاءنَّ صَلاتَکُم عَلَيَّ مَغفِرَةُ لِذُنُو بِکُم.
আমার প্রতি অধিক দূরুদ পড়; কারণ, আমার প্রতি তোমাদের দূরুদ তোমাদের গুণাহ মাফের উপায় হবে। [কানযূল উম্মাল খঃ১ পৃঃ৪৩৬ ]
২। অনুরূপ আবুদারদা থেকে তিনি রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াআলিহী ওয়াসাল্লাম) থেকে বর্ণিত হয়েছে যে, তিনি বলেন ?
مَن صَلّي عَلَيَّ حينَ يُصبِحُ عَشراً وَ حينَ يُمسي عَشراً أدرَ کَتهُ شَفا عَتي.
যে প্রতি সকাল ও সন্ধ্যায় ১০ বার আমার উপর দূরুদ পড়ে আমার শাফা’অত তাকে স্পর্শ করে। [কানযূল উম্মাল পৃঃ৪৩৯]
৩। সাহল ইবনে সা’দ থেকে বর্ণিত হয়েছে ঃ
قَدِمَ رَسُولَ الله () فَاءذا بِأبي طَلحَة, فَقامَ إلَيهِ فَتَلَقّاۀ فَقالَ : بِأ بي اَنتَ وَ اُمّي يا رَسُولَ الله إنّي لَأرَي السُّرُورَفي وَجهِکَ , قالَ()্র أتاني جبرئيلُ آفاً فقالَ: يا مُحمّد ! مَن صَلّي عَلَيکَ مَرَّ ةً کَتَبَ اللهُ بِها عَشرَ حَسَناتٍ وَ مَحي عَنهُ عَشرَ سَيِّئاتٍ وَرَ فَعَ لَهُ بِها عَشرَ دَرَجاتٍগ্ধ
রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াআলিহী ওয়াসাল্লাম) প্রবেশ করলে আবু তালহা তাঁর নিকট দ্রুত পৌঁছলেম এবং তাঁকে অভ্যর্থনা জানালেন এবং বললেন ঃ ‘আমার পিতা-মাতা আপনার জন্য উৎসর্গ হোক হে আল্লাহর রাসূল ! আপনার চেহারা আনন্দিত দেখতে পাচ্ছি। আল্লাহর রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াআলিহী ওয়াসাল্লাম) বলেন ঃ জিব্রাইল সবেমাত্র আমার নিকট এসেছিলেন ও বললেন ঃ হে মুহাম্মাদ ! যে কেউ একবার আপনার উপর দূরুদ পড়ে মহান আল্লাহ তাকে দশটি হাসানাহ পুরস্কার দেন, দশটি অপকৃম ও বদ থেকে তাকে মুক্ত করেন এবং তাকে দশ ধাপ উপরে তুলেন। [কানযুল উম্মাল খঃ১, পৃঃ৪৩৬,৪৪৮,খঃ২ পৃঃ১৭৯ ,এ রেওয়ায়েতটি আবু তালহার ভাষায় এরূপ অতিরিক্তি সহকারে এসেছে এবং ফেরশতা তাকে (=দূরুদ পাঠকারীকে) সেটিই বলে যা তোমাকে বলা হয়েছে। বললাম ঃ হে জিব্রাইল! এ ফেরেশতাটিকে ? বললেন ! মহিয়ান, গড়িয়ান আল্লাহ যখন আপনাকে সৃষ্টি করেছেন তখন থেকে আপনার মাবয়ূসের (নবুওয়াতের ঘোষণা দেয়া ) সময় পর্যন্ত দু’টি ফেরেশতা আপনার জন্য নিযুক্ত করা হয়েছে। আপনার এমন কোন উম্মত নেই যে দূরুদ পড়েনি আর ফেরেশতা তাকে বলেনি ঃ তোমাকেও !মহান আল্লাহ তোমার উপর দূরুদ পাঠিয়েছেন।
কানযুল উম্মাল খঃ১ পৃঃ৪৪০,৪৪৯এবং খঃ২ পৃঃ১৮১।
এ রেওয়াতেটি সাঈদ ইবনে ওমর আনসারী ও আবু বারদা বিন নাইয়র ও আনাস থেকে ও বর্ণিত হয়েছে।
কানযুল উম্মল খঃ১,পৃঃ৪৩৮-৪৩৯ এবং ৪৪৮-৪৪৯ সূনানে নাসাঈ খঃ৩, পৃঃ৫০ কিতাবুস সালাত। অধ্যায় মাহানবীর উপর দূরুদের ফযিলত। ফারায়িদুল সাযাতিন,খঃ১ পৃঃ২৪, তারিখে বাগদাদ খঃ৮ পৃঃ২৮১
৪। সহী মুসলিমের বর্ণনা অনুসারে বিষয় বস্তু বর্ণিত হয়েছে।]
মাওলা আলী (আঃ)-এর কাছে একজন ঈসাই ( খ্রিস্টান ) ও একজন ইহুদী এসে এমন এক প্রশ্ন করলো যেন মাওলা আলী (আঃ) তাদের প্রশ্নের জবাব দিতে একটু সঙ্কোচবোধ করেন।
প্রশ্নটি ছিলোঃ
(১) হে আলী আপনি বলুনতো সেটা কোন জিনিস যেটা আমরা দেখি কিন্তু খোদা দেখেননা?
(২) আপনারা বলেন কোরআনে সব কিছু মওজুদ (উপস্থিত) আছে, কিন্তু নেই কোনটা?
বাবে ইলম মুচকি হাসি দিয়ে তার জবাবে বললেনঃ
প্রথমত আল্লাহ স্বপ্ন দেখেননা, কারন আল্লাহর না কখনো ঘুম আসে আর না কখনো ঝাপ্টা।
দ্বিতীয়ত হচ্ছে, কোরআনে সব কিছু আছে কিন্তু মিথ্যা কোন কথা নেই।
মহানবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াআলিহী ওয়াসাল্লাম) বলেছেন, “যে ব্যক্তি আলীকে গালমন্দ করে, সে যেন আমাকে গালি দিল। [আল মুস্তাদারক হাকেম, খ–৩, পৃ-১২১]
মহানবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াআলিহী ওয়াসাল্লাম) বলেছেন, “আলী ঈমানে সর্বাপেক্ষা দৃঢ়পদ, উম্মতের মধ্যে হক ও বাতিলের পার্থক্যকারী এবং মুমিনদের অভিভাবক। [কানযুল উম্মাল, খ–১১, পৃ-৬১৬]
মহানবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াআলিহী ওয়াসাল্লাম) বলেছেন, “আলী আমার থেকে আমি আলী থেকে, আমি এবং আলী ব্যতীত কেহই রেসালাতের অধিকার পূরন করেনি। [সুনানী তিরমিযি, খ–৫, পৃ-৬৩৬, হা-৩৭১৯; মুসনাদে আহমাদ, খ–৪, পৃ-১৬৪]
মহানবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াআলিহী ওয়াসাল্লাম) বলেছেন, “মুনাফিকরা কখনো আলীকে ভালোবাসবে না, আর মুমিনরা কখনো তাঁকে ঘৃণা করবে না। [সুনানী তিরমিযি, খ–৫, পৃ-৬৩৫, হাদীস-৩৭১৭]
মহানবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াআলিহী ওয়াসাল্লাম) বলেছেন, “আলী এবং তার অনুসারীরা নিঃসন্দেহে কেয়ামতের দিন বিজয়ী। [আল ফেরদৌস, খ–৩, পৃ-৬১, হাদীস-৪১৭২]
মহানবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াআলিহী ওয়াসাল্লাম) বলেছেন, “আলী
কোরআনের সাথে আর কোরআন আলীর সাথে।
[আল মুস্তাদারক হাকিম, খ–৩, পৃ-১২৪]
রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াআলিহী ওয়াসাল্লাম) বলেছেন, “হে আলী তুমি আমার নিকট মুসার ভাই হারুনের ন্যায়। শুধু আমার পরে আর কোনো নবী নেই। [সুনানে তিরমিযি, খ–৫, পৃ-৬৪১, হাদীস-৩৭৩০; সহীহ মুসলিম, খ–৪, পৃ-৪৪]
মহানবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াআলিহী ওয়াসাল্লাম) বলেছেন, “নিশ্চয়ই আলী আমা থেকে আর আমি আলী থেকে। সে আমার পরে সকল মুমিনদের নেতা। [মুসনাদে আহামাদ, খ–৪, পৃ-৪৩৮]
রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াআলিহী ওয়াসাল্লাম) হযরত আলীর প্রতি ইঙ্গিত করে বলেছেন, “হে আলী আমার পরে তুমি প্রত্যেক মুমিন নর-নারীর ওপর কর্তৃত্বের অধিকারী। [আল মুস্তাদারক হাকেম, খ–৩, পৃ-১৩৪]
মহানবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াআলিহী ওয়াসাল্লাম) হযরত আলীর প্রতি ইঙ্গিত করে বলেছেন, “হে আলী আমি হলাম সাবধানকারী আর তোমার মাধ্যমে অন্বেষণকারীরা পথ খুজে পাবে। [তাফসীরের তাবারী, খ–১৩, পৃ-৭২; ইমাম আলী (আ.); অনুবাদ-ইবনে আসাকিব, খ–২, পৃ-৪১৭]
মহানবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াআলিহী ওয়াসাল্লাম) হযরত আলীর প্রতি ইঙ্গিত করে বলেছেন, “জেনে রেখ, সে তোমাদের মাঝে আমার ভাই, আমার উত্তরসূরি এবং আমার স্থলাভিষিক্ত। সুতরাং তার কথা মনোযোগ দিয়ে শুনবে এবং আনুগত্য করবে। [তারীখে তাবারী, খ–২, পৃ-২২১৭]
মদিনা মুনিব [ﷺ] বলেছেন, “কিয়ামতের দিন এক দল লোককে অত্যন্ত চমৎকার ও সম্মানিত অবস্থায় দেখা যাবে। তাদেরকে জিজ্ঞাসা করা হবে, তারা ফেরেস্তা বা নবী কিনা? উত্তরে তারা বলবেন, আমরা ফেরেস্তাও নই নবীও নই, বরং মোহাম্মদ [ﷺ]-এঁর উম্মতের মধ্যে অভাবী লোক। তখন তাদের জিজ্ঞাসা করা হবে, তাহলে কিভাবে তোমরা এত উচ্চ মর্যাদা লাভ করলে? উত্তরে তাঁরা বলবে, আমরা খুব বেশি আমল করিনি এমনকি পুরো বছর রোজাও রাখিনি এবং পুরো রাত্রি ইবাদতেও কাটাইনি। তবে আমরা পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ কায়েম করতাম এবং মোহাম্মদ [ﷺ] ও তাঁর আহলে বাইতের সদস্যগণের নাম শুনলে তাঁদের উপর দূরুদ পাঠ করতাম। আর তাঁদের দুঃখের কথা শুনলে আমাদের গালগড়িয়ে অশ্রু প্রবাহিত হত। [মুসতাদারক আলাস সাহীহাইন, খ–১০, পৃ-৩১৮]
মহানবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াআলিহী ওয়াসাল্লাম) হযরত ফাতেমাকে বলেন যে, “কিয়ামতের দিন তুমি নারীদের জন্য শাফায়াত করবে এবং আমি পুরুষদের জন্য শাফায়াত করবো; যারা ইমাম হুসাইনের দুঃখে ক্রন্দনকারী প্রত্যেক ব্যক্তিকে আমরা হাত ধরে জান্নাতে প্রবেশ করাবো। [বিহারুল আনওয়ার, খ–৯৪, পৃ-১৯২]
মহানবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াআলিহী ওয়াসাল্লাম) বলেছেন, “সমস্ত চোখ কিয়ামতের দিন কাঁদতে থাকবে, নিশ্চয়ই কেবল সেই চোখ ছাড়া, যা ইমাম হুসাইনের বিয়োগান্ত ঘটনায় কেঁদেছে, ঐ চোখ সেই দিন হাসতে থাকবে এবং তাকে জান্নাতের নিয়ামতসমূহের সুসংবাদ প্রদান করা হবে। [বিহারুল আনওয়ার, খ–৪৪, পৃ-১৯৩]
মহানবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াআলিহী ওয়াসাল্লাম) বলেছেন, “নিশ্চয়ই প্রত্যেক মুমিনের হৃদয়ের ইমাম হোসাইন-এর শাহাদাতের বিষয়ে এমন ভালোবাসার উত্তাপ রয়েছে যা কখনো শীতল হওয়ার নয়। [মুস্তাদারক আল ওয়াসাইল, খ–১০, পৃ-৩১৮]
অন্য হাদীছ শরীফ মুবারক উনার মধ্যে এসেছে,
عن حضرت جابر بن عبد الله الانصاري رضى الله تعالى عنه قال خطبنا رسول الله صلى الله عليه و سلم فسمعته وهو يقول يا أيها الناس من أبغضنا اهل البيت حشره الله يوم القيامة يهوديا فقلت يا رسول الله صلى الله عليه وسلم وان صام وصلى قال وان صام وصلى وزعم انه مسلم.
অর্থ: “হযরত জাবির ইবনে আব্দুল্লাহ আনছারী রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম একদা আমাদের উদ্দেশ্যে খুতবা দিলেন এবং বলতে থাকলেন যে, হে লোক সকল! যারা আমার আহলে বাইতের প্রতি বিদ্বেষ পোষণ করলো, তাঁদের বিরোধিতা করলো, তাদের হাশর-নশর হবে ইহুদী হিসেবে। আমি আরজ করলাম, ইয়া রসূলাল্লাহ! যদিও তারা রোযা রাখে এবং নামায পড়ে? উত্তরে তিনি ইরশাদ করলেন, হ্যাঁ! যদিও তারা রোযা রাখে, নামায পড়ে এবং দাবি করে যে, তারা মুসলমান।”
(আল মু’জামুল আওসাত্ব লিত-ত্ববারণী ৪/২১২, জামিউল আহাদীছ লিস সুয়ূত্বী ১০/৪৭৫, জামউল জাওয়ামি‘ লিস সুয়ূত্বী, মাজমাউয যাওয়াইদ লিল হাইছামী ৯/৭১২, তারীখে জুরজান ৩৬৯ পৃ.)
رقم الحديث: 2600
(حديث مرفوع) وَسألت أبي عَنْ حديثرَوَاهُ إِسْمَاعِيلُ بْنُ أَبِي أُوَيْسٍ ، عَنْ أَبِيهِ ، عَنْ حُمَيْدِ بْنِ قَيْسٍ ، عَنْ عَطَاءٍ ، وَغَيْرِهِ مِنْ أَصْحَابِ ابْنِ عَبَّاسٍ ، عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ ، عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ ، أَنَّهُ قَالَ : ” يَا بَنِي عَبْدِ الْمُطَّلِبِ ، إِنِّي سَأَلْتُ اللَّهَ لَكُمْ ثَلاثًا : أَنْ يُثَبِّتَ قَائِمَكُمْ ، وَأَنْ يَهْدِيَ ضَالَّكُمْ ، وَأَنْ يُعَلِّمَ جَاهِلَكُمْ ، وَسَأَلْتُ اللَّهَ أَنْ يَجْعَلَكُمْ جُودًا نُجُدًا رُحَمَاءَ ، وَلَوْ أَنَّ رَجُلا صَفَنَ بَيْنَ الرُّكْنِ وَالْمَقَامِ فَصَلَّى وَصَامَ ثُمَّ لَقِيَ اللَّهَ وَهُوَ مُبْغِضٌ لأَهْلِ بَيْتِ مُحَمَّدٍ دَخَلَ النَّارَ ” . قَالَ أَبِي : هَذَا حَدِيثٌ مُنْكَرٌ .
عن حضرت ابن عباس رضى الله عنهما قال قال رسول الله صلى الله عليه وسلم لو أن رجلا صف بين الركن والمقام فصلى وصام ثم لقى الله مبغضا لاهل بيت محمد صلى الله عليه وسلم دخل النار.
“হযরত ইবনে আব্বাস রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুমা থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেন, কোনো ব্যক্তি যদি সম্মানিত রুকন এবং সম্মানিত মাক্বামের মধ্যবর্তী স্থানে সারিবদ্ধ হয়ে থাকে। অতঃপর নামায পড়ে এবং রোযা রাখে, কিন্তু এই অবস্থায় তার মৃত্যু হয় যে, সে আহলে বায়েতের প্রতি বিদ্বেষ পোষণ করে। তাহলে সে অবশ্যই জাহান্নামে প্রবেশ করবে।” নাঊযুবিল্লাহ!’ (মুস্তাদরাকে হাকীমঃ ৪৭৬৬, যাখাইরুল উক্ববা লি-মুহিব্বে ত্ববারী ১/১৮, হাদিসের মান সহীহ)
মওলা আলী রাঃ সম্পর্কে ৭০ টি হাদিস
” আমিরুল মুমিনীন আলী ইবনে আবি তালিব (আঃ) সম্পর্কে মহানবী (সাঃ)-এর সত্তুরটি হাদীস “
[আহলে সুন্নাতের বিভিন্ন নির্ভরযোগ্য হাদীস গ্রন্থ থেকে সংকলিত]
১. মুমিনদের আমলনামার শিরোনাম
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াআলিহী ওয়াসাল্লাম) বলেছেনঃ
عُنْوَانُ صَحِيفَةِ الْمُؤمِنِ حُبُّ عَلِيِّ بْنِ أََبِي طَالِبٍ.
মুমিনের আমলনামার শিরোনাম হলো আলী ইবনে আবি তালিবের ভালোবাসা।
(আল মানাকিব – ইবনে মাগাযেলী: ২৪৩/২৯০, কানযুল উম্মাল ১১:৬০১/৩২৯০০, তারীখে বাগদাদ : ৪:৪১০)
২. আরবের সরদার
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াআলিহী ওয়াসাল্লাম) বলেছেনঃ
أَنَا سَيِّدُ وُلْدِ آدَم، وَ عَلِيٌّ سَيِّدُ الْعَرَبِ.
আমি আদম সন্তানদের সরদার আর আলী আরবদের সরদার।
(আল মু’জামুল আওসাত-তাবারানী ২:২৭৯/১৪৯১, ইমাম আলী (আঃ) (অনুবাদ)- ইবনে আসাকির ২:২৬২/৭৮৯, কানযুল উম্মাল-১১-১৮/৩৩০০৬)।
৩. হিকমতের দরজা
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াআলিহী ওয়াসাল্লাম) বলেছেনঃ
أَنَا دَارُ الْحِكْمَةِ، وَ عَلِيٌّ بَابُهَا.
আমি হিকমতের গৃহ আর আলী তার দরজা।
(সুনানে তিরমিযী ৫:৬৩৭/৩৭২৩, হিল্লিয়াতুল আউলিয়া ১:৬৪, আল জামিউস্ সাগীর ১:৪১৫/২৭০৪)
৪. জ্ঞানের নগরীর দরওয়াযা
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াআলিহী ওয়াসাল্লাম) বলেছেনঃ
أَنَا مَدِينَةُ الْعِلْمِ وَ عَليُّ بَابُهَا، فَمَنْ أَرَادَ الْمَدِينَةَ فَلْيَأتِ البَابَ.
আমি সমস্ত জ্ঞানের নগরী আর আলী তার তোরণ। কাজেই যে এই নগরীতে প্রবেশ করবে তাকে তোরণ বা দ্বারের মধ্য দিয়ে আসতে হবে।
(আল মুস্তাদরাক-হাকেম ৩:১২৬-১২৭, জামেউল উসুল ৯:৪৭৩/৬৪৮৯, উসুদুল গবাহ্ ৪:২২, তারীখে বাগদাদ ১১:৪৯-৫০, আল বেদায়াহ্ ওয়ান নেহায়া ৭:৩৭২, আল জামেউস্ সাগীর ১:৪১৫/২৭০৫)
৫. উম্মতের মধ্যে সর্বাপেক্ষা জ্ঞানী
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াআলিহী ওয়াসাল্লাম) বলেছেনঃ
أَعْلَمُ اُمَّتِي مِنْ بَعْدِي عَلِیُّ بْنُ أَبِي طَالِبٍ.
আমার পরে আলী হলো আমার উম্মতের মধ্যে সর্বাপেক্ষা জ্ঞানী।
(কানযুল উম্মাল ১১:৬১৪/৩২৯৭৭, আল ফেরদৌস ১:৩৭০/১৪৯১)
৬. মহানবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াআলিহী ওয়াসাল্লাম)-এর ভাই
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াআলিহী ওয়াসাল্লাম) ইমাম আলীকে বলেনঃ
أَنْتَ أَخِي فِي الدُّنْيَا وَ الْاَخِرَة.
তুমি দুনিয়া এবং পরকালে আমার ভাই।
(সুনানে তিরমিযী ৫:৬৩৬/৩৭২০, আর রিয়াদুন নাদ্রাহ ৩:১২৪)
৭. রাসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াআলিহী ওয়াসাল্লাম)-এর মনোনীত
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াআলিহী ওয়াসাল্লাম) বলেছেনঃ
أَمَّا أَنْتَ يَا عَلِيّ، أَنْتَ صَفِيِّي وَ أمِينِي.
আর তুমি হে আলী! তুমি আমার মনোনীত এবং আমার আমানতদার।
(খাসায়েসে নাসায়ী : ১৯, মাজমাউয যাওয়ায়েদ ৯:১৫৬)
৮. মহানবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াআলিহী ওয়াসাল্লাম)-এর স্থলাভিষিক্ত
হুজুর (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াআলিহী ওয়াসাল্লাম) হযরত আলীর প্রতি ইঙ্গিত করে বলেনঃ
إِنَّ هَذَا أَخِي وَ وَصِيِّي وَ خَلِيفَتِي فِيكُمْ، فَاسْمَعُوا لَهُ وَ أَطِيعُوه.
জেনে রেখো যে, সে তোমাদের মাঝে আমার ভাই, উত্তরসূরি এবং স্থলাভিষিক্ত। সুতরাং তার কথা মনোযোগ দিয়ে শুনবে এবং তার আনুগত্য করবে।
(তারীখে তাবারী ২:২১৭, আল কামিল ফিত্ তারীখ ২:৬৪, মাআলিমুত্ তানযীল ৪:২৭৮)
৯. মুমিনদের অভিভাবক
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াআলিহী ওয়াসাল্লাম) বলেছেনঃ
إنَّ عَلِيّاً وَلِيُّكُمْ بَعْدِي.
নিশ্চয় আলী আমার পরে তোমাদের অভিভাবক।
(কানযুল উম্মাল ১১:৬১২/৩২৯৬৩, আল ফেরদৌস ৫:২৯২/৮৫২৮)
১০. বিচারের সিংহাসনে
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াআলিহী ওয়াসাল্লাম) বলেছেনঃ
أَقْضَي اُمَّتِي عَليُّ.
আলী আমার উম্মতের মাঝে সর্বাপেক্ষা বিচক্ষণ বিচারক
(আর রিয়াদুন নাদরাহ ৩:১৬৭, মানাকিবে খারেযমী ৩০, যাখায়িরুল উকবা ৮৩)
১১. উম্মতের জন্য হুজ্জাত বা দলিল
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াআলিহী ওয়াসাল্লাম) বলেছেনঃ
أَنَا وَ عَلِيٌّ حُجَّةٌ عَلَي أُمَّتِي يَوْمَ الْقِيَامَةِ.
কেয়ামতের দিন আমি এবং আলী আমার অনুসারীদের জন্য হুজ্জাত (দলিল) এবং পথপ্রদর্শনকারী।
(তারীখে বাগদাদ ২:৮৮)
১২. মহানবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াআলিহী ওয়াসাল্লাম)-এর একই বংশধারা
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াআলিহী ওয়াসাল্লাম) বলেছেনঃ
أَنَا وَ عَلِيٌّ مِنْ شَجَرَةٍ وَاحِدَةٍ، وَ النَّاسُ مِنْ أشْجَارٍ شَتَّي.
আমি আর আলী একই বৃক্ষ থেকে, আর অন্যেরা (মানুষ) বিভিন্ন বৃক্ষ থেকে।
(আল মানাকিব – ইবনে মাগাযেলী :৪০০/৫৩, কানযুল উম্মাল ১১:৬০৮/ ৩২৯৪৩, আল ফেরদৌস ১: ৪৪/১০৯, মাজমাউয যাওয়ায়েদ ৯:১০০)
১৩. উম্মতের হেদায়াতকারী
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াআলিহী ওয়াসাল্লাম) বলেছেনঃ
أنَا الْمُنْذِرُ وَ عَلِيٌّ الْهَادِي، بِكَ يَا عَلِيُّ يَهْتَدِي الْمُهْتَدُونَ.
আমি হলাম সাবধানকারী। আর হে আলী! তোমার মাধ্যমে পথ অন্বেষণকারীরা পথ খুঁজে পাবে।
(তাফসীরে তাবারী ১৩:৭২, ইমাম আলী (আঃ) (অনুবাদ)- ইবনে আসাকির ২:৪১৭/৯২৩)
১৪. জাতির পথ-প্রদর্শক
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াআলিহী ওয়াসাল্লাম) ইমাম আলীকে বলেনঃ
أنْتَ تُبَيِّنُ لِأُمَّتِي مَا اخْتَلَفُوا فِيهِ بَعْدِي.
আমার পরে আমার উম্মত যে বিষয়ে মতবিরোধ করবে তুমি তার সমাধান দান করবে।
(আল মুস্তাদরাক-হাকেম ৩:১২২, কানযুল উম্মাল ১১:৬১৫/৩২৯৮৩, আল ফেরদৌস ৫:৩৩২/৮৩৪৯, হিল্লিয়াতুল আউলিয়া ১:৬৪)
১৫. মহানবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াআলিহী ওয়াসাল্লাম)-এর থেকে
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াআলিহী ওয়াসাল্লাম) বলেছেনঃ
أنْتَ مِنِّي وَ أَنَا مِنْكَ.
তুমি আমা থেকে আর আমি তোমা থেকে।
(সহীহ বুখারী ৪:২২, ৫:৮৭, সুনানে তিরমিযী ৫:৬৩৫/৩৭১৬, মাসাবিহুস সুন্নাহ ৪:১৭২/৪৭৬৫ ও ১৮৬/১০৪৮, তারীখে বাগদাদ ৪:১৪০)
১৬. মুমিনদের কর্তৃত্বের অধিকারী
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াআলিহী ওয়াসাল্লাম) ইমাম আলীকে বলেনঃ
أنْتَ وَلِيُّ كُلِّ مُؤمِنٍ وَ مُؤمِنَةٍ بَعْدِي.
আমার পরে তুমি প্রত্যেক মুমিন নর ও নারীর ওপর কর্তৃত্বের অধিকারী।
(আল মুস্তাদরাক-হাকেম ৩:১৩৪, আল মুজামুল কাবীর-তাবারানী ১২:৭৮/১২৫৯৩)
১৭. আদর্শের পথে শহীদ
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াআলিহী ওয়াসাল্লাম) ইমাম আলীকে বলেনঃ
أنْتَ تَعِيْشُ عَلَي مِلَّتِي، وَ تُقْتَلُ عَلَي سُنَّتِي.
তুমি আমার পন্থায় জীবন যাপন করবে, আর আমার আদর্শের পথেই শাহাদাত বরণ করবে।
(কানযুল উম্মাল ১১:৬১৭/৩২৯৯৭, আল মুস্তাদরাক-হাকেম :৩/১৪২)
১৮. রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াআলিহী ওয়াসাল্লাম)-এর প্রাণ
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াআলিহী ওয়াসাল্লাম) বলেছেনঃ
إِنَّ عَلِيّاً مِنِّي، وَ أََنَا مِنْهُ، وَ هُوَ وَلِيُّ كُلِّ مُؤمِنٍ بَعْدِي.
নিশ্চয় আলী আমা থেকে আর আমি আলী থেকে। আর সে আমার পরে সকল মুমিনের নেতা।
(খাসায়েসে নেসায়ী :২৩, মুসনাদে আহমাদ ৪:৪৩৮, আল মু’জামুল কাবীর-তাবারানী
১৮: ১২৮/২৬৫, হিল্লীয়াতুল আউলিয়া ৬:২৯৬)
১৯. মহানবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াআলিহী ওয়াসাল্লাম)-এর হারুন
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াআলিহী ওয়াসাল্লাম) ইমাম আলী (আঃ) কে বলেনঃ
أنْتَ مِنِّي بِمَنْزِلَةِ هَارُونَ مِنْ مُوسَي إِلَّا أَنَّهُ لَا نَبِيَّ بَعْدي.
আমার নিকট তুমি মুসার কাছে হারুনের ন্যায়। শুধু আমার পরে কোনো নবী নেই।
(সুনানে তিরমিযী ৫:৬৪১/৩৭৩০, মাসাবিহুস্ সুন্নাহ ৪:১৭০/৪৭৬২, সহীহ মুসলিম ৪:৪৪/৩০)
২০. রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াআলিহী ওয়াসাল্লাম)-এর সাথে
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াআলিহী ওয়াসাল্লাম) বলেছেনঃ
أَبْشِرْ يَا عَلِيُّ، حَيَاتُكَ مَعِي وَ مَوتُك مَعِي.
হে আলী! সুসংবাদ তোমার ওপর। তোমার জীবন আমার সাথে আর তোমার মরণও আমার সাথে।
(ইমাম আলী (আঃ)-ইবনে আসাকির ২:৪৩৫, ৯৪৭, মাজমাউয যাওয়াযেদ ৯:১১২, কানযুল উম্মাল ১৩: ১৪৪/৩৬৪৫৩)
২১. সর্বপ্রথম নামাযী
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াআলিহী ওয়াসাল্লাম) বলেছেনঃ
أََوَّلُ مَنْ صَلَّي مَعِي عَلِيٌّ.
সর্বপ্রথম আমার সাথে যে নামায পড়েছে সে হলো আলী।
(কানযুল উম্মাল ১১:৬১৬/৩২৯৯২, আল ফেরদৌস ১:২৭/৩৯)
২২. শ্রেষ্ঠতম পুরুষ
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াআলিহী ওয়াসাল্লাম) বলেছেনঃ
خَيْرُ رِجَالِكُمْ عَلِيُّ بْنُ أَبِي طَالِبٍ.
আলী ইবনে আবি তালিব তোমাদের মধ্যে শ্রেষ্ঠতম পুরুষ।
(তারীখে বাগদাদ ৪:৩৯২, মুন্তাখাবু কানযুল উম্মাল ৫:৯৩)
২৩. উম্মতের পিতা
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াআলিহী ওয়াসাল্লাম) বলেছেনঃ
حَقُّ عَلِيٍّ عَلَي الْمُسْلِمِينَ حَقُّ الوَالِدِ عَلَي الْوَلَدِ.
মুসলমানদের ওপর আলীর অধিকার, সন্তানের ওপর পিতার অধিকারের ন্যায়।
(আর রিয়াদুন্ নাদরাহ ৩:১৩০, ইমাম আলী – ইবনে আসাকির ২:২৭২/৭৯৮-৭৯৯)
২৪. ইবাদতের সারসত্য
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াআলিহী ওয়াসাল্লাম) বলেছেনঃ
ذِكْرُ عَلِيٍّ عِبَادَةٌ.
আলীকে স্মরণ করা ইবাদততুল্য।
(কানযুল উম্মাল ১১, ৬০১/৩২৮৯৪, আল ফেরদৌস ২:২৪৪/৩১৫১, ওসীলাতুল মুতাআবেবদীন খ: ৫ আল কাসাম ২:১৬৮)
২৫. মজলিসের সৌন্দর্য
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াআলিহী ওয়াসাল্লাম) বলেছেনঃ
زَيِّنُوا مَجَالِسَكُمْ بِذِكْرِ عَلِيٍّ.
তোমাদের মজলিসগুলোকে আলীর নাম উচ্চারণের মাধ্যমে সৌন্দর্যমন্ডিত করো।
(আল মানাকিব – ইবনুল মাগাযেলী : ২১১/২৫৫)
২৬. সর্বদা সত্যের সাথে
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াআলিহী ওয়াসাল্লাম) বলেছেনঃ
رَحِمَ اللهُ عَلِيّاً ، اَللَّهُمَّ أَدِرِ الْحَقَّ مَعَهُ حَيْثُ دَارَ.
আল্লাহ আলীর ওপর রহমত বর্ষণ করুন! হে আল্লাহ! আলী যেখানেই আছে সত্যকে তার সাথে ঘোরাও।
(আল মুস্তাদরাক-হাকেম ৩:১২৪, সুনানে তিরমিযী ৫:৬৩৩/৩৭১৪, ইমাম আলী (আঃ) – ইবনে আসাকির, ৩:১৫১/১১৬৯-১১৭০)
২৭. রাসূলুললাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াআলিহী ওয়াসাল্লাম)-এর গোপন রহস্যের আধার
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াআলিহী ওয়াসাল্লাম) বলেছেনঃ
صَاحِبُ سِرِّي عَلِيُّ ابْنُ أَبِي طَالِبٍ.
আলী আমার গোপন রহস্যকথার একমাত্র আধার
(আল ফেরদৌস ২:৪০৩/৩৭৯৩, আল ইমাম আলী (আঃ) – ইবনে আসাকির ২:৩১১/৮২২)
২৮. রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াআলিহী ওয়াসাল্লাম)-এর জ্ঞানের ভান্ডার
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াআলিহী ওয়াসাল্লাম) বলেছেনঃ
عَلِيٌّ خَازِنُ عِلْمِي.
আলী আমার জ্ঞানের ভান্ডার।
(শারহে নাহজুল বালাগা – ইবনে আবিল হাদীদ ৯:১৬৫)
২৯. সৃষ্টিকুলের শ্রেষ্ঠ
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াআলিহী ওয়াসাল্লাম) বলেছেনঃ
عَلِيٌّ خَيْرُ الْبَرِيَّةِ.
আলী সৃষ্টিকুলের সেরা।
(আল ইমাম আলী (আঃ) – ইবনে আসাকির ২:৪৪৩/৯৫৯, মানাকিবে খারেযমী : ৬২)
৩০. মানুষের মধ্যে শ্রেষ্ঠ
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াআলিহী ওয়াসাল্লাম) বলেছেনঃ
عَلِيٌّ خَيْرُ الْبَشَرِ، مَنْ أَبَي فَقَدْ كَفَرَ.
আলী সর্বশ্রেষ্ঠ মানুষ, যে তা মানবে না সে নিঃসন্দেহে কাফের।
(সিয়ারু আ’লামুন নুবালা ৮:২৫০, ইমাম আলী (আঃ)-ইবনে আসাকির ২:৪৪৪/৯৬২-৯৬৬, তারীখে বাগদাদ ৭:৪২১)
৩১. জ্ঞানের আধার
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াআলিহী ওয়াসাল্লাম) বলেছেনঃ
عَلِيٌّ عَيْبَةُ عِلْمِي.
আলী আমার জ্ঞানের আধার।
(আল জামেউস্ সাগীর ২:১৭৭, শারহে নাহজুল বালাগা – ইবনে আবিল হাদীদ ৯:১৬৫)
৩২. সর্বদা কুরআনের সাথে
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াআলিহী ওয়াসাল্লাম) বলেছেনঃ
عَلِيٌّ مَعَ الْقُرْآنِ وَ الْقُرْآنُ مَعَ عَلِيٍّ.
আলী কুরআনের সাথে আর কুরআন আলীর সাথে।
(আল মুস্তাদরাক-হাকেম ৩:১২৪, কানযুল উম্মাল ১১:৬০৩/৩২৯১২)
৩৩. রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াআলিহী ওয়াসাল্লাম)-এর নিকটে
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াআলিহী ওয়াসাল্লাম) বলেছেনঃ
عَلِيٌّ مِنِّي بِمَنْزِلَةِ رَأسِي مِنْ بَدَني.
আমার নিকটে আলী আমার শরীরে যুক্ত আমার মাথার ন্যায়।
(তারীখে বাগদাদ ৭:১২, কানযুল উম্মাল ১১:৬০৩/৩২৯১৪)
৩৪. আল্লাহর নিকটে
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াআলিহী ওয়াসাল্লাম) বলেছেনঃ
عَلِيٌّ مِنِّيكَمَنْزِلَتِي مِنْ رَبِّي.
আমার নিকটে আলীর মর্যাদা হলো যেমন আমার প্রতিপালকের নিকটে আমার মর্যাদা।
(আস সাওয়ায়িকুল মুহরিকা :১৭৭, যাখায়িরুল উক্বা : ৬৪)
৩৫. কেয়ামতের দিন বিজয়ী
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াআলিহী ওয়াসাল্লাম) বলেছেনঃ
عَلِيٌّ وَ شِيعَتُهُ هُمُ الْفَائِزُونَ يَوْمَ الْقِيَامَةِ.
আলী এবং তাঁর অনুসারীরা নিঃসন্দেহে কেয়ামতের দিন বিজয়ী।
(আল ফেরদৌস ৩:৬১/৪১৭২, ওয়াসীলাতুল মুতাআবেবদীন খ:৫, আল কিস্ম ২:১৭০)
৩৬. বেহেশতের তারকা
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াআলিহী ওয়াসাল্লাম) বলেছেনঃ
عَلِيٌّ يَزْهَرُ فِي الْجَنَّةِ كَكَوْكَبِ الصُّبْحِ لِأَهْلِ الدُّنْيَا.
আলী বেহেশতের মধ্যে দুনিয়াবাসীর জন্য ভোরের তারকার ন্যায় উজ্জ্বল।
(আল ফেরদৌস ৩:৬৩/৪১৭৮, কানযুল উম্মাল ১১:৬০৪/৩২৯১৭)
৩৭. তাকে কষ্ট দিও না
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াআলিহী ওয়াসাল্লাম) বলেছেনঃ
مَنْ آذَي عَلِيّاً فَقَدْ آذَانِي.
যে ব্যক্তি আলীকে কষ্ট দেয় সে আমাকে কষ্ট দেয়।
(মুসনাদে আহমাদ ৩:৪৮৩, আল মুস্তাদরাক-হাকেম ৩:১২২, দালায়িলুন নব্যুওয়াত ৫:৩৯৫, আল ইহ্সান- ইবনে হাববান ৯:৩৯/৬৮৮৪)
৩৮. আল্লাহর অস্তিত্বে মিশে আছে
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াআলিহী ওয়াসাল্লাম) বলেছেনঃ
لَاتَسُبُّوا عَلِيّاً، فَإِنَّهُ مَمْسُوسٌ فِي ذَاتِ اللهِ.
তোমরা আলীকে গালমন্দ করো না। সে আল্লাহর সত্তায় মিশে গেছে্
(আল মু’জামুল কাবীর-তাবারানী ১৯:১৪৮/৩২৪, হিল্লিয়াতুল আউলিয়া ১:৬৮, কানযুল উম্মাল ১১:৬২১/৩৩০১৭)
৩৯. মুনাফিকরা তাঁকে ভালোবাসে না
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াআলিহী ওয়াসাল্লাম) বলেছেনঃ
لَا يُحِبُّ عَلِيّاً مُنَافِقٌ، وَ لاَ يُبْغِضُهُ مُؤمِنٌ.
মুনাফিকরা আলীকে ভালোবাসে না, আর মুমিন তাঁকে ঘৃণা করে না।
(সুনানে তিরমিযী ৫:৬৩৫/৩৭১৭, আর রিয়াদুন নাদ্রাহ ৩:১৮৯)
৪০. রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াআলিহী ওয়াসাল্লাম)-এর হক (অধিকার) পূরণকারী
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াআলিহী ওয়াসাল্লাম) বলেছেনঃ
عَلِيٌّ مِنِّي وَ أَنَامِنْ عَلِيٍّ، وَلَا يُؤَدِّي عَنِّي إِلَّا أَنَا أَوْ عَلِيٌّ.
আলী আমা থেকে আর আমি আলী থেকে, আমি আর আলী ব্যতীত কেউই আমার (রেসালাতের) অধিকার পূরণ করেনি।
(মাসাবিহুস সুন্নাহ ৪:১৭২/৪৭৬৮, সুনানে তিরমিযী ৫:৬৩৬/৩৭১৯, মুসনাদে আহমাদ ৪:১৬৪)
৪১. মুসলমানদের সরদার
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াআলিহী ওয়াসাল্লাম) বলেছেনঃ
عَلِيٌّ سَيِّدُ الْمُسْلِمِينَ، وَ إِمَامُ الْمُتَّقِينَ، وَ قَائِدُ الْغُرِّ الْمُحَجَّلِينَ.
আলী মুসলমানদের সরদার, পরহেযগারদের নেতা এবং সফলকামদের পথ প্রদর্শক।
(আল মুস্তাদরাক-হাকেম ৩:১৩৮, আল মানাকিব-ইবনুল মাগাযেলী ১০৪/১৪৬)
৪২. নাজাত দানকারী
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াআলিহী ওয়াসাল্লাম) বলেছেনঃ
حُبُّ عَلِيٍّ بَرَاءَةٌ مِنَ النَّارِ.
আলীর প্রতি ভালোবাসা আগুন থেকে মুক্তির কারণ।
(আল ফেরদৌস ২:১৪২/২৭২৩)
৪৩. ঈমানে সর্বাপেক্ষা অবিচল
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াআলিহী ওয়াসাল্লাম) বলেছেনঃ
عَلِيٌّ الصِّدِّيقُ الْاَكْبَرُ، وَ فَارُوقُ هَذِهِ الْاُمَّةِ، وَ يَعْسُوبُ الْمُؤْمِنِينَ.
আলী ঈমানে সর্বাপেক্ষা দৃঢ়পদ, উম্মতের মধ্যে হক ও বাতিলে পার্থক্যকারী আর মুমিনদের কর্তা।
(কানযুল উম্মাল ১১:৬১৬/৩২৯৯০, আল মু’জামুল কাবীর-তাবারানী ৬:২৬৯/৬১৮৪)
৪৪. তাঁকে অভিসম্পাত করো না
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াআলিহী ওয়াসাল্লাম) বলেছেনঃ
مَنْ سَبَّ عَلِيّاً فَقَدْ سَبَّنِي.
যে ব্যক্তি আলীকে গালমন্দ করে সে যেন আমাকেই গালি দিল।
(মুখতাসারু তারীখে দামেস্ক – ইবনে মাঞ্জুর ১৭:৩৬৬, ফাযায়েলুস সাহাবা ২:৫৯৪/১০১১, খাসায়েসে নাসায়ী :২৪, আল মুস্তাদরাক-হাকেম ৩:১২১, মানাকিবে খারেযমী : ৮২)
৪৫. আল্লাহর রাস্তায় কঠোরতা
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াআলিহী ওয়াসাল্লাম) বলেছেনঃ
أَيُّهَا النَّاسُ، لَا تَشْكُوا عَلِيّاً، فَو اللهِ إِنَّهُ لَأَخْشَنُ فِيذَاتِاللهِ، أَوْ فِي سَبِيلِ اللهِ.
হে লোকসকল! আলীর বিরুদ্ধে নালিশ করতে যেও না। সে আল্লাহর কারণে অথবা তাঁর সন্তুষ্টির জন্যেই কঠোর হয়।
(মুসনাদে আহমাদ ৩:৮৬, আল মুস্তাদরাক-হাকেম ৩:১৩৪)
৪৬. রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াআলিহী ওয়াসাল্লাম)-এর নজির
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াআলিহী ওয়াসাল্লাম) বলেছেনঃ
مَا مِنْ نَبِيٍّ إِلَّا وَ لَهُ نَظِيرٌ فِي اُمَّتِهِ وَ عَلِيٌّ نَظِيرِي.
এমন কোনো নবী নেই যার উম্মতের মধ্যে তাঁর দৃষ্টান্ত কেউ ছিল না। আর আমার দৃষ্টান্ত হলো আলী ইবনে আবি তালিব।
(আর রিয়াদুন নাদ্রাহ ৩:১২০, যাখায়েরুল উকবা: ৬৪)
৪৭. পাপ ধ্বংসকারী
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াআলিহী ওয়াসাল্লাম) বলেছেনঃ
حُبُّ عَلِيِّ بْنِ أَبِي طَالِبٍ يَأْكُلُ الذُّنُوبَ كَمَا تَأْكُلُ النَّارُ الْحَطَبَ.
আলী ইবনে আবি তালিবের ভালোবাসা পাপসমূহকে খেয়ে ফেলে যেভাবে আগুন কাঠকে খেয়ে ফেলে।
(আর রিয়াদুন্ নাদরাহ ৩: ১৯০, কানযুল উম্মাল ১১:৬২১/৩৩০২১, আল ফেরদৌস ২:১৪২/২৭২৩)
৪৮. অন্তরসমূহের কা’বাস্বরূপ
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াআলিহী ওয়াসাল্লাম) ইমাম আলী (আঃ) কে বলেনঃ
أَنْتَ بِمَنْزِلَةِ الْكَعْبَةِ تُؤْتَي وَ لَاتَأتِي.
তুমি কা’বার ন্যায়। সবাই তোমার কাছে আসে কিন্তু তুমি কারো কাছে যাও না।
(উসুদুল গবাহ ৩১৪৬)
৪৯. তার দিকে তাকাও…
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াআলিহী ওয়াসাল্লাম) বলেছেনঃ
َالنَّظَرُ إِلَي وَجْهِ عَلِيٍّ عِبَادَةٌ.
আলীর মুখের দিকে তাকানো ইবাদত।
(আল মানাকিব- ইবনে মাগাযেলী ২০৬/২৪৪-২৪৬ ও ২০৯/২৪৮-২৪৯ ও ২১০/২৫২-২৫৩, আল মুস্তাদরাক-হাকেম ৩:১৪২, আর রিয়াদুন্ নাদ্রাহ ৩:১৯৭)
৫০. রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াআলিহী ওয়াসাল্লাম)-এর ওয়াসী
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াআলিহী ওয়াসাল্লাম) হযরত আলীর প্রতি ইঙ্গিত করে বলেনঃ
هَذَا أَخِي وَ وَصِيِّي وَ خَلِيفَتِي مِنْ بَعْدِي، فَاسْمَعُوا لَهُ وَ أَطِيعُوه.
এ হলো আমার ভাই, আর আমার পরে আমার ওয়াসী এবং খলীফা। তার নির্দেশের প্রতি কর্ণপাত করো এবং তার আনুগত্য করো।
(তারীখে তাবারী ২:৩৩১, মাআলিমুত তানযীল ৪:২৭৯, আল কামিল ফিত তারীখ ২:৬৩, শারহে নাহজুল বালাগা – ইবনে আবিল হাদীদ ১৩:২১১, কানযুল উম্মাল ১৩:১৩১)
৫১. ফেরেশতাকুলের দরূদ
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াআলিহী ওয়াসাল্লাম) বলেছেনঃ
إنَّ الْمَلَائِِكَةَ صَلَّتْ عَلَيَّ و عَلَي عَلِيٍّ سَبعَ سِنِيْنَ قَبْلَ أَنْ يُسْلِمَ بَشَرٌ.
কোনো মানুষ মুসলমান হওয়ার সাত বছর পূর্ব থেকেই ফেরেশতারা আমার এবং আলীর ওপর দরূদ পাঠাতো।
(কানযুল উম্মাল ১১: ৬১৬/৩২৯৮৯, মুখতাসারু তারীখে দামেস্ক -ইবনে মাঞ্জুর ১৭:৩০৫)
৫২. ঈমানের মানদন্ড
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াআলিহী ওয়াসাল্লাম) আলী (আঃ) কে বলেনঃ
لَوْلَاكَ مَا عُرِفَ الْمُؤمِنُونَ مِنْ بَعْدِي.
যদি তুমি না থাকতে তাহলে আমার পরে মুমিনদের শনাক্ত করা যেত না।
(আর রিয়াদুন নাদ্রাহ ৩:১৭৩, আল মানাকিব- ইবনুল মাগাযেলী :৭০/১০১, কানযুল উম্মাল ১৩ :১৫২/৩৬৪৭৭)
৫৩. সর্বদা সত্যের সাথে
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াআলিহী ওয়াসাল্লাম) বলেছেনঃ
عَلِيٌّ مَعَ الْحَقِّ وَ الْحَقُّ مَعَ عَلِيٍّ، لَنْ يَفْتَرِقَا حَتَّي يَرِدَا عَلَيَّ الْحَوضِ يَوْمَ الْقِيَامَةِ.
আলী সত্যের সাথে আর সত্য আলীর সাথে, এই দুটো কখনো একে অপর থেকে বিচ্ছিন্ন হবে না যতক্ষণ না কেয়ামতের দিন হাউজে কাওসারে আমার সাথে মিলিত হবে।
(তারীখে বাগদাদ ১৪:৩২১, ইমাম আলী (আঃ) – ইবনে আসাকির ৩:১৫৩/১১৭২)
৫৪. তাঁর থেকে পৃথক হয়ো না!
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াআলিহী ওয়াসাল্লাম) বলেছেনঃ
مَنْ فَارَقَ عَلِيّاً فَقَدْ فَارَقَنِي وَ مَنْ فَارَقَنِي فَقَدْ فَارَقَ اللهَ عَزَّوَجَلَّ.
যে ব্যক্তি আলী থেকে পৃথক হয় সে আমা থেকে পৃথক হলো আর যে আমা থেকে পৃথক হলো সে মহান আল্লাহ থেকে পৃথক হয়ে গেল।
(আল মানাকিব- ইবনে মাগাযেলী ২৪০/২৮৭, আল মুস্তাদরাক-হাকেম ৩:১২৪, আল মু’জামুল কাবীর- তাবারানী ১২:৩২৩/১৩৫৫৯)
৫৫. মহানবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াআলিহী ওয়াসাল্লাম)-এর জ্ঞানের দরওয়াযা
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াআলিহী ওয়াসাল্লাম) বলেছেনঃ
عَلِيٌّ بَابُ عِلْمِي، وَ مُبَيِّنُ لِاُمَّتِي مَا اُرْسِلْتُ بِهِ مِنْ بَعْديِ، حُبُّهُ اِيمَانٌ، و بُغْضُُهُ نِفَاقٌ وَ النَّظَرُ اِلَيْهِ رَأْفَةٌ.
আলী আমার জ্ঞানের দরওয়াযা। সে আমার পরে আমার রেসালাতকে আমার উম্মতের জন্যে ব্যাখ্যা করবে। তাকে ভালোবাসা ঈমানের পরিচায়ক, তাকে ঘৃণা করা মুনাফিকের পরিচায়ক এবং তার দিকে তাকানো প্রশান্তির কারণ।
(কানযুল উম্মাল ১১:৬১৪/৩২৯৮১, আল ফেরদৌস ৩:৬৫/৪১৮১)
৫৬. আল্লাহর গোপন রহস্য ব্যক্তকারী
জাবের বলেনঃ তায়েফের দিন রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াআলিহী ওয়াসাল্লাম) হযরত আলীকে কাছে ডাকলেন। তাঁকে একপাশে নিয়ে কানে কানে যুক্তি করলেন। লোকজন বললো, ‘‘তাঁর চাচাতো ভাইয়ের সাথে যুক্তি করা কতো দীর্ঘায়িত হলো!’’ রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াআলিহী ওয়াসাল্লাম) বললেন :
مَا اَنْتَجَيْتُهُ ، وَلَكِنْ اللهَ انْتَجَاهُ.
আমি তাঁর সাথে যুক্তি করিনি, বরং আল্লাহ তাঁর সাথে যুক্তি করেছেন।
(আর রিয়াদুন নাদ্রাহ ৩:১৭০, সুনানে তিরমিযী ৫:৬৩৯/৩৭২৬, খাসায়েসে নাসায়ী :৫, ফাযায়েলূস সাহাবা ২:৫৬০/৯৪৫, আল মুস্তাদরাক-হাকেম ৩:১৩০-১৩২)
৫৭. মুমিনদের মাওলা
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াআলিহী ওয়াসাল্লাম) বলেছেনঃ
مَنْ كُنْتُ مَوْلَاهُ فَعَلِيٌّ مَوْلَاهُ، اَللَّهُمَّ وَالِ مَنْ وَالَاهُ وَعَاِد مَنْ عَادَاهُ.
আমি যার মাওলা আলীও তার মাওলা। হে আল্লাহ! যে আলীকে ভালোবাসে তুমি তাকে ভালোবাস আর যে আলীর সাথে শত্রুতা করে তুমি তার সাথে শত্রুতা করো।
(কানযুল উম্মাল ১১:৬০৯/৩২৯৫০, আল মুস্তাদরাক-হাকেম ৩:১০৯, মাজমাউয যাওয়ায়েদ ৯:১০৪, আল মু’জামুল কাবীর-তাবারানী ৪:১৭৩/৪০৫৩, তিরমিযী ৫:৬৩৩/৩৭১৩, মুসনাদে আহমাদ ১:৮৪, ৮৮, ১১৯, ১৫২, ৩৩১ ও ৪:২৮১, ৩৬৮, ৩৭০, ৩৭২ ও ৫:৩৪৭, ৩৫৮, ৩৬১, ৩৬৬, ৪১৯)
৫৮. তোমার জন্য সেটাই চাই!
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াআলিহী ওয়াসাল্লাম) বলেছেনঃ
يَا عَلِيُّ! إِنِّي اُحِبُّ لَكَ مَا اُحِبُّ لِنَفْسِي، وَ أَكْرَهُ لَكَ مَا أَكْرَهُ لِنَفْسِي.
হে আলী! আমি নিজের জন্যে যা পছন্দ করি তোমার জন্য সেটাই পছন্দ করি। আর আমার চোখে যা অপছন্দনীয় তোমার জন্যও সেটা অপছন্দ করি।
(মুসনাদে আহমাদ ১:১৪৬, সুনানে তিরমিযী ২:৭২/২৮২, আল মুনাতাখাবু মিন মুসনাদে আব্দু ইবনে হামীদ :৫২/৬৭)
৫৯. বেহেশত-দোযখের বণ্টনকারী
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াআলিহী ওয়াসাল্লাম) বলেছেনঃ
يَا عَلِيُّ، إِنَّكَ قَسِيمُ الْجَنَّةِ وَ النَّارِ وَ إِنَّكَ تَقْرَعُ بَابَ الْجَنَّةِ، فَتَدْخُلَهَا بِلَا حِسَابٍ.
হে আলী! তুমি (মানুষকে) বেহেশত ও দোযখের (মধ্যে) বণ্টনকারী। অতঃপর তুমি নিজে বেহেশতের দরওয়াযায় টোকা দিবে এবং হিসাব ছাড়াই প্রবেশ করবে।
(আল মানাকিব- ইবনুল মাগাযেলী ৬৭/৯৭, আল মানাকিব-খারেযমী : ২০৯, ফারায়িদুস সামতাঈন ১:৩২৫/২৫৩)
৬০. তোমাকে যারা ভালোবাসে তাদের প্রতি সুসংবাদ
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াআলিহী ওয়াসাল্লাম) বলেছেনঃ
يا عَلِيّ، طُوبَي لِمَنْ أَحَبَّكَ وَ صَدَّقَ فِيكَ وَ وَيْلٌ لِمَنْ أَبْغَضَكَ وَ كَذَّبَ فِيكَ.
হে আলী! সুসংবাদ তার প্রতি যে তোমাকে ভালোবাসে এবং তোমাকে সত্য বলে জানে। আর দুর্ভাগ্য তাদের প্রতি যারা তোমার সাথে শত্রুতা করে এবং তোমার ব্যাপারে মিথ্যা আরোপ করে।
(তারীখে বাগদাদ ৯:৭২, ওয়াসীলাতুল মুতাআবেবদীন খ:৫, আল কিস্ম ২:১৬১, উসুদুল গবাহ ৪:২৩)
৬১. ওয়াসিগণের মধ্যে সর্বোত্তম
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াআলিহী ওয়াসাল্লাম) হযরত ফাতিমাকে বলেনঃ
وَصِيِّي خَيْرُ الْأَوْصِيَاءِ، وَ أَحَبُّهُمْ إِلَي اللهِ عَزَّ وَجَلَّ وَ هُوَ بَعْلُكَ.
ওয়াসিগণের মধ্যে আমার ওয়াসীই সর্বোত্তম এবং আল্লাহর নিকটে তাদের মধ্যে সবচেয়ে প্রিয়তম। আর সে হলো তোমার স্বামী।
(মাজমাউয যাওয়ায়েদ ৯:১৬৫, যাখায়িরুল উকবা :১৩৬)
৬২. মহানবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াআলিহী ওয়াসাল্লাম)-এর ভাই ও সহযোগী
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াআলিহী ওয়াসাল্লাম) বলেছেনঃ
اَللَّهُمَّ إنِّيأَقُولُكَمَاقَالَأَخِيمُوسَي: اَللَّهُمَّ اجْعَلْ لِيوَزِيراً مِنْ أَهْلِيأَخِيعَلِيّاً اُشْدُدْ بِهِ أزْرِي وَ أَشْرِكْهُ فِيأَمْرِي كَيْ نُسَبِّحَكَ كَثِيراً وَ نَذْكُرَكَ كَثيراً، إِنَّكَ كُنْتَ بِنَا بَصِيراً.
হে আল্লাহ! আমিও আমার ভাই মুসার মতো বলছি, ‘‘হে খোদা! আমার জন্য আমার পরিবারের মধ্যে থেকে কাউকে সাহায্যকারী হিসেবে নিয়োগ করো। আমার ভাই আলীকে যার দ্বারা আমার শক্তি মজবুত হয়
এবং আমাকে সাহায্য করে। যাতে তোমার মহিমা বর্ণনা করতে সক্ষম
হই এবং তোমার অধিক ইবাদতে নিমগ্ন হতে পারি । অবশ্য তুমি আমাদের ওপর দৃষ্টি নিবদ্ধকারী।
(আর রিয়াদুন নাদরাহ ৩:১১৮, ফাযায়িলুস সাহাবা ২:৬৭৮/১১৫)
৬৩. নিরাপত্তা এবং ঈমান
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াআলিহী ওয়াসাল্লাম) হযরত আলী (আঃ) কে বলেনঃ
مَنْ أَحَبَّكَ حُفَّ بِالاَمْنِ وَ الْإِيمَانِ، وَ مَنْ أَبْغَضَكَ أَمَاتَهُ اللهُ مِيْتَةَ الْجَاهِلِيَّةِ.
যে ব্যক্তি তোমাকে ভালোবাসবে, নিরাপত্তা ও ঈমান তাকে আবিষ্ট করবে। আর যে তোমার প্রতি শত্রুতা করবে আল্লাহ তাকে জাহেলিয়াতের মৃত্যু দান করবেন।
(কানযুল উম্মাল ১১:৬০৭/৩২৯৩৫, আল মু’জামুল কাবীর-তাবারানী ১১:৬৩/১১০৯২)
৬৪. সীরাতুল মুস্তাকীম পার হওয়ার অনুমতি
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াআলিহী ওয়াসাল্লাম) বলেছেনঃ
إِذَا كَانَ يَوْمُ الْقِيَامَةِ وَ نُصِبَ الصِّرَاطُ عَلَي شَفِيرِ جَهَنَّم لَمْ يَجُزْ إلاَّ مَنْ مَعَهُ كِتَابُ عَلِيّ بْنِ أَبِي طَالِبٍ.
যখন কেয়ামত উপস্থিত হবে এবং জাহান্নামের অগ্নিপার্শ্বে পুলসিরাত টাঙ্গানো হবে তখন শুধু কেবল যার সঙ্গে আলী (আঃ)-এর পত্র থাকবে সে ছাড়া কারো তা পার হবার অনুমতি থাকবে না।
(আল মানাকিব-ইবনুল মাগাযেলী ২৪২, ২৮৯, ফারায়িদুস সামতাইন ১:২২৮, ২৮৯)
৬৫. আলী (আঃ)-এর সহচরদের জন্য দোয়া
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াআলিহী ওয়াসাল্লাম) বলেছেনঃ
اَللّهُمَّ انْصُرْ مَنْ نَصَرَ عَلِيّاً، اَللَّهُمَّ أَكْرِمْ مَنْ أَكْرَمَ عَلِيّاً ، اَللَّهُمَّ أخْذُلْ مَنْ خَذَلَ عَلِيّاً.
হে আল্লাহ! যে ব্যক্তি আলীকে সাহায্য করে তুমি তাকে সাহায্য করো, যে ব্যক্তি তাকে সম্মান করে তুমি তাকে সম্মান করো আর যে তাকে লাঞ্ছিত করে তুমি তাকে লাঞ্ছিত করো।
(কানযুল উম্মাল ১১:৬২৩/৩৩০৩৩, আল মু’জামুল কাবীর – তাবারানী ১৭:৩৯,৮২)
৬৬. আল্লাহর সবচেয়ে প্রিয় বান্দা
আনাস ইবনে মালেক বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াআলিহী ওয়াসাল্লাম)-এর জন্য মুরগীর গোশত দ্বারা খাবার প্রস্ত্তত করা হয়েছিল। হুজুর (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াআলিহী ওয়াসাল্লাম) বললেনঃ
اَللَّهُمَّ ائْتِنِي بِاَحَبِّ خَلْقِكَ إِلَيْكَ يَأْكُلُ مَعِي هَذَا الطَّيْرَ، فَجَاءَ عَلِيٌّ فَأَكَلَ مَعَهُ.
হে আল্লাহ! তোমার সবচেয়ে প্রিয় বান্দাকে পৌঁছে দাও যে আমার সাথে এই মুরগীর গোশত ভক্ষণে অংশ নেবে। এমন সময় আলী এসে পৌঁছলেন এবং হুজুরের দস্তরখানায় বসে পড়লেন।
(সুনানে তিরমিযী ৫:৬৩৬/৩৭২১, ফাযায়িলুস সাহাবা ২:৫৬০/৯৪৫, খাসায়েসে নাসায়ী : ৫, আল মুস্তাদরাক – হাকেম ৩:১৩০-১৩২)
৬৭. হেদায়াতের পতাকা
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াআলিহী ওয়াসাল্লাম) বলেছেনঃ
إِنَّ رَبَّ الْعَالَمِيْنَ عَهِدَ إِلَيَّ عَهْداً فِي عَلِيِّ بْنِ أَبِي طَالِبٍ ، فَقَالَ: إنَّهُ رَايَةُ الْهُدَي، وَ مَنارُ الْاِيْمَانِ، وَ اِمَامُ أَوْلِيَائِي، وَ نُورُ جَمِيعِ مَنْ أَطَاعَنِي.
বিশ্ব প্রতিপালক আলীর ব্যাপারে আমার সাথে কঠিনভাবে অঙ্গীকারাবদ্ধ হয়েছেন। অতঃপর আমাকে বলেছেন: নিশ্চয় আলী হলো হেদায়েতের পতাকা, ঈমানের শীর্ষচূড়া, আমার বন্ধুগণের নেতা আর আমার আনুগত্যকারী সকলের জ্যোতিস্বরূপ।
(হিল্লিয়াতুল আউলিয়া ১:৬৬, শারহে নাহজুল বালাগা – ইবনে আবীল হাদীদ ৯:১৬৮)
৬৮. রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াআলিহী ওয়াসাল্লাম)-এর উত্তরসূরি
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াআলিহী ওয়াসাল্লাম) বলেছেনঃ
لِكُلِّ نَبِيٍّ وَصِيٌّ وَ وَارِثٌ، وَ إَِنَّ عَلِيّاً وَصِيِّي وَ وَارِثِي.
প্রত্যেক নবীর ওয়াসী এবং উত্তরসূরি থাকে। আর আমার ওয়াসী এবং উত্তরসূরি হলো আলী।
(আর রিয়াদুন নাদরাহ ৩:১৩৮, আল ফেরদৌস ৩:৩৩৬/৫০০৯, ইমাম আলী (আঃ) – ইবনে আসাকির ৩: ৫/১০৩০-১০৩১)
৬৯. সত্যিকারের সৌভাগ্য
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াআলিহী ওয়াসাল্লাম) বলেছেনঃ
إنَّ السَّعِيدَ كُلَّ السَّعِيدِ، حَقَّ السَّعِيدِ، مَنْ أحَبَّ عَلِيّاً فِي حَيَاتِهِ وَ بَعْدَ مَوتِهِ.
নিশ্চয় সবচেয়ে সৌভাগ্যবান এবং সত্যিকারের সৌভাগ্যবান সেই ব্যক্তি যে আলীকে তার জীবদ্দশায় এবং তার মৃত্যুর পরে ভালোবাসে।
(আর রিয়াদুন নাদরাহ ৩:১৯১, ফাযায়িলুস সাহাবা ২:৬৫৮/১১২১, আল মু’জামুল কাবীর-তাবারানী ২২: ৪১৫/১০২৬, মাজমাউয যাওয়ায়েদ ৯:১৩২)
৭০. রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াআলিহী ওয়াসাল্লাম)-এর সাহায্যকারী
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াআলিহী ওয়াসাল্লাম) বলেছেনঃ
لَمَّا عُرِجَ بِي رَأَيْتُ عَلَي سَاقِ الْعَرْشِ مَكْتُوباً: لَا إِِلَهَ إِِلَّا اللهُ، مُحَمَّدٌرَسُولُ اللهِ، أَيَّدْتُهُ بِعَلِيٍّ، نَصَرْتُهُ بِعَلِيٍّّ.
যখন আমাকে মি’রাজে নিয়ে যাওয়া হয় তখন আরশের পায়ায় দেখলাম লেখা রয়েছে ‘‘আল্লাহ ছাড়া কোনো উপাস্য নেই, মুহাম্মদ
ধন্যবাদ অত্যন্ত জ্ঞানগর্ব, দলিল্ভিত্তিক এবং সময়োপযোগী বক্তব্যের জন্যে। এটি খুবই চমৎকার একটি আলোচনা যাতে উভয়পক্ষের ভারসাম্য অত্যন্ত সুচারুভাবে রক্ষা করা হয়েছে। সাথে সাথে এ ব্যাপারে আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাতের ফায়সালাকে গুরুত্বের সাথে উপস্থাপন করা হয়েছে।
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ
رَحِمَ اللهُ عَلِيّاً ، اَللَّهُمَّ أَدِرِ الْحَقَّ مَعَهُ حَيْثُ دَارَ.
আল্লাহ আলীর ওপর রহমত বর্ষণ করুন! হে আল্লাহ! আলী যেখানেই আছে সত্যকে তার সাথে ঘুরিয়ে দিন।
(আল মুস্তাদরাক-হাকেম ৩:১২৪, সুনানে তিরমিযী ৫:৬৩৩/৩৭১৪, ইমাম আলী (আঃ) – ইবনে আসাকির, ৩:১৫১/১১৬৯-১১৭০)
Leave a Reply