মওলা আলীর (আ. ও রা.) বেলায়তের অভিষেক ও হাদীসে গাদীরে খুম, শিয়াদের গোমরাহী ও সুন্নীদের নির্লিপ্ততা: একটি পর্যালোচনা -আবছার তৈয়বী

পোষ্টটি অন্যকে পড়ার সুযোগ করে দিতে শেয়ার করুন প্লিজ।

দশম হিজরীতে বিদায় হজ্ব সমাপনান্তে প্রিয়নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া আলিহী ওয়া সাহবিহী ওয়া বারাকা ওয়াসাল্লামা) মদীনা অভিমুখে রওনা হলেন। তাঁর সাথে ছিলেন মদীনা ও সিরিয়ার কাফেলা। কাফেলা জুহ্ফার তিন মাইলের মধ্যে অবস্থিত ‘রাবুঘ’ নামক স্থানে পৌঁছলে হযরত জিবরীল আমীন (আ.) প্রিয়নবী (দরুদ)’র কাছে নিম্নোক্ত আয়াত নিয়ে আসলেন অর্থাৎ “আপনার প্রভুর পক্ষ থেকে আপনার প্রতি যা অবতীর্ণ হয়েছে, তা প্রচার করুন; আর যদি আপনি তা না করেন, তা হলে আপনি তাঁর রিসালতই (যেন) প্রচার করেননি এবং মহান আল্লাহ্ আপনাকে জনগণের অনিষ্টতা থেকে রক্ষা করবেন।” (সূরা মায়িদাহ্ : ৬৭)

এ আয়াতের বাচনভঙ্গি থেকে স্পষ্টভাবে প্রতীয়মান হয় যে, মহান আল্লাহ্ একটি অতি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় প্রিয়নবী (দরুদ)’র যিম্মায় অর্পণ করেছেন। এই আয়াত নাযিলের পর প্রিয়নবী (দরুদ) কাফেলার যাত্রা বিরতির নির্দেশ প্রদান করলেন। যাঁরা কাফেলার সম্মুখভাগে ছিলেন, তাঁদের থামানো হলো এবং যাঁরা কাফেলার পেছনে ছিলেন, তাঁরা এসে তাঁদের সাথে মিলিত হলেন। সেদিন দুপূর বেলা তীব্র গরম পড়েছিল। জনতা তাদের বহিরাবরণের একটি অংশ মাথার ওপর এবং আরেকটি অংশ পায়ের নিচে রেখেছিল। যে চাদর গাছের ওপর ছুঁড়ে দেয়া হয়েছিল, তা দিয়ে প্রিয়নবী (দরুদ)-এর জন্য একটি শামিয়ানা তৈরি করা হলো। মহানবী জামাআতে জোহরের নামায আদায় করলেন। এরপর সাহাবায়ে কিরাম (রিদ্বওয়ানিল্লাহি আলাইহিম আজমাঈন) তাঁর চারপাশে সমবেত হলে তিনি একটি উঁচু জায়গার ওপর গিয়ে দাঁড়ালেন যা উটের হাওদা দিয়ে তৈরি করা হয়েছিল। এর পর প্রিয়নবী (দরুদ) বলিষ্ঠ কণ্ঠে লক্ষাধিক সাহাবীর মজমায় এক ঐতিহাসিক ভাষণ দিলেন।

“মহান আল্লাহর জন্য সকল প্রশংসা। তাঁর কাছে আমরা সাহায্য প্রার্থনা করি, তাঁর প্রতি বিশ্বাস স্থাপন করি এবং আমাদের যাবতীয় মন্দ কাজ থেকে তাঁর কাছে আমরা আশ্রয় নিচ্ছি। তাঁর ওপর ভরসা করি। তিনি ছাড়া আর কোন পথপ্রদর্শক নেই। তিনি যাকে হিদায়াত করেন, তাকে কেউ পথভ্রষ্ট করতে পারে না। আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি, তিনি ব্যতীত কোন মাবুদ নেই এবং মুহাম্মদ তাঁর বান্দা ও প্রেরিত পুরুষ (রাসূল)।

হে লোকসকল! অতি শীঘ্রই আমি মহান আল্লাহর আহবানে সাড়া দেব এবং তোমাদের কাছ থেকে বিদায় নেব। আমিও দায়িত্বশীল, তোমরাও দায়িত্বশীল। তোমরা আমার ব্যাপারে কী চিন্তা কর? এ সময় উপস্থিত সাহাবায়ে কিরাম (রা.) সত্যায়ন করে সাড়া দিলেন এবং বললেন : “আমরা সাক্ষ্য দিচ্ছি, আপনি রিসালাতের দায়িত্ব যথাযথভাবে পালন করেছেন এবং আমানত আদায় করেছেন। মহান আল্লাহ্ আপনাকে পুরস্কৃত করুন।”

প্রিয়নবী (দরুদ) বললেন : “তোমরা কি সাক্ষ্য দেবে যে, বিশ্ব-জগতের মাবুদ এক-অদ্বিতীয় এবং মুহাম্মদ আল্লাহর বান্দা এবং তাঁর রাসূল; পরকালে বেহেশত, দোযখ এবং চিরস্থায়ী জীবনের ব্যাপারে কোন দ্বিধা ও সন্দেহ নেই?” তখন সবাই বললেন : “এসব সত্য এবং আমরা সাক্ষ্য দিচ্ছি।”

অতঃপর তিনি বললেন : “হে লোকসকল! আমি দু’টি মূল্যবান জিনিস তোমাদের মাঝে রেখে যাচ্ছি। আমি দেখবো- তোমরা আমার রেখে যাওয়া এ দু’টি স্মৃতিচিহ্নের সাথে কেমন আচরণ করছ?” ঐ সময় একজন দাঁড়িয়ে উচ্চকণ্ঠে বললেন : “এ দুই মূল্যবান জিনিস কী?” প্রিয়নবী (দরুদ) বললেন : “একটি মহান আল্লাহর কিতাব (পবিত্র কুরআন), যার এক প্রান্ত মহান আল্লাহর হাতে এবং অপর প্রান্ত তোমাদের হাতে আছে এবং অপরটি আমার বংশধর (আহলে বাইত) [কোন কোন বর্ণনায় এসেছে এই দু’টি বিষয়ের গুরুত্ব বুঝানোর জন্য তিনি ৩ বার করে বললেন]। মহান আল্লাহ আমাকে জানিয়েছেন, এ দুই স্মৃতিচিহ্ন কখনো পরস্পর বিচ্ছিন্ন হবে না।

হে লোকসকল! পবিত্র কোরআন ও আমার বংশধর থেকে অগ্রগামী হয়ো না এবং কার্যতঃ এতদুভয়ের প্রতি অবহেলা প্রদর্শন করো না; এর অন্যথা করলে তোমরা ধ্বংস হয়ে যাবে।”

এ সময় প্রিয়নবী (দরুদ) হযরত আলী (আ. ও রা.)-এর হাত ধরে এতটা উঁচু করলেন যে, তাঁদের উভয়ের বগলদেশ জনতার সামনে স্পষ্ট দেখা গেল এবং তিনি আলী (আ. ও রা.)কে উপস্থিত জনতার কাছে পরিচয় করিয়ে দিলেন। এরপর তিনি বললেন- “মুমিনদের চেয়ে তাদের নিজেদের ওপর কে সবচেয়ে বেশি অগ্রাধিকারপ্রাপ্ত?” তখন সবাই বললেন : “মহান আল্লাহ্ এবং তাঁর রাসূলই ভাল জানেন।” প্রিয়নবী তখন বললেন : “মহান আল্লাহ্ আমার মাওলা এবং আমি মুমিনদের মাওলা; আর আমি তাদের নিজেদের ওপর তাদের চেয়ে বেশি অগ্রাধিকারপ্রাপ্ত এবং সবচেয়ে যোগ্যতাসম্পন্ন। সুতরাং হে লোকসকল! “আমি যার মাওলা, এই আলীও তার মাওলা।” হে আল্লাহ! যে তাঁকে বন্ধুরূপে গ্রহণ করবে, তাকেও তুমি বন্ধুরূপে গ্রহণ করো। যে তাঁর সাথে শত্রুতা করবে, তুমিও তার সাথে শত্রুতা করো। যে তাঁকে ভালোবাসবে, তাকে তুমিও ভালোবাস। যে তাকে ঘৃণা বা অপদস্থ করবে, তাকে তুমিও ঘৃণা ও অপদস্থ করো। যে তাঁকে সাহায্য করবে, তাকে তুমিও সাহায্য করো এবং যে তাঁকে সাহায্য থেকে বিরত থাকবে, তাকে তুমিও সাহায্য থেকে বিরত থাকো এবং সে যেদিকে ঘোরে, সত্যকেও তার সাথে সেদিকে ঘুরিয়ে দাও।”

এটিই সংক্ষিপ্তাকারে ঐতিহাসিক গাদীরে খুমের পূর্ণাঙ্গ ভাষণ। যা শব্দ ও বাক্যের তারতম্য সহকারে প্রিয় রাসূলের (দরুদ) ১১০ জন সাহাবী কর্তৃক অসংখ্য নির্ভরযোগ্য সূত্রে বর্ণিত হয়েছে। এ থেকেই প্রতীয়মান হয় যে, মুসলমানদের কাছে মওলা আলী (আ. ও রা.) গুরুত্ব ও ফজীলত কতটুকু! সুবহানাল্লাহি ওয়া বিহামদিহী!

প্রিয়নবী (দরুদ)’র এই মুবারক ভাষণ শেষ হওয়ার পর এই আয়াত অবতীর্ণ হয়। (অন্য বর্ণনায় আছে- এই আয়াতটি বিদায় হজ্বের ভাষণের পর আরাফার ময়দানে আরাফার দিনেই অবতীর্ণ হয়েছিল।)

অর্থাৎ “আজ আমি তোমাদের জন্য তোমাদের দীনকে পূর্ণাঙ্গ করলাম এবং তোমাদের ওপর আমার অনুগ্রহ সম্পূর্ণ করলাম এবং ইসলামকে তোমাদের দীন হিসেবে মনোনীত করলাম।” (সূরা মায়েদা : ৩)

এ সময় প্রিয়বীর (দরুদ) তাকবীর-ধ্বনি উচ্চকিত হলো। তারপর তিনি বললেন : “মহান আল্লাহর কাছে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি যে, তিনি তাঁর দীনকে পূর্ণতা প্রদান করেছেন এবং তাঁর নিয়ামত চূড়ান্ত করেছেন এবং আমার পর আলীর ওয়াসায়াত এবং বেলায়েতের ব্যাপারে সন্তুষ্ট হয়েছেন।” এরপর প্রিয়নবী উঁচু স্থান থেকে নিচে নেমে এসে হযরত মওলা আলী (আ.ও রা.) কে একটি তাঁবুর নিচে বসার জন্য বললেন, যাতে করে মুসলিম নেতৃবৃন্দ ও গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিবর্গ তাঁর সাথে মুসাফাহা করে তাঁকে অভিনন্দন জানাতে পারেন।

সবার আগে শায়খাইন [হযরত আবু বকর (রা.) ও হযরত উমর (রা.)] মুসাফাহা করে হযরত আলীকে অভিনন্দন জ্ঞাপন করেন ও শুভেচ্ছা জানান এবং তাঁকে তাঁদের ‘মাওলা’ বলে অভিহিত করে সর্বান্তঃকরণে মেনে নেন। পর্যায়ক্রমে হযরত উসমান (রা.), হযরত তালহা (রা.), হযরত যুবাইর (রা.)সহ সকল সাহাবীই অভিনন্দন জানালেন। এ অভিনন্দন জ্ঞাপনপর্ন সন্ধ্যা পর্যন্ত অব্যাহত থাকে। এটা দেখে প্রিয় রাসূল (দরুদ)’র অনুমতি নিয়ে শাইরুর রাসূল (দরুদ) হযরত হাসসান বিন সাবিত (রা.) তৎক্ষণাৎ মওলা আলীর (আ. ও রা.) শানে কবিতা রচনা করলেন এবং আবৃত্তি করে শোনালেন। কিন্তু একজন লোক প্রিয়নবী (দরুদ) কে সম্বোধন করে বললো- আপনি কি আলীর এই ফজিলত নিজ থেকে বললেন নাকি আল্লাহর পক্ষ থেকে আদিষ্ট হয়ে বললেন? প্রিয়নবী (দরুদ) বললেন, অবশ্যই আল্লাহর পক্ষ থেকে আদিষ্ট হয়ে। তখন ঐ ব্যক্তি বললো- যদি তাই হয়ে থাকে, তাহলে হে আল্লাহ! আমার ওপর আসমান থেকে পাথর বর্ষন করো। সে কিছুদূর গেলে তার ওপর আবাবিল পাখি ছোট একটি পাথর নিক্ষেপ করে, যা তার মাথা দিয়ে ঢুকে পশ্চাৎদেশ দিয়ে বের হয়ে যায় এবং সে ঘটনাস্থলেই হালাক হয়ে যায়।

এ ঐতিহাসিক ঘটনার চিরস্থায়ী ও অবিস্মরণীয় হওয়ার অন্যতম কারণ হচ্ছে- এ ঘটনা প্রসঙ্গে পবিত্র কোরআনের দু’খানা আয়াত অবতীর্ণ হওয়া। তাই যতোদিন পবিত্র কোরআন থাকবে, ততোদিন পর্যন্ত এ ঐতিহাসিক ঘটনাও স্থায়ী থাকবে এবং মানুষের স্মৃতিপট থেকে তা কখনো মুছে যাবে না।

এ ঐতিহাসিক ঘটনার গুরুত্ব তুলে ধরার ক্ষেত্রে এতটুকু উল্লেখ করাই যথেষ্ট যে, এ মহান ঐতিহাসিক ঘটনা প্রিয়নবী (দরুদ)’র ১১০ জন সাহাবী বর্ণনা করেছেন। যা আহলে সুন্নাত সমর্থিত হাদীস, তাফসীর, ইতিহাস ও কালাম শাস্ত্রের মেইনস্ট্রীম কিতাবসমূহে বর্ণিত আছে। এসব কিতাবে ১১০ জন রাবীর (বর্ণনাকারী) নাম পরিলক্ষিত হয়। এটা ঠিক যে, প্রিয়নবী (দরুদ) লাখো সাহাবীর সমাবেশস্থলে এ কথাসমূহ বলেছিলেন, তবে তাদের মধ্যেকার এক বিরাট অংশ হিজাযের দূরবর্তী এলাকা ও প্রত্যন্ত অঞ্চলগুলোর অধিবাসী ছিল, যাদের থেকে এ সংক্রান্ত কোন হাদীসই বর্ণিত হয়নি। আবার উমাইয়া যুগে রাজতান্ত্রিক রোষানলে পড়ে অনেকেই তা বর্ণনা করার সাহসও করেননি। সঙ্গতঃ কারণেই বহু বর্ণনাকারীর নাম হাদীস শাস্ত্রের ইতিহাসে লিপিবদ্ধই হয়নি।

হিজরী দ্বিতীয় শতকে অর্থাৎ তাবেয়ীগণের যুগেও ৮৯ জন তাবেয়ী এ হাদীস বর্ণনা করেছেন। পরবর্তী শতকসমূহে হাদীসে গাদীরের রাবীগণ সবাই আহলে সুন্নাতের আলেম। তাঁদের মধ্য থেকে ৩৬০ জন এ হাদীস তাঁদের নিজ নিজ গ্রন্থে সংকলন ও উল্লেখ করেছেন এবং তাঁদের অনেকেই এ প্রসঙ্গে বর্ণিত অনেক হাদীসের বিশুদ্ধতা ও সঠিকতা (সহীহ) হবার বিষয়টি স্বীকার করেছেন।

প্রখ্যাত ইসলামী ঐতিহাসিক তাবারী ‘আল ওয়ালায়াহ্ ফী তুরুকি হাদীসিল গাদীর’ নামে একখানা গ্রন্থ রচনা করেছেন এবং এ হাদীসটি প্রিয়নবী (দরুদ) থেকে ৭২টি সূত্রে বর্ণনা করেছেন।

আহমাদ ইবনে হাম্বল (রহ.) এ হাদীস ৪০টি সূত্রে বর্ণনা করেছেন। ইবনে হাজার আসকালানী (রহ.) ২৫টি সূত্রে, জাযারী শাফেঈ (রহ.) এ হাদীস ২৫টি সূত্রে, আবু সাঈদ সিজিস্তানী (রহ.) ১২০ সূত্রে আমীর মুহাম্মদ ইয়েমেনী (রহ.) ৪০টি সূত্রে, ইমাম নাসাঈ (রহ.) ২৫০টি সূত্রে, আবুল আলা হামদানী (রহ.) ১০০টি সূত্রে, ইবনে হিব্বান (রহ.) ৩০টি এবং ইমাম মুসলিম (রহ.) এ হাদীস ৪টি সূত্রে বর্ণনা করেছেন। এমনকি ওহাবী-আহলে হাদীসপন্থী শায়খ আলবানী ২২টি আলাদা আলাদা সহীহ সনদ সূত্র বর্ণনা করেছেন।

এই হাদীসটি এতো অধিক বর্ণনাকারী ও এতো অধিক নির্ভরযোগ্য সনদসূত্রে বর্ণিত হওয়ার কারণে মুহাদ্দেসীনে কিরামের অনেকেই এই হাদীসকে ‘মুতাওয়াতির’ পর্যায়ের হাদীস হিসেবে বর্ণনা করেছেন।

‘হাদীসে গাদীরে খুম’ মওলা আলী (আ. ও রা.) শ্রেষ্ঠত্ব ও মর্যাদার সবচেয়ে বড় দলিল। কিন্তু অত্যন্ত পরিতাপের বিষয় হলেও সত্য যে, এই হাদীসকে কেন্দ্র করে শিয়া সম্প্রদায় মওলা আলীকেই (আ. ও রা.) খিলাফতের একমাত্র যোগ্য ও হকদার হিসেবে অভিহিত করে সায়্যিদুনা আবু বকর আস সিদ্দীক, সায়্যিদুনা উমর আল ফারূক ও সায়্যিদুনা উসমান জুননুরাইন (রিদ্বওয়ানিল্লাহি তায়ালা আলাইহিম আজমাইন) এর খিলাফত অস্বীকার করে গোমরাহ হয়ে যায়। আর এর প্রতিক্রিয়ায় পরবর্তী প্রজন্মের সুন্নীরা গাদীরে খুমের এই বিখ্যাত হাদীস ও তার প্রেক্ষাপটকে কখনোই আলোচনায় আনে না। আমার আশ্চর্য লাগে তখনই, যখন দেখি- প্রায় সব তরিকতের সিলসিলাতে প্রিয়নবী (দরুদ)’র পরে ‘শাহেনশাহে বেলায়ত’ হিসেবে মওলা আলী (আ. ও রা.)এর নাম নামোল্লেখ থাকলেও খোদায়ী পয়গামে যে স্থান ও দিনকে মওলার বেলায়তের জন্য নির্ধারণ (গাদীরে খুম ও ১৮ জিলহজ্ব) করা হয়েছে, সেই স্থান ও দিনের নাম উল্লেখ তো করেই না, এমনকি মওলার এই সর্বাধিক ফজিলতপূর্ণ হাদীসটির আলোচনাও করে না। কদাচিৎ কেউ আলোচনা করলেও তার কোশিশ থাকে- কীভাবে এবং কোন পন্থায় ‘মুতাওয়াতির’ পর্যায়ের এউ হাদীসটিকে অস্বীকার করা যায় বা গুরুত্ব কমানো যায়! (নাঊজুবিল্লাহ) ফল, এই হাদীসের অথেনটিকতা দর্শনে সুন্নীরা সহজেই শিয়াদের অপপ্রচারে প্রলুব্ধ ও প্রভাবিত হচ্ছে। আমরা আশা করবো- সুন্নী উলামারা সর্বত্র গাদীরে খুমের এই হাদীসটিকে আলোচনা করবেন এবং খোদায়ী পয়গামে নবুওয়তের যবানে ঘোষিত মওলা আলী (আ. ও রা.)’র অত্যুজ্বল মর্যাদা বর্ণনা করে সর্বদা সুন্নী মুসলমানদের অন্তরকে আবাদ ও শাদাব রাখবেন। আল্লাহ আমাদের সবাইকে আহলে বায়তের যথাযথ মর্যাদা উপলব্ধি ও আহলে বায়তের মুহাব্বতে আমৃত্যু অটল থাকার তাওফিক দিন। আমীন! বিহুরমাতি রাহমাতুল্লিল আলামীন (সাল্লাল্লাহু তায়ালা আলাইহি ওয়া আলিহী ওয়া সাহবিহী ওয়া বারাকা ওয়া সাল্লামা)।

[বি.দ্র.: লেখাটি বেশি বেশি শেয়ার করুন, কপি করে অবিকৃতভাবে পোস্ট করুন এবং আহলে বায়তে রাসূলের (দরুদ) খয়রাত লাভ করতে থাকুন। ধন্যবাদ।]

তারিখ: ইয়াওমে গাদীর
১৮ জিলহজ্ব, ১৪৩৯ হি.
১৮ আগস্ট, ২০১৯ খৃ.
আবুধাবি, ইউ.এ.ই।

পোষ্টটি ভালো লেগে থাকলে আপনার মূল্যবান মতামত জানান প্লিজ!

Leave a Comment