কাসীদায়ে শাহ নি’মাতুল্লাহ রহঃ ভবিষ্যদ্বাণী যেভাবে বাস্তবায়িত হচ্ছে
প্রায় ৮শ বছর পূর্বে লিখিত ভারতবর্ষ এবং সমসাময়িক বিশ্বের ভবিষ্যৎ নিয়ে শাহ নি’মাতুল্লাহ রহঃ’র কবিতা। এ পর্যন্ত এর প্রতিটি ভবিষ্যৎবাণী অক্ষরে অক্ষরে ফলেছে।
ডক্টর মিয়াজী ডট কম | drmiaji.com
Articles on contemporary Muslim World!
প্রায় ৮শ বছর পূর্বে লিখিত ভারতবর্ষ এবং সমসাময়িক বিশ্বের ভবিষ্যৎ নিয়ে শাহ নি’মাতুল্লাহ রহঃ’র কবিতা। এ পর্যন্ত এর প্রতিটি ভবিষ্যৎবাণী অক্ষরে অক্ষরে ফলেছে।
তাঁর ভালোবাসা, সৌহার্দ্যপূর্ণ আচরণ, মানুষের প্রতি মমত্ববোধ, ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সকল মানুষকে আল্লাহ্র সৃষ্টি হিসেবে যথাযথ মর্যাদা এবং আপন করে নেয়ার মাধ্যমে তিনি একাই প্রায় ৯০ লক্ষ অমুসলিমকে ইসলামের সুশীতল ছায়ায় আনতে সমর্থ হন। তিনি ছিলেন সূফী সাধক। ভালোবাসার ফেরিওয়ালা। ভালোবাসা বিলানোই তাঁর কাজ।
চারকোণা একটি স্থাপনা। কাছ থেকে দেখলে কখনও মনে হয় খুব ছোট। কখনও আবার মনে হয় অনেক বড়। এর চারপাশে রয়েছে মসজিদুল হারাম। দশ লক্ষেরও বেশি মুসুল্লি যেখানে একসাথে নামায আদায় করতে পারেন। মসজিদুল হারাম অতিক্রম করে কা’বার দিকে অগ্রসর হতেই চোখে পড়ে কা’বা! মনে হয় পুরো চত্বর জুড়ে এ ঘরের অবস্থান। প্রশান্ত, প্রশস্ত, শান্তিময় কা’বা।
আমাদের পরিচয় একটাই। আমরা সবাই মানুষ। কোন ধর্ম বা জাতের প্রতি বিদ্বেষ পোষণ ইসলাম সমর্থন করে না। বিশ্বের সর্বপ্রথম লিখিত সংবিধানে তাই মদিনা-মুনিব ﷺ মদিনার মুসলমান, ইহুদি, খৃষ্টান এবং বিধর্মীদের সাথে নিয়েই একটি অসাম্প্রদায়িক রাষ্ট্রের রূপরেখা এঁকেছিলেন এবং তা বাস্তবায়নও করেছিলেন। সে থেকেই পরবর্তী সবগুলো মুসলিম রাষ্ট্রে মুসলমানদের পাশাপাশি অমুসলিম জনগোষ্ঠীর প্রতিও সাম্য ও সম্প্রীতি সুপ্রতিষ্ঠিত ছিল। উমাইয়্যা (৯০ বছর), আব্বাসীয় (৫০০ বছর), স্পেনে উমাইয়্যা সাম্রাজ্য (৭০০ বছর), তুরস্কে উসমানীয় সাম্রাজ্য (৭০০ বছর) এবং ভারতে মুসলিম সাম্রাজ্য (৭০০ বছর) এর কয়েকটি উদাহরণ মাত্র। উদাহরণ স্বরূপ বলা যায়, ভারতে যদি জোর করে হিন্দুদের মুসলমান বানানো হতো, তাহলে আজ প্রিয়া সাহা নামে কেউ থাকতো না মুসলমানদের বিরুদ্ধে মিথ্যাচার করার জন্য।
আজ থেকে হয়তো ৫০ বছর পর কেউ লিখবেন আমেরিকার প্রেসিডেন্ট কিংবা ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রীর পূর্ব পুরুষ বাংলাদেশের জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। কিংবা উলটোটাও হতে পারে। এখন থেকে ২৫ বছর পরে সংবাদ ছাপা হতে পারে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী কিংবা বিরোধী দলিয় নেতা আমেরিকান ইহুদি কিংবা ব্রিটেনের খৃষ্টান বংশোদ্ভূত। আজকে যারা বাংলাদেশে নিজেদেরকে সেক্যুলার হিসেবে পরিচয় দিয়ে গর্ববোধ করছেন তাদের নাতিপুতিরা একদিন ইহুদি বা খৃষ্টান বা হিন্দু হয়ে ফিরে আসলে অবাক হবেন না।
নিউজিল্যান্ডের ঘটনার পর দিকে দিকে ইসলামের প্রতি মানুষের আগ্রহ বরং বাড়ছে। কোথাও কোথাও অনেকেরই ইসলাম গ্রহণের সংবাদ আসছে। তবে আমাদের উচিৎ হবে, প্রতিটি ঘটনাকে কৌশলে মুকাবিলা করা। ঘৃণাকে ঘৃণা দিয়ে নয়, বরং ঘৃণাকে ভালোবাসায় রুপান্তরিত করে সন্ত্রাসীদের কাছে এই বার্তা পৌঁছে দিতে হবে যে, তোমরা পরাজিত। তোমরা উচ্ছিষ্ট। তোমাদের মিশন ব্যর্থ। ইসলাম বিজয়ী, মুসলমানেরা বিজয়ী। তোমরা ঘৃণা দিয়ে আল্লাহ্র নূরকে নিভিয়ে দিতে চাও, আর আমরা ভালোবাসা দিয়ে তোমাদের আহ্বান জানাচ্ছি সত্যের দিকে। এখন তোমাদের ইচ্ছে, সত্য গ্রহণ করবে নাকি অন্ধকারেই নিমজ্জিত হবে।
মুসলমানদের আগে নিজেদের কুরআন ও সুন্নাহর দিকে ফিরে আসতে হবে। তাদেরকে সব ধরণের গোঁড়ামি পরিহার করতে হবে। জ্ঞান ও বিজ্ঞানে মনোযোগ দিতে হবে। উদারপন্থী সূফীবাদকে পুনঃপ্রতিষ্ঠা করতে হবে। ধর্মান্ধতা পরিহার করতে হবে। ঘৃণার পরিবর্তে ঘৃণা না ছড়িয়ে ধৈর্য্য আর সহনশীলতা দিয়ে কৌশলে এগুতে হবে। সবার আগে প্রয়োজন মধ্যপ্রাচ্যের ঘুমিয়ে থাকা আরব ক্ষমতালোভী নেতাদের ঘুম থেকে জেগে উঠা।
যে স্পেন এক সময় মুসলমানেরা ৭ শ বছর ধরে শাসন করেছে, সে স্পেন এখন খৃষ্টানদের। কর্দোবার যে জামে মসজিদে ইসলামের ইতিহাসের বিখ্যাত সব স্কলার, মুহাদ্দিস, মুফাসসীর, পণ্ডিত ও বোদ্ধা ব্যক্তিবর্গ কুরআন, সুন্নাহ আর ফিকহের দরস দিতেন, সে মসজিদ আজ অমুসলিমদের দখলে। শুধু তা-ই নয়, সে মসজিদকে তারা রুপান্তর করেছে গির্জায়।
– ডক্টর আব্দুল বাতেন মিয়াজী শাহ নি’মাতুল্লাহ অলি রাহমাতুল্লাহি আলাইহির (১৩৩০-১৪৩১) অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এবং হুঁশিয়ারিমূলক ভবিষ্যৎবাণী সম্পর্কে বলতে গিয়ে মুসলিম রেনেসাঁর কবি আল্লামা ইকবাল রহঃও মুসলমানদের প্রতি বারবার জোর দিয়েছেন তাদের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য...
শাহ নি’মাতুল্লাহ অলি রাহমাতুল্লাহি আলাইহি ঐতিহাসিক ঘটনাগুলো থেকে কিছু ঘটনা এমন সূক্ষ্ম এবং নির্ভুল ভাবে বর্ণনা করে গেছেন যে বিভিন্ন ঘটনার নায়ক এবং খলনায়কদের নাম কিংবা তাদের নামের অদ্যাক্ষর কিংবা বিশেষ কিছু নিদর্শন পরিষ্কার ভাবে তুলে ধরেছেন। তাঁর ওই ভবিষ্যৎবাণীর বিশেষ অংশগুলোতে সমসাময়িক বিশ্ব এবং বিশেষ করে ভারতবর্ষের মুসলমানদের অবস্থা বিশেষ গুরুত্বের সাথে উল্লেখিত হয়েছে। ফলে তাঁর ওই কাসিদা ভারতের মুসলিম এবং অমুসলিমদের কাছে সমানভাবে তাৎপর্যপূর্ণ। ভারতের হিন্দু ঋষিগণ এ নিয়ে অনেক গবেষণা করছেন।
More