আহলে বাইত সম্পর্কে সঠিক না জানার ফল – ডক্টর আব্দুল বাতেন মিয়াজী
শাম দেশ থেকে এক লোক এসেছিল মদিনায়। শাম মানে সিরিয়া। তখন সিরিয়া, জর্ডান, ফিলিস্তিন, লেবাননকে একসাথে শাম দেশ বলা হতো। এখনো সিরিয়ার মানুষ তাদের দেশকে শাম শরীফ বলে থাকে। তৎকালীন মুসলিম সাম্রাজ্যের রাজধানী ছিল দামেস্কে। আরবিতে একে মুসলিম খেলাফত বলা হলেও আদতে এটা ছিল রাজতন্ত্র। এ নিয়ে রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের দুটি হাদিস রয়েছে। খেলাফত ৩০ বছর স্থায়ী হবে। এরপর হবে রাজতন্ত্র। উমাইয়্যা রাজতন্ত্র। সেই দামেস্ক থেকে লোকটি এসেছিল মদিনায়। মদিনায় সে লক্ষ্য করলো সবাই একজনকে খুব সম্মান করছিল। কিন্তু যাঁকে লোকজন সম্মান করছিল তিনি না কোনও আমীর, না কোনও শাহজাদা। অথচ তাঁকে সবাই তাজিমের সাথে ঘিরে চলছিল। লোকটি জানতে চাইলো, ইনি কে? লোকে তাঁকে এতো তাজিম করছে কেন? লোকজন বলল, ইনি হাসান ইবনে আলী [রাদ্বিয়াল্লাহু আনহুমা]। এ কথা শুনেই লোকটি গালিগালাজ শুরু করলো, “তুমিও খারাপ আর তোমার বাবাও খারাপ।” [[১] ফতহুল বারী ৮ম খণ্ড, বুখারি শরীফের বিখ্যাত ব্যাখ্যাগ্রন্থ – হাদিস ৩৭০১ এর ব্যাখ্যায় আল্লামা ইবনে হাজার আস্কালানী রহঃ বলেন, ওই সময় উয়ামিয়্যারা মিম্বরে মিম্বরে আলী রাদ্বিয়াল্লাহু আনহুকে গালি দেয়া সুন্নতে পরিণত করেছিল।] লক্ষ্য করুন, লোকটি সিরিয়ার। সে প্রতি শুক্রবার মসজিদের মিম্বরে গালি শুনে অভ্যস্ত। তার কাছে মওলা আলীকে গালি দেয়া একটি স্বাভাবিক ব্যাপার ছিল। সেখানকার শাসকেরা তো এটাই করে থাকে। সে মনে করেছিল মওলা আলীকে গালি দেয়া বুঝি সওয়াবের কাজ। না হলে মসজিদের মিম্বরে কেন গালাগালি হবে? নিশ্চয়ই আলী মানেই খুব খারাপ কেউ। নাউজুবিল্লাহ।
মদিনার মানুষজন লোকটির আচরণে ক্ষুব্ধ হল। তাদেরকে থামিয়ে দিলেন হাসান ইবনে আলী রাদ্বিয়াল্লাহু আনহুমা। তিনি লোকটিকে জিজ্ঞেস করলেন, তুমি কি আহলে বাইতের কথা শুনো নাই? লোকটি সদম্ভে উত্তর দিল, “হ্যা, শুনেছি, আহলে বাইত তো আমিরুল মুমেনীন মুয়াবিয়া আর তার শাহজাদা এজিদ ইবনে মুয়াবিয়া।” লোকজন আরো ক্ষিপ্ত হল। হাসান রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু সবাইকে শান্ত করলেন। তিনি বললেন, আমি তোমাকে আমার ঘরে মেহমান বানাতে চাই। লোকটি রাজি হচ্ছিল না। যাঁকে সে একটু আগেও গালিগালাজ করেছে, তিনিই কিনা এখন তাকে মেহমান হিসেবে ঘরে নিতে চাইছেন। রাজি না হওয়াই স্বাভাবিক। তবুও অনেক পিড়াপিড়িতে লোকটি রাজি হল। তিনদিন থাকলো আহলে বাইতের ঘরে মেহমান হয়ে। লোকটি পরে অনুতপ্ত হয়েছিল। লোকটির দোষ ছিলা না। কেননা, সে মানুষের মুখে যা শুনে এসেছে, তাই সত্য বলে গ্রহণ করেছিল। আহলে বাইতের ব্যাপারে আল্লাহ পাক বলেছেন, নবীজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াআলিহী ওয়াসাল্লাম বলেছেন, সাহাবা রাদ্বিয়াল্লাহু আনহুম বলেছেন। সে শুনে এসেছে আহলে বাইতকে তাজিম করতে হয়। কারা আহলে বাইত? রাজা আর শাহজাদা যে আহলে বাইত হবে এটাই তো মনে করা স্বাভাবিক। যেমন শুনেছিল তেমনি বিশ্বাস করেছিল সে।
“যারা জানে আর যারা জানে না, তারা কি সমান?” [[২] সূরা যুমার: আয়াত: ৯] প্রশ্নটি আমার নয়, এ প্রশ্নটি মহান আল্লাহ পাকের। আমরা বাতিলদের বিরুদ্ধে অভিযোগ করি, তারা সঠিক জানে না। ফলে এরা বিভিন্ন বিষয়ে ফেতনা সৃষ্টি করে। সত্যকে মিথ্যা আর মিথ্যাকে সত্য বলে প্রচার করে। আমাদের প্রিয় বিষয় হল আক্ব্বীদা। নূর, ইলমে গায়েব, হায়াতুন্নাবী [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াআলিহী ওয়াসাল্লাম] এবং হাযির-নাযির। এ বিষয়গুলো আমাদের নখদর্পণে। কেউ অস্বীকার করলে আমরা মুখস্ত এক ডজন রেফারেন্স দিয়ে দিতে পারি। যদিও আমাদের অপরিপক্বতা এবং সময়োপযোগী উদ্যোগের অভাবে যথেষ্ট দলিল থাকার পরও এই বিষয়গুলো মানুষের অন্তরে প্রবেশ করাতে পারিনি। সারাদেশ ছেয়ে গেছে ওহাবীপন্থি আক্বীদায়। অল্প কিছু জায়গায় আমরা এই বিষয়গুলো নিয়ে জ্বালাময়ী বক্তৃতা দিতে অভ্যস্ত। অপরদিকে তারা সারা দেশে এমন প্রতিষ্ঠিত বিষয়গুলোকে বিদআত আর শিরক হিসেবে মানুষকে গিলিয়েছে। তাও সার্থক ভাবে। যেমন তৎকালীন উমাইয়্যারা আহলে বাইতের নামনিশানা মুছে দিতে সচেষ্ট ছিল। কেবল উমাইয়্যারা নয়, আহলে বাইতের ভালোবাসার কথা বলে ক্ষমতায় আসা আব্বাসীয়রাও একই ধারা অব্যাহত রেখেছিল। একটু কম আর বেশি, এই পার্থক্য।
কাজেই যে জানে আর যে জানে না, এরা কখনোই এক হতে পারে না। সেই যুগ থেকেই আহলে বাইত সম্পর্কে মানুষকে সত্য জানতে দেয়া হয়নি। মিথ্যা দিয়ে সত্যকে ঢেকে রাখা হয়েছিল। অথচ আল্লাহ পাক বলেন, “সত্য সমাগত, মিথ্যা দূরীভূত। নিশ্চয়ই মিথ্যা দূরীভূত হবারই [[৩] বাণী ইসরাঈল: ১৭:৮১]। রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াআলিহী ওয়াসাল্লাম বারবার তাঁর আহলে বাইত সম্পর্কে উম্মতদের সতর্ক করেছেন, “আমার পর তোমরা আমার আহলে বাইতের সাথে কী রকম আচরণ করো আমি দেখবো” [[৪] সূনান আত তিরমিজী: ৩৭৮৮]। আল্লাহ পাক নিজেও কুরআনে নবীজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াআলিহী ওয়াসাল্লামকে নবুয়তের বিনিময় হিসেবে কেবল তাঁর সম্মানিত আহলে বাইতের প্রতি লোকদের ভালোবাসা চাইতে বলেছেন। রাসুলের বিদায়ের পর আল্লাহর কুরআন এবং আহলে বাইতকে ধরে রাখার কথা বারবার তিনি জোর দিয়ে বলেছেন। আর কুরআন ও আহলে বাইত সেই হাউসে কাউসার পর্যন্ত এক সাথে থাকার কথাও তিনি ঘোষণা দিয়ে গেছেন। অথচ উম্মত সবার আগে আহলে বাইতকেই ছেড়ে দিয়েছে।
আহলে বাইতের জীবনকাল গোপন রাখার বিষয় নয়। এগুলো ইতিহাস। মওলা আলী রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু কীভাবে খেলাফত পরিচালনা করেছেন তা আমাদের অবগত হওয়া জরুরি। কেননা, তাঁর জীবন মুমিনদের জন্য অনুসরণীয়। ইমাম হাসান কীভাবে এবং কেন খেলাফতের দাবি প্রত্যাহার করে নিলেন তা আমাদের জানার বিষয়, গোপন রাখার বিষয় নয়। তিনি কীভাবে বিষের মাধ্যমে শাহাদাত বরন করলেন তা ইতিহাস। মুসলিম খেলাফতের খলিফার সবকিছুই মুমিনদের জানার অধিকার রয়েছে। ইমাম হুসাইন রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু কীভাবে, কেন এবং কাদের দ্বারা কারবালার প্রান্তরে নির্মমভাবে সদলে শাহাদত বরণ করলেন তা পরিস্কার হওয়া দরকার। উনার শাহাদাতের পর নবী পরিবারের সম্মানিত নারীদের সাথে কি আচরণ করা হয়েছিল তা অবগত হওয়া প্রতিটি মুমিনের ধর্মীয় অধিকার। “আহলে বাইত হল নুহ নবীর কিস্তির মতো, যে এতে আরোহণ করলো সে রক্ষা পেল, আর যে এতে আরোহণ করলো না সে ধ্বংসপ্রাপ্ত হল।” [[৫] তাবরানী কৃত মুজামুল কাবির ১২/৩৪, হাঃ ২৩৭৭, ২৬৩৭, ২৬৩৮, ২৬৩২; মুজামুল আউছাত ৪/১০ হাঃ ৩৪৭৮; মুজামুল ছাগির ১/২৪০ হাঃ ৩৯১; মুসতাদরেকে হাকেম ৩/১৬৩ হাঃ ৪৭২০] কাজেই আহলে বাইতকে চেনা জরুরি। তাঁদের সম্পর্কে জানা কর্তব্য। তাঁদের অতীত জানা দরকার। তাঁদের সুখদুঃখ, জীবনযাপন, হাসিকান্না প্রতিটি মুসলমানের জীবনাদর্শ হওয়া উচিৎ। তাঁরা যেহেতু ঈমানের মূল, তাঁদের জীবনের প্রতিটি বিষয়েই ঈমানের সাথে জড়িত। এর কিছুই গোপন রাখার বিষয় নয়।
আহলে বাইত সম্পর্কে আমাদের জানা পর্যাপ্ত নয়। আল্লাহর কিতাব এবং আহলে বাইতের অনুসরণের হাদিস শুনলে অনেক আলেমও অবাক হন। মনে হয় জীবনে প্রথম শুনলেন। অথচ এটি মুতাওয়াতির হাদিস। মানে একই কিতাবে কমপক্ষে ১৫ বার এই হাদিসটি এসেছে এবং যার বর্ণনা এতো এতো সাহাবা রাদ্বিয়াল্লাহু আনহুম থেকে এসেছে যে এর সনদ ও মতন নিয়ে সন্দেহের কোনই অবকাশ নেই। অথচ আহলে বাইতের ব্যাপারে এমন সব হাদিসগুলো কীভাবে আড়ালে চলে গেল? গাদিরে খুমের হাদিস শুনলে খোদ সুন্নিরাও নাক সিটকান। অথচ এটিও মুতাওয়াতির হাদিস। আহলে বাইতের প্রতি ভালোবাসা খোদ রাসুলের প্রতি ভালোবাসা। আর আল্লাহর ভালোবাসা পেতে হলে আহলে বাইতের ভালোবাসা আগে পাওয়া জরুরী। তাঁদের ভালোবাসা জান্নাতের পাথেয় আর তাঁদের প্রতি বিদ্বেষ জাহান্নামের ঠিকানা। কেউ যদি কা’বার রোকন আর মাকামে ইব্রাহিমের মধ্যখানে ঘর বাননায়, নামাজ আর তসবিহ পাঠে সময় কাটায়, কিন্তু আহলে বাইতের প্রতি বিদ্বেষ পোষণ রাখা অবস্থায় মারা যায়, তার ঠিকানা জাহান্নামে। আহলে বাইতের এতো গুরুত্ব থাকার পরেও, আহলে বাইতকে কেন অজ্ঞতার আড়ালে রাখা হল?
মওলা আলী, জন্মের পর থেকে যিনি রাসুল সাল্লাল্লহু আলাইহি ওয়াআলিহী ওয়াসাল্লামকে দেখে এসেছেন, যিনি খোদ রাসুলের ঘরে, রাসুলের কোলে বড় হয়েছেন। যিনি ওহী শুরু হবার সময়েই আম্মাজান খাদিজা রাদ্বিয়াল্লাহু আনহার পর প্রথম ঈমান আনেন, যিনি সব সময়ের জন্য রসুল সাল্লাল্লাহি আলাইহি ওয়াআলিহী ওয়াসাল্লামের সাথী ছিলেন, যিনি রাসুলের প্রাণপ্রিয় কন্যাকে বিয়ে করলেন এবং রাসুলের তিরোধানের পরও প্রায় ৩০ বছর জ্ঞানের চর্চা করে গেছেন, তাঁর বর্ণিত হাদিস মাত্র ৩৬০টি। কীভাবে ওহী শুরু হল, কীভাবে আল্লাহর রাসুল ইসলাম প্রচার শুরু করলেন, কীভাবে তিনি খেতেন, বাচ্চাদের সাথে কিভাবে খেলা করতেন, কীভাবে যুদ্ধের প্রস্তুতি নিতেন, কীভাবে মানুষকে মুগ্ধ করতেন, এমন সব বিষয়ের খুঁটিনাটি বিবরণ আসার কথা ছিল মওলা আলী আলাইহিস সালামের কাছ থেকে। অথচ উমাইয়্যাদের অত্যাচারের ভয়ে তৎকালীন মুহাদ্দিসগণ মওলা আলীর কোনও হাদিস বর্ণনা করতে সাহস করতেন না। একই ভাবে ইমাম হাসান ও ইমাম হুসাইন রাদ্বিয়াল্লাহু আনহুমার বিষয়ে মুহাদ্দিসগণ তেমন সরব নন। ফাতেমা জাহরা রাদ্বিয়াল্লাহু আনহা নবীজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াআলিহী ওয়াসাল্লামের বিদায়ের মাত্র ৬ মাসের মাথায় বিদায় নেন। তাঁর বর্ণিত হাদিস তেমন না থাকলে অবাক হবার কিছু নেই। কিন্তু হাসনাইন গণের হাদিস হওয়ার কথা ছিল অগণিত। যেহেতু আহলে বাইতের মাধ্যমেই কুরআন এবং সুন্নাহকে বুঝতে হয়, সেখানে আহলে বাইতের অনেক কিছুই আমাদের মাঝ থেকে কেড়ে নেয়া হয়েছে।
একটি মিথ্যা বারবার বলতে থাকলে তা মানুষের কাছে সত্য বলে প্রতীয়মান হয়। আর সত্য ধামাচাপা পড়ে যায়। সত্য শুনলে মানুষ অবাক হয়ে তাকায়। যদিও সত্য বলার ব্যাপারে আল্লাহ পাক বারবার তাগিদ দিয়েছেন। আমরা কিন্তু সত্য লুকাতে বেশি সচেষ্ট থাকি। “তোমরা সত্যের সাথে মিথ্যাকে মিশ্রিত করো না আর জেনেশুনে সত্য গোপন করো না।” [[৬] সূরা বাক্বারা ২:৪২ ] কুরআনে আল্লাহ পাকের এমন নির্দেশ থাকার পরও আমরা সত্য লুকোতে চেষ্টা করি।
আহলে বাইতের সাথে কার কার সংঘর্ষ হয়েছিল, কেন হয়েছিল, এসব ইসলামেরই অবিচ্ছেদ্য অংশ। এগুলো লুকানোর বিষয় নয়। ভাবছেন এগুলো বললে সাহাবাগণের সমালোচনা হবে? এসবই ইতিহাসের অংশ। এগুলো নিয়ে চর্চা না করলে ইতিহাস হারিয়ে যাবে। সত্য ঢাকা পড়বে। মিথ্যা সত্যের স্থান দখল করে নেবে। মিথ্যা জানার চেয়ে তিক্ত সত্য জানা অনেক ভালো। আর ইসলাম এমন কোনও ঠুনকো ধর্ম নয় যে, তিক্ত সত্য প্রকাশ হলে ইসলাম ডুবে যাবে। বরং আসল বিষয় উল্টোটা। সত্য জানা না থাকায় মুসলমানগণ দিকে দিকে মার খাচ্ছে।
খলিফা বা রাজার ব্যক্তিগত বিষয় বলতে তেমন কিছুই থাকে না। প্রজাদের তাদের আমীর, খলিফা, রাজা সম্পর্কে জানার অধিকার আছে। সে খলিফা যদি সাহাবী হন তবুও। কেননা, তিনি তখন কেবল সাহাবীই নন, তিনি জনগণের প্রতিনিধি, জনগণের রক্ষক ও হেফাজতকারী। উমর রাদ্বিয়াল্লাহু যেমন বলেছিলেন, ফোরাতের অপরপারে কোনও একজন মানুষ না খেয়ে থাকলেও খলিফা হিসেবে তা আমার দেখার বিষয়। তাই তো তিনি রাতের আঁধারে বেরিয়ে পড়তেন লোকদের খোঁজখবর নিতে। একবার মসজিদে একলোক দাড়িয়ে খলিফার লম্বা জামা দেখে প্রশ্ন করেছিলেন, “আমিরুল মুমেনীন, আমরা সবাই গণিমতের মাল থেকে যে কাপড় পেয়েছি তাতে আমাদের এতো বড় জামা হয়নি, আপনার জামা এতো লম্বা হল কীভাবে?” সেদিন এ প্রশ্নের উত্তর দিয়েছিলেন খলিফার পুত্র আব্দুল্লাহ বিন উমর রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু। তিনি তাঁর নিজের অংশ থেকে খলিফা পিতাকে লম্বা জামা বানাতে দান করেছিলেন। এ হল ইসলাম এবং রাশের খলিফাদের জীবনযাপন। স্বচ্ছতা এবং দায়বদ্ধতা। পরহেজগারিতায় পরিপূর্ণ।
তবে আলোচনা করা আর কাউকে দোষী সাব্যস্ত করা গালাগালি করা এক বিষয় নয়। ইসলামে আলোচনা এবং শাসকদের সমালোচনার পথ রুদ্ধ হয়নি। তবে গালাগালি এবং মন্দ বলার পথ রুদ্ধ করে দেয়া হয়েছে। সেটা সাহাবা রাদ্বিয়াল্লাহু আনহুমের ব্যাপারে তো অবশ্যই, সাধারণ মানুষের বেলায়ও। কাজেই যারা শিয়া জুজুর ভয় দেখিয়ে আহলে বাইতের ব্যাপারে চুপ থাকাকে উত্তম বলেন তারা আসলে সত্য লুকোতে চান। আহলে বাইতের প্রসঙ্গ এলে তাদের সাথে ঘটে যাওয়া সব কিছুই আসবে। তবে খেয়াল রাখতে হবে তা যেন গালাগালি এবং মন্দ সমালোচনায় রূপ না নেয়।