রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের আনুগত্যই আল্লাহর আনুগত্য

পোষ্টটি অন্যকে পড়ার সুযোগ করে দিতে শেয়ার করুন প্লিজ।
ডঃ আব্দুল বাতেন মিয়াজী
————
মউলোভী তারেক মনোয়ার একের পর এক ঈমানহরণকারী বয়ান দিয়ে যাচ্ছে। যেমনঃ
১। কোন সৃষ্টির আনুগত্য করা শিরক। নাউজুবিল্লাহ! মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কি সৃষ্টি নন? তাঁর আন্যগত্য করলে শিরক হলে কুরআনের অসংখ্য আয়াতকে অস্বীকার করা হয়। (নিচে দলীল দেখুন।)
২। কালেমা তায়্যেবার দুটি অংশ তাউহিদ ও রিসালাত لَا إِلٰهَ إِلَّا الله مُحَمَّدٌ رَسُولُ الله পাশাপাশি নাকি কোন হাদিস দ্বারা স্বীকৃত নয়।
৩। এভাবে لَا إِلٰهَ إِلَّا الله مُحَمَّدٌ رَسُولُ الله পাশাপাশি লিখলে নাকি আল্লাহর সাথে মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে সমান মর্যাদা দেয়া হয়। প্রথম অংশের নিচে শেষের অংশ লিখবে হবে।
৪। আল্লাহ ও মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের নাম পাশাপাশি লিখা শিরক।যেমনটি মসজিদে থাকে। তা নাকি ঠিক নয়। এটা নাকি মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামও আল্লাহ হয়ে যান। নাউজুবিল্লাহ। কেমন অজ্ঞ এই মউলোভী?

নীচের লিংক থেকে দেখুন এই বেয়াদব যেসব ভ্রান্ত আক্বীদা পোষণ করে তাঁর নমুনা
https://www.facebook.com/photo.php?v=616058968492748&set=vb.100002659503591&type=2&theater

মানব জাতির সাফল্য লাভের অন্যতম উপায় হচ্ছে আল্লাহ ও তাঁর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের আনুগত্য করা এবং জীবনের সকল ক্ষেত্রে কেবল কুরআন-হাদীছকে মেনে নেওয়া।

মহান আল্লাহ বলেন, قُلْ أَطِيْعُوا اللهَ وَأَطِيْعُوا الرَّسُوْلَ فَإِنْ تَوَلَّوْا فَإِنَّمَا عَلَيْهِ مَا حُمِّلَ وَعَلَيْكُمْ مَا حُمِّلْتُمْ وَإِنْ تُطِيعُوْهُ تَهْتَدُوْا وَمَا عَلَى الرَّسُوْلِ إِلَّا الْبَلاَغُ الْمُبِيْنُ- “বল! তোমরা আল্লাহর আনুগত্য কর এবং রাসূলের আনুগত্য কর। অতঃপর যদি তোমরা মুখ ফিরিয়ে নাও, তবে তাঁর উপর অর্পিত দায়িত্বের জন্য সে দায়ী এবং তোমাদের উপর অর্পিত দায়িত্বের জন্য তোমরা দায়ী। আর তোমরা তাঁর আনুগত্য করলে সৎপথ পাবে, রাসূলের কর্তব্য হচ্ছে শুধু স্পষ্টভাবে পৌঁছে দেয়া।” (নূর ২৪/৫৪)।

রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের আনুগত্য করা এবং তাঁর অনুসরণে ছালাত প্রতিষ্ঠা করা ও যাকাত দেওয়ার মধ্যেই মানব জীবনে শান্তি ফিরে আসবে। মহান আল্লাহ বলেন, وَأَقِيْمُوا الصَّلاَةَ وَآتُوا الزَّكَاةَ وَأَطِيْعُوا الرَّسُوْلَ لَعَلَّكُمْ تُرْحَمُوْنَ- “তোমরা ছালাত ক্বায়েম কর, যাকাত প্রদান কর এবং রাসূলের আনুগত্য কর, যাতে তোমরা অনুগ্রহ প্রাপ্ত হ’তে পার।” (নূর ২৪/৫৬)।

রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের আনুগত্য করলে, আল্লাহরই আনুগত্য করা হয়। যেমন মহান আল্লাহ বলেন, مَنْ يُّطِعِ الرَّسُوْلَ فَقَدْ أَطَاعَ اللهَ “যে কেউ রাসূলের আনুগত্য করে থাকে, নিশ্চয়ই সে আল্লাহরই আনুগত্য করে থাকে” (নিসা ৪/৮০)।

মানব জাতির জন্য আল্লাহ এবং তাঁর রাসূলেরই আনুগত্য করা আবশ্যক। আল্লাহ বলেন, يَا أَيُّهَا الَّذِيْنَ آمَنُوْا أَطِيْعُوا اللهَ وَأَطِيْعُوا الرَّسُوْلَ وَأُوْلِي الْأَمْرِ مِنْكُمْ فَإِنْ تَنَازَعْتُمْ فِيْ شَيْءٍ فَرُدُّوْهُ إِلَى اللهِ وَالرَّسُوْلِ إِنْ كُنْتُمْ تُؤْمِنُوْنَ بِاللهِ وَالْيَوْمِ الْآخِرِ ذَلِكَ خَيْرٌ وَأَحْسَنُ تَأْوِيْلاً- “হে মুমিনগণ! তোমরা আল্লাহর আনুগত্য করো ও রাসূলের আনুগত্য করো এবং তোমাদের অন্তর্গত ‘ঊলুল আমর’ তথা আদেশ দাতাগণের। অতঃপর যদি তোমাদের মধ্যে কোন বিষয়ে ম­তবিরোধ দেখা দেয়, তবে তা আল্লাহ ও রাসূলের দিকে ফিরিয়ে দাও, যদি তোমরা আল্লাহ ও পরকালের প্রতি বিশ্বাস করে থাক। এটাই কল্যাণকর ও শ্রেষ্ঠতর সমাধান।” (নিসা ৪/৫৯)।

মানব জীবনের সকল প্রকার আমল কুরআন-হাদীছ মোতাবেক হতে হবে। এর মাঝেই মানবতার সার্বিক সফলতা নিহিত আছে। আর আমল কুরআন-সুন্নাহ অনুসরণে না হলে তা নিঃসন্দেহে বাতিল বলে গণ্য হবে। মহান আল্লাহ বলেন, يَا أَيُّهَا الَّذِيْنَ آمَنُوْا أَطِيْعُوا اللهَ وَأَطِيْعُوا الرَّسُوْلَ وَلاَ تُبْطِلُوْا أَعْمَالَكُمْ- “হে মুমিনগণ! তোমরা আল্লাহর আনুগত্য কর এবং রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের আনুগত্য কর, আর (তা না করে) তোমাদের আমল সমূহ বিনষ্ট করো না।” (মুহাম্মাদ ৪৭/৩৩)।

মানুষকে সকল ক্ষেত্রে আল্লাহ এবং তাঁর রাসূলের ফায়ছালা গ্রহণ করতে হবে, তাহলে তারা সফলকাম হবে। আর আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের বিরোধিতা করলে পথভ্রষ্ট হবে। মহান আল্লাহ বলেন, وَمَا كَانَ لِمُؤْمِنٍ وَلاَ مُؤْمِنَةٍ إِذَا قَضَى اللهُ وَرَسُوْلُهُ أَمْرًا أَنْ يَكُوْنَ لَهُمُ الْخِيَرَةُ مِنْ أَمْرِهِمْ وَمَنْ يَعْصِ اللهَ وَرَسُوْلَهُ فَقَدْ ضَلَّ ضَلاَلاَ مُبِيْنًا “আল্লাহ ও তাঁর রাসূল কোন বিষয়ে ফায়ছালা করলে কোন মুমিন পুরুষ কিংবা মুমিন নারীর নিজেদের ব্যাপারে অন্য কোন সিদ্ধান্তের ইখতিয়ার থাকবে না। কেউ আল্লাহ ও তাঁর রাসূলকে অমান্য করলে সে তো স্পষ্টই পথভ্রষ্ট হবে।” (আহযাব ৩৩/৩৬)।

জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের অমিয় বাণী গ্রহণ করলে বিশ্বের পথহারা মানুষ সঠিক পথ পাবে। মহান আল্লাহ বলেন, فَلاَ وَرَبِّكَ لاَ يُؤْمِنُوْنَ حَتَّى يُحَكِّمُوْكَ فِيْمَا شَجَرَ بَيْنَهُمْ ثُمَّ لاَ يَجِدُوْا فِيْ أَنْفُسِهِمْ حَرَجًا مِمَّا قَضَيْتَ وَيُسَلِّمُوْا تَسْلِيْمًا “অতএব তোমার প্রতিপালকের শপথ! তারা কখনও মুমিন হ’তে পারবে না, যে পর্যন্ত তোমাকে তাদের আভ্যন্তরীণ বিরোধের বিচারক হিসাবে মেনে না নিবে, তৎপর তুমি যে বিচার করবে তা দ্বিধাহীন অন্তরে গ্রহণ না করবে এবং ওটা শান্তভাবে পরিগ্রহণ না করবে।” (নিসা ৪/৬৫)।

আল্লাহ এবং রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে অনুসরণের মাধ্যমেই মানব জাতি সর্বোত্তম মর্যাদা পাবে। মহান আল্লাহ বলেন, وَمَنْ يُطِعِ اللهَ وَالرَّسُوْلَ فَأُوْلَئِكَ مَعَ الَّذِيْنَ أَنْعَمَ اللهُ عَلَيْهِمْ مِنَ النَّبِيِّيْنَ وَالصِّدِّيْقِيْنَ وَالشُّهَدَاءِ وَالصَّالِحِيْنَ وَحَسُنَ أُوْلَئِكَ رَفِيْقًا “আর যে কেউ আল্লাহ ও রাসূলের অনুগত হয়, তবে তারা ঐ ব্যক্তিদের সঙ্গী হবে যাদের প্রতি আল্লাহ অনুগ্রহ করেছেন; অর্থাৎ নবীগণ, সত্য সাধকগণ, শহীদগণ ও সৎকর্মশীলগণ। আর এরাই সর্বোত্তম সঙ্গী।” (নিসা ৪/৬৯)। পক্ষান্তরে যে ব্যক্তি কুরআন-সুন্নাহর বিরুদ্ধাচরণ করবে সে জাহান্নামে যাবে। মহান আল্লাহ বলেন, وَمَنْ يُشَاقِقِ الرَّسُوْلَ مِنْ بَعْدِ مَا تَبَيَّنَ لَهُ الْهُدَى وَيَتَّبِعْ غَيْرَ سَبِيْلِ الْمُؤْمِنِيْنَ نُوَلِّهِ مَا تَوَلَّى وَنُصْلِهِ جَهَنَّمَ وَسَاءَتْ مَصِيْرًا “আর সুপথ প্রকাশিত হওয়ার পর যে রাসূলের বিরুদ্ধাচরণ করে এবং বিশ্বাসীগণের বিপরীত পথের অনুগামী হয়, তবে সে যাতে অভিনিবিষ্ট আমি তাকে তাতেই প্রত্যাবর্তিত করব ও তাকে জাহান্নামে নিক্ষেপ করব এবং এটা নিকৃষ্টতর প্রত্যাবর্তন স্থল।” (নিসা ৪/১১৫)।

কুরআন এবং ছহীহ হাদীছের কথা শুনার সাথে সাথে তা মেনে নেওয়ার মধ্যেই মানব জাতির সফলতা। মহান আল্লাহ বলেন, إِنَّمَا كَانَ قَوْلَ الْمُؤْمِنِيْنَ إِذَا دُعُوْا إِلَى اللهِ وَرَسُوْلِهِ لِيَحْكُمَ بَيْنَهُمْ أَنْ يَقُوْلُوْا سَمِعْنَا وَأَطَعْنَا وَأُوْلَئِكَ هُمُ الْمُفْلِحُوْنَ، وَمَنْ يُطِعِ اللهَ وَرَسُوْلَهُ وَيَخْشَ اللهَ وَيَتَّقْهِ فَأُوْلَئِكَ هُمُ الْفَائِزُوْنَ- “মুমিনদের উক্তি তো এই, যখন তাদের মধ্যে ফায়ছালা করে দেবার জন্য আল্লাহ এবং তাঁর রাসূলের দিকে আহবান করা হয় তখন তারা বলবে, আমরা শ্রবণ করলাম ও মান্য করলাম, আর তারাই সফলকাম। যারা আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের আনুগত্য করে, আল্লাহকে ভয় করে ও তাঁর অবাধ্যতা হতে সাবধান থাকে তারাই সফলকাম” (নূর ২৪/৫১-৫২)।

আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের আনুগত্য করলে জান্নাতে যাওয়া যাবে, বিরুদ্ধাচরণ করলে জাহান্নামে যেতে হবে। যেমন হাদীছে এসেছে, আবু হুরায়রাহ (রাঃ) হতে বর্ণিত যে, রাসূল (ছাঃ) বলেছেন, كُلُّ أُمَّتِىْ يَدْخُلُوْنَ الْجَنَّةَ، إِلاَّ مَنْ أَبَى. قَالُوْا يَا رَسُوْلَ اللهِ وَمَنْ يَأْبَى، قَالَ مَنْ أَطَاعَنِىْ دَخَلَ الْجَنَّةَ، وَمَنْ عَصَانِىْ فَقَدْ أَبَى- “আমার সকল উম্মতই জান্নাতে প্রবেশ করবে, কিন্তু যে অস্বীকার করবে (সে নয়)। তারা বললেন, কে অস্বীকার করে? তিনি বললেন, যারা আমার অনুসরণ করবে তারা জান্নাতে প্রবেশ করবে, আর যে আমার অবাধ্য হবে সেই অস্বীকার করে।” (বুখারী হা/৭২৮০)।

কুরআন ও সুন্নাহর অনুসরণ করলে মানুষ সঠিক পথ পাবে, বিরোধিতা করলে পথভ্রষ্ট হবে। হুযায়ফাহ (রাঃ) হ’তে বর্ণিত, তিনি বলেন, يَا مَعْشَرَ الْقُرَّاءِ اسْتَقِيْمُوْا فَقَدْ سُبِقْتُمْ سَبْقًا بَعِيْدًا فَإِنْ أَخَذْتُمْ يَمِيْنًا وَشِمَالاً، لَقَدْ ضَلَلْتُمْ ضَلاَلاً بَعِيْدًا “হে কুরআন পাঠকারীগণ! তোমরা (কুরআন ও সুন্নাহর উপর) সুদৃঢ় থাক। নিশ্চয়ই তোমরা অনেক পশ্চাতে পড়ে আছ। আর যদি তোমরা ডান দিকের কিংবা বাম দিকের পথ অনুসরণ কর, তাহলে তোমরা সঠিক পথ হতে বহু দূরে সরে পড়বে।” বুখারী হা/৭২৮২

আল্লাহ যেন এরকম ভ্রান্ত মউদুদি মার্কা, লা-মাহজহাবী ঈমানহরণকারী আলেমের মিথ্যা থেকে আমাদের ঈমান ও আক্বীদাকে হেফাজত করেন। আমীন!

পোষ্টটি ভালো লেগে থাকলে আপনার মূল্যবান মতামত জানান প্লিজ!

Leave a Comment