পার্বত্য অঞ্চল হবে স্বাধীন জুমল্যান্ড অথবা ভারতের অংশ দেশদ্রোহীদের এখনোই রুখতে হবে

ডক্টর আব্দুল বাতেন মিয়াজী

[মন্তব্য করার পূর্বে ধৈর্য্য ধারণ করে ২০ মিনিটের এই ভিডিওটি শুনুন এবং এই পোষ্টটি শেয়ার করতে থাকুন যাতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী এবং সংশ্লিষ্টদের নজরে পড়ে। এদেরকে এখনোই রুখে দিন, নাহলে পার্বত্য অঞ্চল হারাতে হবে আর মুসলমানদের অবস্থা হবে মিয়ানমারের রোহিঙ্গাদের মতো।]

আমরা বাংলাদেশের মুসলমানরা শান্তিপ্রিয় এবং অসাম্প্রদায়িক। আমরা সকল ধর্ম এবং বর্ণের মানুষ এক সাথে একই ভৌগলিক সীমারেখায় এক দেশের নাগরিক হিসেবে বসবাস করতে বদ্ধপরিকর। বাংলাদেশের বেশির ভাগ মানুষই উদার এবং ধর্মনিরপেক্ষতায় বিশ্বাসী। এই সুযোগটি কাজে লাগিয়ে দিকে দিকে বিভিন্ন সন্ত্রাসী, হিংস্র এবং সাম্প্রদায়িক শক্তি মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে। অনেকদিন থেকেই হিন্দুদের বিভিন্ন ষড়যন্ত্রের কথা শুনে আসছি। এবার শুনছি পার্বত্য অঞ্চলে বসবাসরত বৌদ্ধদের মুখ থেকে। তারা কেবল মুসলিম বিদ্বেষীই নয়, চরম হিংস্র এবং ভয়ংকর রকমের বর্ণবাদী। বাংলাদেশের সীমানার ভেতরে বাস করেও এরা দেশদ্রোহী হিসেবে আত্মপ্রকাশ করছে। একদিকে যেমন সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্ট করছে, অন্যদিকে দেশ বিরোধী গভীর ষড়যন্ত্রে লিপ্ত রয়েছে এরা। সাম্প্রদায়িক দাঙ্গায় উস্কানি দাতা হিসেবে এদের বিরুদ্ধে অনতিবলম্বে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হোক।

ভিডিও যা বলা হচ্ছেঃ

* ইসলাম ধর্ম ধর্ম নয়, এটি সন্ত্রাসী ধর্ম। মুসলমানরা সন্ত্রাসী জাতি। 
* মুসলমানরা এদেশের বাসিন্দা নয়, এরা এসেছে আরব থেকে।
* পার্বত্য অঞ্চলে বাঙালি অনুপ্রবেশ ঘটছে। প্রতি ৪ জন পাহাড়ির বরাবরে ১ জন বাংলাদেশী সৈনিক।
* বেশির ভাগ পাহাড়ী মনেপ্রাণে চাচ্ছে আলাদা স্বাধীন জুমল্যান্ড গঠন করতে আর না হলে ভারতের অংশ হতে।
* রোহিঙ্গারা সন্ত্রাসী। মিয়ানমারে যে রোহিঙ্গা নিধন হচ্ছে, তা নাকি বৌদ্ধদের সামাজিক আন্দোলন। সেই আন্দোলনকে এদেশের পাহাড়ী বৌদ্ধরা পূর্ণ সমর্থন দিচ্ছে। রোহিঙ্গারা মিয়ানমারের নাগরিক নয়, তারা নাকি বাংলাদেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে যাওয়া অভিবাসী।

ইতিহাস যা বলেঃ

ভারতে ইসলামের গোড়াপত্তন হয়েছে ৭১২ খৃষ্টাব্দ থেকে মুহাম্মদ বিন কাসীমের সিন্ধু বজয়ের মধ্য দিয়ে। কোন কোন সূত্র এরও অনেক আগেই ইসলামের আবির্ভাবের প্রমাণ বহন করে। এরপর একাদশ শতকের শেষের দিকে খাজা মঈন উদ্দিন চিশতি রাহমাতুল্লাহি আলাইহির আগমনের মাধ্যমে ইসলাম পুরো ভারতবর্ষে ছড়িয়ে পড়ে। বাংলাদেশে আরো কিছু পরে আসেন হযরত শাহজালাল রাহমাতুল্লাহি আলাইহি। এরপর মুসলমান শাসকগণ আফগানিস্তান এবং পারস্য থেকে এখানে এসে মুসলিম শাসন প্রতিষ্ঠা করেন।

পার্বত্য অঞ্চলের ১৩টি উপজাতি প্রকৃতপক্ষে এদেশের আদি বাসিন্দা নয়, এরা বার্মা, তিব্বত এবং অন্যান্য স্থান থেকে বিতাড়িত হয়ে এদেশে এসে স্থায়ীভাবে বসবস করতে থাকে। তবে তারা বর্তমানে এদেশের নাগরিক হিসেবে সম্পূর্ণ সুযোগ সুবিধার অতিরিক্ত সুবিধা ভোগ করছে পাহাড়ী এবং সংখ্যালঘু হিসেবে। সরকারী চাকুরি এবং শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে এদের জন্য রয়েছে নির্ধারিত আসনসংখ্যা।

অপরদিকে বর্তমানের মিয়ানমারের আরাকান রাজ্যে মিয়ানমারের মগ বৌদ্ধদের অনেক পূর্বেই মুসলমানরা সেখানে গিয়ে বসবাস করতে থাকে এবং জনবসতি গড়ে তোলে। এক সময় সেখানে স্বাধীন আরাকান রাজ্য ছিল।বৌদ্ধ সন্ত্রাসীদের কাছে এরা প্রথমে এদের স্বাধীনতা হারায় এবং পরে ব্রিটিশদের সাম্রাজ্যবাদী শক্তির কাছে পরাজিত হয় এবং দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় জাপান দখলে নিয়ে সেদেশের মুসলমানদের নির্বিচারে হত্যা করতে থাকে। এ হত্যাযজ্ঞ চলতে থাকে বার্মা স্বাধীনতা লাভ করার পরও। ১৯৬২ সালের পর দফায় দফায় চলে হত্যাযজ্ঞ এবং গণহত্যা। কেড়ে নেয়া হয় তাদের নাগরিকত্ব এবং মুক্তভাবে চলাফেরার সকল অধিকার। জাতিসংঘ কর্তৃক ঘোষিত মৌলিক অধিকারের সবগুলো থেকে এদেরকে বঞ্চিত করা হয়ঃ শিক্ষা, বাসস্থান, চিকিৎসা, স্বাধীনভাবে চলাফেরা, এমন কি চিকিৎসার জন্যে হলেও। রোহিঙ্গাদের বেঁচে থাকার অধিকারও স্বীকার করতে নারাজ সেদেশের মগ আর্মি এবং স্থানিয় মগ বৌদ্ধরা। ফলে সেদেশের জনগণের পূর্ণ সমর্থন নিয়ে সেনাবাহিনী দফায় দফায় হামলা করে এদের ঘরবাড়ি জ্বালিয়ে দিচ্ছে, এদেরকে পশুর মতো ধরে ধরে হত্যা করছে, শিশুদেরকে অমানুষিক নির্যাতন করে মেরে ফেলা হচ্ছে, নারীদের গণধর্ষণের পর নির্যাতন করে হত্যা করা হচ্ছে। কোথাও কোথাও জীবন্ত পুড়িয়ে মারা হচ্ছে তাদেরকে। ঘর থেকে ধরে নিয়ে গিয়ে অমানবিক নিষ্ঠুর নির্যাতনের পর গুলি করার পর গলা কেটে হত্যা করা হচ্ছে। এ পর্যন্ত সেখান থেকে পালিয়ে আসা শরণার্থীর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে প্রায়  এক মিলিয়ন বা ১০ লক্ষ।

এদেশের পাহাড়ী বৌদ্ধদের মতে মিয়ানমারের বৌদ্ধরা মুসলিম খেদাও শ্লোগানের মাধ্যমে সামাজিক আন্দোলন গড়ে তুলেছে। আর সে সামাজিক আন্দোলনে সমস্ত বৌদ্ধদের পূর্ণ সমর্থন রয়েছে।

উগ্র হিন্দুদের মিছিল থেকে এ কি বলা হচ্ছে?

দ্বিতীয় ভিডিওটি শুনুন এবং দেখুন ভারতে উগ্র সাম্প্রদায়িক হিন্দু সন্ত্রাসীরা মুসলমানদের সম্পর্কে কি বলছে এবং তারা কিসের দাবিতে রাজপথে একত্রিত হয়েছে। এ নিয়ে আমি কিছু বলবো না। পাঠকগণই বলুন তারা কি বলছে এবং তাদের এজেন্ডাই বা কি!

শেষকথা এবং গাযওয়ায়ে হিন্দ

এখন থেকে প্রায় ৮শ বছর পূর্বে আল্লাহ্‌র এক অলি, আওলাদে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম, নেমাতুল্লাহ শাহ অলি কিছু ভবিষ্যৎবাণী করে গেছেন। এ পর্যন্ত উনার বলা সবগুলো কথা পুরোপুরি ফলে গেছে। কিছু কিছু ক্ষেত্রে তিনি নামের কিছু অংশ বলে গেছেন।

বাংলাদেশের বর্তমান যে পরিস্থিতি তার সাথে আল্লাহর সেই অলির করা ভবিষ্যৎবাণী হুবহু মিলে যাচ্ছে। আমাদের দেশের কিছু শাসকের মাধ্যমে এদেশে হিন্দুদের সর্বক্ষেত্রে অধিপত্য প্রতিষ্ঠা হবে। বলা বাহুল্য, বর্তমানে প্রশাসন সহ সর্বক্ষেত্রে হিন্দু এবং সংখ্যালঘুদের আনুপাতিক হার প্রায় অর্ধেক। অথচ এদেশের মুসলিম জনসংখ্যা হল প্রায় ৯২ শতাংশ। উনার কথা অনুযায়ী হিন্দুদের দ্বারা এদেশের মুসলমানদের প্রচুর রক্তক্ষয় হবে। মুসলমানদের রক্তের বন্যা বয়ে যাবে। এবং মুসলমানরা একটি শহর হারাবে। হতে পারে বাংলাদেশের একটি শহর, হতে পারে পুরো বাংলাদেশ। বৌদ্ধ ও হিন্দুদের বিভিন্ন হুমকি থেকে এখন একথা প্রমাণিত যে, এরা চট্টগ্রাম কিংবা পার্বত্য অঞ্চল ছিনিয়ে নেবে। এরপর শুরু হবে গাযওয়ায়ে হিন্দ এবং সবশেষে মুসলমানদের চূড়ান্ত বিজয় সূচিত হবে। ভারতের এক হিন্দু ধর্মান্তরিত হয়ে মুসলমান হবেন এবং তাঁর নাম শুরু হবে গ দিয়ে আর নামে থাকবে ৬টি অক্ষর।

এতো কিছুর পরও আমরা মুসলমানরা ধৈর্য ধারণ করছি। তবে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বজায় রাখার পাশাপাশি আমাদের মুসলমানিত্ব জাগিয়ে তুলতে হবে। মুসলমান যেমন এক আল্লাহ্‌কে ছাড়া আর কারো এবাদত করে না, মুসলমান এক আল্লাহ্‌কে ছাড়া আর কাউকে ভয়ও পায় না। আমাদের প্রতিটি কর্মে এবং আচরণে মুসলমানিত্ব ধরে রাখতে হবে। আমরা বর্তমানে মুসলমানিত্ব হারিয়ে ফেলেছি। আল্লাহ্‌ পাক আমাদের সহায় হোন। আমীন।

[ভালো লেগে থাকলে লেখাটি কপি করে আপনাদের টাইমলাইনে পোষ্ট করতে পারেন। আর দয়া করে নিচের কমেন্ট বক্সে আপনাদের মতামত জানাতে ভুলবেন না।]

Comments

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *